আজ ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার থ্যাংকস গিভিং ডে। বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় নিউইয়র্ক সহ সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রে পালিত হবে দিনটি। প্রতি বছরের নভেম্বর মাসের শেষ বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রে ‘থ্যাংকস গিভিং ডে’ সরকারীভাবে উদযাপন করা হয়। থ্যাংকস গিভিং ডে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা’র একটি জনপ্রিয় উৎসবের দিন। প্রত্যেক বছরের নভেম্বর মাসের চতুর্থ বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রে এবং অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সোমবার কানাডায় এই দিনটি পালন করা হয়। ঐতিহাসিকভাবে থ্যাংকস গিভিং ডে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কিন্তু বর্তমানে এটি একটি ধর্মনিরপেক্ষ অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে উত্তর আমেরিকার সর্বত্রই দিনটি উদযাপন করা হয়ে থাকে। দিনটির অ্রথম আকর্ষণ হচ্ছে টার্কি ভোজ। থ্যাংকস গিভিং ডে-কে অনেকে ‘দ্য টার্কি ডে’ও বলে থাকে। দিনটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশী কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে পার্টির আয়োজন করা হয়। এছাড়াও ব্যক্তিগতভাবেও অনেকে আতœীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে বাসায় বাসায় থ্যাংকস গিভিং ডে পার্টির আয়োজন করেন। থ্যাংকস গিভিং ডে উপলক্ষ্যে টাইম টিভি ও বাংলা পত্রিকা পরিবারের পক্ষ থেকে ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এদিকে প্রতিবছরের মতো এবারও থ্যাংকস গিভিং ডে-তে ম্যাসি’র প্যারেড আয়োজিত হবে। ম্যানহাটানে আয়োজিত ম্যাসি’র প্যারেড নিউইয়র্কের অন্যতম আকর্ষণ। প্রচন্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে সর্বস্তরের হাজার হাজার নর-নারী ম্যানহাটানের রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে প্যারেড উপভোগ করেন।
ইতিহাস বলে, ১৬২১ সালের এক হেমন্তে, আমেরিকার আদি জন গোষ্ঠীর সাথে প্রধানত ইংল্যান্ড থেকে আগত যাজকদের এক শুভ সন্ধিক্ষণে পরস্পরের মধ্যে উৎপাদিত শষ্য এবং পণ্য বিনিময়ের মধ্য দিয়ে ‘থ্যাংকস গিভিং’ উৎসবের সুত্রপাত ঘটে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৮৬৩ সালে প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন সেদিনের সেই বন্ধুত্ব এবং শান্তির অমেয়বানী সমগ্র আমেরিকাবাসীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে রাস্ট্রীয়ভাবে এই দিনটিকে- ‘থ্যাংকস গিভিং হলি ডে’ হিসাবে ঘোষণা করেন। সেই থেকে প্রতি বছর বন্ধুত্ব এবং সংহতি প্রকাশের সেই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটকে স্মরণীয়-বরণীয় করে তুলতে নানা আয়োজনে মেতে উঠে সমগ্র উত্তর আমেরিকাবাসী। দিনটি আমেরিকায় সরকারী ছুটির দিন। ‘থ্যাংকস গিভিং ডে’ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যসব উৎসবের তুলনায় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একটি সর্বজনীন উৎসব। এই উৎসবই ক্রমশ: জনপ্রিয় হচ্ছে বাংলাদেশী কমিউনিটিতেও। মূলধারার পাশাপাশি উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশীরাও পারিবারিক কিংবা সামাজিক পরিবেশে ‘থ্যাংকস গিভিং ডে’ পালন করে চলেছে। থ্যাংকস গিভিং ডে’র মূল উদ্দেশ্য, পরিবার, প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধবসহ সবাই একত্রিত হয়ে সবার জীবন এবং দেশ ও জাতির সাফল্যের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানানো।