রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৭ পূর্বাহ্ন

চলে গেলেন কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৫ মে, ২০২১
  • ২৭১ বার

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী মারা গেছেন। গতকাল সোমবার রাত ১১টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। ক্যানসার আক্রান্ত হাবীবুল্লাহ সিরাজীকে গত ২৫ এপ্রিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কয়েক দিন ধরেই তিনি ভেন্টিলেশনে ছিলেন।

বাংলা একাডেমির সচিব সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় হাবীবুল্লাহ সিরাজীর মরদেহ বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নেওয়া হবে। পরে আজিমপুর কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে।

পেশাগত জীবনে প্রকৌশলী হাবীবুল্লাহ সিরাজী লেখালেখিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি একাধারে কবিতা, উপন্যাস, শিশু সাহিত্য লিখেছেন। সাহিত্যে অবদানের জন্য একুশে পদক এবং বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্নাতক হাবীবুল্লাহ সিরাজী ১৯৭২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দেশে-বিদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন। ২০১৮ সালে তাকে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব দেয় সরকার।

এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে অসুস্থ হয়ে হাবীবুল্লাহ সিরাজী হাসপাতালে ভর্তি হলে তার হার্টে রিং পরানো হয়। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের ব্যক্তিগত সহকারী মো. আবুল কালাম জানিয়েছেন, হাবীবুল্লাহ সিরাজী ক্লোন ক্যানসারে ভুগছিলেন। পেটে ব্যথা হলে গত ২৫ এপ্রিল তাকে শ্যামলীর এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এত দিন সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

হাবীবুল্লাহ সিরাজীর জন্ম ১৯৪৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর, ফরিদপুর জেলায়। ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন তিনি।

তার কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘দাও বৃক্ষ দাও দিন’, ‘মোমশিল্পের ক্ষয়ক্ষতি’, ‘হাওয়া কলে জোড়াগাড়ি’, ‘নোনা জলে বুনো সংসার’, ‘স্বপ্নহীনতার পক্ষে’, ‘আমার একজনই বন্ধু’, ‘পোশাক বদলের পালা’, ‘প্রেমের কবিতা’, ‘কৃষ্ণ কৃপাণ ও অন্যান্য কবিতা’, ‘সিংহদরজা’, ‘বেদনার চল্লিশ আঙুল’, ‘ম্লান, ম্রিয়মাণ নয়’, ‘বিপ্লব বসত করে ঘরে’, ‘ছিন্নভিন্ন অপরাহ্ণ’, ‘জয় বাংলা বলো রে ভাই’, ‘সারিবদ্ধ জ্যোৎস্না’, ‘সুগন্ধ ময়ূর লো’, ‘নির্বাচিত কবিতা’, ‘মুখোমুখি: তুচ্ছ’, ‘স্বনির্বাচিত প্রেমের কবিতা’, ‘হ্রী’, ‘কতো আছে জলছত্র’, ‘কতোদূর চেরাপুঞ্জি’, ‘কাদামাখা পা’, ‘ভুলের কোনো শুদ্ধ বানান নেই’, ‘একা ও করুণা’, ‘যমজ প্রণালী’, ‘আমার জ্যামিতি’, ‘পশ্চিমের গুপ্তচর’ ও ‘কবিতাসমগ্র’।

হাবীবুল্লাহ সিরাজীর উপন্যাস- ‘কৃষ্ণপক্ষে অগ্নিকাণ্ড’, ‘পরাজয়’, ‘আয় রে আমার গোলাপজাম’, অনুবাদ ‘মৌলানার মন: রুমীর কবিতা’, আত্মজৈবনিক গ্রন্থ ‘আমার কুমার’, গদ্যগ্রন্থ ‘দ্বিতীয় পাঠ’, ‘মিশ্রমিল’, ‘গদ্যের গন্ধগোকুল’, শিশুসাহিত্য ‘ইল্লিবিল্লি’, ‘নাইপাই’, ‘রাজা হটপট’, ‘ফুঁ’, ‘ফুড়ুত্’, ‘মেঘভ্রমণ’, ‘ছয় লাইনের ভূত’ ও ‘ছড়াপদ্য’।

হাবীবুল্লাহ সিরাজী ২০১৬ সালে একুশে পদক, ২০১০ সালে রূপসী বাংলা পুরস্কার এবং কবিতালাপ সাহিত্য পুরস্কার, ২০০৭ সালে বিষ্ণু দে পুরস্কার, ১৯৯১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৯ সালে আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কারসহ দেশি-বিদেশি নানা পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com