বিশ্বজুড়ে গতবছর থেকে চলছে করোনা ভাইরাস মহামারীর ভয়াবহতা। কিন্তু এর মধ্যেও থেমে নেই যুদ্ধ, ধ্বংস, সহিংসতা। যার কোপে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন, সর্বস্ব খুইয়েছেন বহু মানুষ। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) বার্ষিক প্রতিবেদন বলছে, গতবছর মহামারীর ভয়াবহতা সত্ত্বেও যুদ্ধ-সহিংসতার কারণে বিশ্বজুড়ে অন্তত ২৯ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়েছেন। নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে পালিয়ে বাঁচা মানুষের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় ৮ কোটি ২৪ লাখে। যদের মধ্যে বাস্তুচ্যুতদের ৪২ শতাংশের বয়স ১৮ বছরের নিচে।
গতকাল শুক্রবার ইউএনএইচসিআর এই রিপোর্ট প্রকাশ করে। এতে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে বিশ্বে বাস্তুচ্যুত মানুষ বেড়েছে ৪ শতাংশ। পরিস্থিতি এমনই যে ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ভূমিষ্ঠ হওয়া ১০ লাখেরও বেশি শিশু এখন জন্ম থেকেই শরণার্থী। এরা বড় হচ্ছে শরণার্থী শিবিরে। ফলে হুমকিতে রয়েছে শিশুদের ভবিষ্যৎ।
সংস্থাটি আরও জানায়, বাস্তুচ্যুতদের মধ্যে তাদের অধীনে রয়েছে ২ কোটি ৭ লাখ শরণার্থী। যাদের মধ্যে ৫০ লাখ ৭০ হাজার শুধু ফিলিস্তিনি। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশে আশ্রয়ে আছে ৩৯ লাখ ভেনিজুয়েলান। নিজ দেশে গৃহহীন অবস্থায় রয়েছে আরও ৪ কোটি ৮০ লাখ মানুষ। ৪১ লাখ মানুষ আশ্রয় চাচ্ছেন বিভিন্ন দেশে। অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত হওয়া দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে সিরিয়া, আফগানিস্তান, সোমালিয়া ও ইয়েমেন।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেছেন, বাস্তুচ্যুত মানুষগুলো শুধুই সংখ্যা নয়। এদের প্রত্যেকেরই রয়েছে আলাদাভাবে গৃহহীন ও নিঃস্ব হওয়ার গল্প। শুধু মানবিক সাহায্য নয়, তাদের দুর্দশার সমাধানে আমাদের মনোযোগ ও যথাযথ সহায়তা দিতে হবে। ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশন ও শরণার্থীদের জন্য বৈশ্বিক সংহতির মাধ্যমে আমরা বাস্তুচ্যুত ও শরণার্থীদের সাহায্যে আইনি কাঠামো এবং অন্যান্য উপায় পাচ্ছি। কিন্তু আমাদের এর চেয়ে বেশি প্রয়োজন অনেক বেশি রাজনৈতিক সদিচ্ছা। তাহলেই সংঘাত ও নিপীড়ন কমানো যাবে।