শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ০২:৪৬ অপরাহ্ন

মেসির চমক, শীর্ষে বার্সা

বিডি ডেইলি অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৯
  • ৩৩৪ বার

ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে টানা তৃতীয়বারের মতো অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ আর বার্সেলোনার ম্যাচ গড়াচ্ছিল ড্রয়ের পথে। লিওনেল মেসি পুরোটা সময় নিজের ছায়া হয়েছিলেন, বার্সাও তাই পথ খুঁজে পাচ্ছিল না। উল্টা দুর্দান্ত সব সেভ করে মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগান লড়াই করে যাচ্ছিলেন হার এড়াতে। কিন্তু মেসি রোববারও তাকে শিরোনাম হতে দিলেন না। পুরো ম্যাচ ঘুমিয়ে জাগলেন সময়মতো। ৮৬ মিনিটে অ্যাটলেটিকোর অর্ধ থেকে দৌড় শুরু করে থামলেন বক্সের সামনে, লুইস সুয়ারেজকে পাস দিলেন। পরের ছবিটা আপনি বহুবার দেখেছেন। ফিরতি পাস নিয়ে আরেকটু দৌড়ে এর পর বক্সের বাইরে থেকেই নিচু শটে বটম কর্নারে বল জড়ালেন মেসি। এবার শুধু মনে করিয়ে দিলেন তার জন্য এক মুহুর্তই যথেষ্ট। এই মাঠে এতোদিন গোল ছিল না মেসির, জয় ছিল না বার্সারও। জয় আর মেসির যেন সমার্থক শব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে বার্সার জন্য।

ড্র হলে বার্সেলোনা নেমে যেত লা লিগার পয়েন্ট টেবিলের তিনে। জয়ে শীর্ষস্থানটাই নিশ্চিত হয়েছে ব্লগ্রানাদের। রিয়াল মাদ্রিদের সমান ১৪ ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে গোলব্যবধানে এগিয়ে থেকে বার্সেলোনা আছে সবার ওপরে। অবশ্য অ্যাটলেটিকো যেভাবে খেলছিল তাতে জয়টা অনেক দূরের পথ মনে হচ্ছিল বার্সার জন্য। অ্যাটলেটিকো দিনশেষে নিজেদের দুর্ভাগাও ভাবতে পারে, রেফারির বেশ কিছু সিদ্ধান্ত উলটো দিকে গেলে বার্সা ম্যাচে ছিটকে যেত পারত আগেই।

ইনজুরিতে পড়া জর্দি আলবার জায়গায় নামা জুনিয়র ফিরপো একেবারেই শুরুতেই হেরমোসোর ক্রস ঠেকাতে গিয়ে আত্মঘাতী গোল দিয়ে বসতে পারতেন। বারপোস্টের কারণে তখন বেঁচে গেছে বার্সা। এর মিনিট দশেক পর টের স্টেগান যে সেভটি করেছেন তাতে তিনি নিজেই নিজেকে বিশ্বের সেরা গোলরক্ষক দাবি করার অধিকার পেতে গেছেন। বক্সের ভেতর থেকে করা হেরমোসের শক্তিশালী ভলি গোল হতে গিয়েও হয়নি টের স্টেগানের পা দিয়ে করা অতিমানবীয় এক সেভে। স্টেগান প্রথমার্ধেই আরও একবার পরে বাঁচিয়েছেন দলকে। আলভারো মোরাতার গোলমুখী হেড এক হাত দিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন তখন।

বার্সা প্রথমার্ধে অ্যাটলেটিকোর রক্ষণে সেভাবে ভীতি চড়াতে পেরেছে একবারই। সেটাও সেট পিস থেকে। কর্নার থেকে জেরার্ড পিকের হেড গিয়ে তখন লেগেছে বারপোস্টের মাথায়। ম্যাচের আগে সবচেয়ে বেশি আলো কেড়েছিলেন অ্যান্টোয়ান গ্রিযমান। মেসি-সুয়ারেজদেরকেই জায়গা দিচ্ছিল না অ্যাটলেটিকো, সাবেক সতীর্থকে সেই সুবিধাটুকু দেওয়ার তো প্রশ্নই আসে না। তাই বাকিদের মতো তিনিও ছিলেন নিষ্প্রভ। দ্বিতীয়ার্ধে মেসির পাস থেকে ভালো জায়গায় বল পেয়েছিলেন গ্রিযমান। দারুণ কিছু করতে চেয়েছিলেন হয়ত, তাই সাইড ভলির চেষ্টা করেছিলেন। সেটাও গেছে বারপোস্টের অনেক ওপর দিয়ে। ম্যাচে এছাড়া গ্রিযমানের অবদান কমই।

গ্রিযমানের ওই ব্যর্থ শটের কিছুক্ষণ পর অবশ্য বিতর্ক ছুঁয়ে গেছে ম্যাচে। পিকে প্রথমার্ধেই হলুদ কার্ড দেখেছিলেন। ৭০ মিনিটে মোরাতাকে আরেক স্লাইড ট্যাকেলে ফেলে দিয়েও বেঁচে গেছেন পিকে। রেফারি দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের পথে হাঁটতে চাননি। পিকে পরে ৮৩ মিনিটে ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন বদলি হয়ে। এসবের আগে পিকের ডিফেন্সিভ পার্টনার ক্লেমেন্ত লেংলেও বিপদে ফেলতে পারতেন দলকে। উড়ে আসা বল বক্সের ভেতর হাতে ছুঁয়ে গিয়েছিল তার, তবে রেফারি বা ভিএআর কেউই সেটাকে পেনাল্টির জন্য যথেষ্ট মনে করেননি।

অ্যাটলেটিকোর একাদশে এদিন শুরুর থেকেই ছিলেন হোয়াও ফেলিক্স। ইনজুরি কাটিয়ে ৪৫ দিন পর একাদশে জায়গা হয়েছিল তরুণ পর্তুগিজের। শুরুতেই হেরমোসের ভলিতে ক্রসটাও ছিল তার করা। ২০ বছর বয়সী অবশ্য এর পর খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি আর। তাকে উঠিয়ে ভিতোলো নামিয়ে সিমিওনে ভাগ্য ফেরানোর চেষ্টা করেছিলেন ৬৬ মিনিটে। অবশ্য শেষ পর্যন্ত স্বদেশী মেসির কাছেই হার মানতে হয়েছে তাকে।

দ্বিতীয়ার্ধে দুইদলের খেলার গতি কমে আসার পর ড্রটাকেই সম্ভাব্য ফল মনে হচ্ছিল। অ্যাটলেটিকো অবশ্য তবুও হাল ছাড়ছিল না। ৭২ মিনিটে আরো একবার গোলবঞ্চিত হন মোরাতা। দারুণ এক ফ্লিক করেছিলেন তিনি, গোললাইন থেকে তখন বল ক্লিয়ার করে সার্জি রবার্তো এগিয়ে যেতে দেননি অ্যাটলেটিকোকে।

রবার্তোর অবদান ছিল মেসির গোলেও। ডানদিকে সরে গিয়ে কিছুটা জায়গা পেতে সাহায্য করেছিলেন তিনি মেসিকে। পরে ওই গোলে অ্যাটলেটিকোর সর্বনাশ করেছেন মেসি। কাতালাত পতাকার আদলে বানানো নিজেদের চতুর্থ জার্সির প্রথম ম্যাচটাও তাই মনে রাখার মতোই হয়েছে বার্সা সমর্থকদের জন্য। আর ২০১০ সালের পর বার্সেলোনাকে লিগে হারাতে না পারার হতাশা আরও একবার সঙ্গী অ্যাটলেটিকোর।
সূত্র : প্যাভিলিয়ন

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com