২০২২ কাতার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইউরোপীয়ান অঞ্চলের ম্যাচে অন্যান্য দলগুলোর সাথে লড়াইয়ে নেমেছে পর্তুগাল। বাছাইপর্বে পর্তুগীজদের হয়ে খেলছেন দলের সুপারস্টার ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডো। পর্তুগালকে বিশ্বকাপের মূল পর্বে পৌঁছে দিতে পারলে এক বিরল কৃতিত্বের অধিকারী হবেন রোনাল্ডো। বিশ্বের খুব কম খেলোয়াড়ই রয়েছেন যাদের ক্যারিয়ারে পাঁচটি বিশ্বকাপ খেলার সৌভাগ্য হয়েছে। রোনাল্ডোর সামনে সেই সুযোগ এনে দিতে পারে চলমান বাছাইপর্বের সাফল্য।
বিশ্ব ফুটবলে মাত্র তিনজন খেলোয়াড় এই কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। জার্মান সাবেক অধিনায়ক লোথার ম্যাথিউস, ও দুই মেক্সিকান সাবেক তারকা এন্টোনিও কারবাহাল ও রাফায়েল মারকুয়েজ পাঁচটি বিশ্বকাপ খেলেছেন। ইতালিয়ান অভিজ্ঞ গোলরক্ষক গিয়ানলুইজি বুফনও পাঁচটি বিশ্বকাপ স্কোয়াডে নাম লিখিয়েছিলেন, কিন্তু খেলেছেন চারটিতে।
রোনাল্ডো ছাড়াও বর্তমানে চারটি বিশ্বকাপ খেলার তালিকায় রয়েছে আরো অনেক নাম। কিন্তু সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় তাকে নিয়ে ভবিষ্যতে আরো অনেকদূর এগিয়ে যাবার স্বপ্ন দেখে পর্তুগাল। যে কারণে বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিতে পারলে সেটা রোনাল্ডোর জন্যও হবে এক অনন্য পাওয়া।
বুধবার আজারবাইজানের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয় দিয়ে বাছাইপর্ব শুরু করেছে পর্তুগাল। দলের প্রধান কোচ ফার্নান্দো সান্তোস অভিজ্ঞ ও তারুণ্যর মিশেলে দারুন একটি দল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়েই লড়াইয়ে নেমেছেন। বিশেষ করে রোনাল্ডোর মত খেলোয়াড় দলে থাকলে কোচের কাজটা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। তার অভিজ্ঞতা দলের তরুণদেরও দারুণভাবে সহযোগিতা করে।
আজারবাইজানের বিপক্ষে সান্তোস ৩৬ বছর বয়সী রোনাল্ডো ও ৩৪ বছর বয়সী হুয়াও মুটিনহোকে যেমন দলে রেখেছেন তেমনি ১৮ বছর বয়সী লেফট ব্যাক নুনো মেনডেসকেও অভিষেকের সুযোগ করে দিয়েছেন। এবারের মৌসুমে স্পোর্টিং লিসবনের হয়ে দারুণ ছন্দে রয়েছেন মেনডেস। ইতোমধ্যেই শীর্ষ কিছু ক্লাব মেনডেসের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এছাড়া ২১ বছর বয়সী উল্ফস ফরোয়ার্ড পেড্রো, গ্রানাডার ২৬ বছর বয়সী ডোমিঙ্গো ডুয়ার্তে ও ২৩ বছর বয়সী ডিফেন্ডার রুবেন ডায়াস ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে মাঠে নেমেছিলেন। বদলি বেঞ্চ থেকে মাঠে নেমেছিলেন ২১ বছর বয়সী হুয়াও ফেলিক্স। স্পোর্টিং লিসবনের ২৬ বছর বয়সী মিডফিল্ডার হুয়া পালহিনহারও অভিষেক হয়েছে।
২০১৬ ইউরো বিজয়ী স্কোয়াডকে নিয়ে যেভাবে সাফল্য পেয়েছিলেন সান্তোস সেই অভিজ্ঞতা থেকেই এবারও তরুণ ও অভিজ্ঞদের দিয়েই দল সাজানোর চেষ্টা করেছেন।
রোনাল্ডো আশা করছেন অন্তত বাছাইপর্বে বাঁধা পেরিযে ক্যারিয়ারের পঞ্চম বিশ্বকাপ খেলার যেন সুযোগ হয়। এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকেও কিছু উপহার দিতে পারবেন। ফুটবলীয় ক্যারিয়ার সমৃদ্ধ হবার পাশাপাশি ইতিহাসেরও অংশ হয়ে থাকতে পারবেন।
এবারের বিশ্বকাপ আসরে শুধুমাত্র এলিট ক্লাবে নিজের নাম লেখাতে রোনাল্ডোই অপেক্ষায় নেই। এই তালিকায় আরো আছেন রোনাল্ডোর দীর্ঘ দিনের প্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসি, সার্জিও রামোস ও আন্দ্রেস গুয়াড্রাডো। এই তিনজনই বর্তমানে নিজ নিজ দেশের জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন। এর অর্থ হচ্ছে তাদের সামনেও সুযোগ আছে ইতিহাসের পাতায় নিজেদের নাম লেখানোর।
সূত্র : বাসস