দিন কয়েক আগে শুরুটা করেছিলেন ফ্রান্সের কয়েকজন নারী। তাদের বিরুদ্ধে চলা দীর্ঘ নির্যাতনের প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন ফরাসি নারীদের একাংশ। খুব সম্প্রতি রাস্তায় নামতে দেখা গেছে লেবাননের প্রতিবাদী নারীদেরও। এ বার রাশিয়া, সুদান, গুয়াতেমালা, তুরস্কের মতো দেশের নারীরাও সংগঠিত আন্দোলন গড়ে তুলছেন। দেশ আর ভাষা ভিন্ন হলেও প্রতিবাদে তারা এক। বছরের পর বছর ধরে চলা অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন বিশ্বের নানা প্রান্তের নারীরা।
জাতিসঙ্ঘ সম্প্রতি একটি রিপোর্টে জানিয়েছে, শুধু ২০১৭ সালেই ৮৭ হাজার নারী ও কিশোরী খুন হয়েছেন গোটা বিশ্বে। তাঁদের বিরুদ্ধে হয়ে চলা লাগাতার অত্যাচার আর নির্যাতনের বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে পথে নামেন ফরাসি নারীরা। বিশাল মিছিলে শামিল হন তারা। চাপে পড়ে ফ্রান্সের সরকার জানিয়েছে, এখন থেকে নারীদের বিরুদ্ধে নির্যাতন হলে সেই তথ্য জানাতে পারবেন চিকিৎসকেরা। শারীরিক নির্যাতনের মতো মানসিক নির্যাতনের শিকার নারীরাও যাতে সুচিকিৎসা পান, সেই বন্দোবস্ত করার কথাও বলেছে ফরাসি সরকার।
সোমবার ছিল আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন বিরোধী দিবস। আর সেই উপলক্ষেই তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে বিক্ষোভে শামিল হতে দেখা গেছে দু’হাজারেরও বেশি মহিলাকে। সেই বিক্ষোভ ঠেকাতে কাঁদানে গ্যাস, প্লাস্টিক বুলেটও ছুড়তে হয়েছে পুলিশকে।
নির্যাতন বন্ধের দাবিতে ওই দিন রাস্তায় নেমেছিলেন রুশ নারীরাও। মস্কো শহরে বিশাল মিছিল করে নারী অধিকার রক্ষা নিয়ে সরব হন তারা। সরকার যাতে এ নিয়ে বিশেষ বিল পাশ করে, মিছিলে সেই দাবিও রেখেছেন রুশ নারীরা। সুদানেও একই ছবির দেখা মিলেছে সোমবার। গত কয়েক দশকে এই প্রথম খার্তুমে পথে নামেন প্রতিবাদী নারীরা। তাদের স্লোগান ছিল, ‘‘স্বাধীনতা, শান্তি আর সুবিচার।’’
স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদেও একই ধরনের প্রতিবাদ চোখে পড়েছে। চলতি বছরে নিজেদের সঙ্গী বা সাবেক সঙ্গীদের হাতে খুন হয়েছেন কমপক্ষে ৫২ জন স্প্যানিশ নারী। ফ্রান্সে সেই সংখ্যাটাই ১১৭। কালকের দিনটি স্মরণে রাখতে মাঝ রাতে এক মিনিট স্তব্ধ ছিল আইফেল টাওয়ারের আলো।
ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এদোয়ার ফিলিপের বক্তব্য, এই ধরনের আন্দোলন সরকারের কাছে ইলেকট্রিক শকের মতো কাজ করবে বলে তিনি আশা করেন। নারীবাদী আন্দোলনের চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে গোটা দেশ থেকে লিঙ্গবৈষম্য দূর করার।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা