নিউইয়র্কে দ্বিতীয়বারের মতো, দুই বাংলায় সমানভাবে জনপ্রিয় গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেছে গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার স্মরণ সংসদ, নিউইয়র্ক। স্থানীয় সময় ৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে জ্যাকসন হাইটসের একটি পার্টি হল মিলনায়তনে প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। তারপর মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।প্রবাস প্রজন্মের শিল্পী জেরীন মাইসার একক নৃত্যাঞ্জলী ‘শোনো একটি মজিবরের কণ্ঠ থেকে লক্ষ মজিবরের কণ্ঠে” দিয়ে সাংস্কৃতিক পর্ব শুরু হয় । অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়কারী শুভ রায়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সদস্য সচিব গোপাল সান্যাল।সাংবাদিক মুহম্মদ ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ছিলেন নিউইয়র্ক প্রবাসী কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কণ্ঠশিল্পীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষেরা।বক্তারা বলেন ,‘গানের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার যে অবদান রেখেছেন তা অনস্বীকার্য। এবং নতুন প্রজন্মকে এই মহান শিল্পীর অবদানের কথা জানাতে তার জন্মস্থান পাবনায় স্মৃতি রক্ষা খুবই জরুরি বলেও অভিমত পোষণ করেন তারা। গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার ১৯২৫ সালে ৫ ডিসেম্বর পাবনার ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে সাহিত্য একাডেমির পরিচালক মোশারফ হোসেন অনেকগুলো বিখ্যাত গানের কথা বলে গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের সংক্ষিপ্ত জীবন পরিচয় তুলে ধরেন।তিনি উল্লেখ করেন বিখ্যাত শিল্পীদের কণ্ঠে গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের গান, যার মাঝে মোহাম্মদ রফি, লতা মঙ্গেশকর, কিশোর কুমার, বাপ্পী লাহিড়ী, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, গীতা দত্ত, এসডি বর্মণ, ভুপেন হাজারিকাসহ তাঁদের কণ্ঠের জনপ্রিয় অসংখ্য গানের নাম তিনি যোগ করেন । দুই বাংলার সঙ্গীতপ্রেমীদের মুখে মুখে যে গান আজও বাজে তার কয়েকটি হলো, আশা ছিল ভালোবাসা ছিল; আজ দুজনার দুটি পথ; পাখিটার বুকে যেন তীর মেরো না; পথের ক্লান্তি ভুলে স্নেহ ভরা কোলে তব; জীবনটা কিছু নয় শুধু এক মুঠো ধুলো; ও নদীরে একটি কথা শুধাই শুধু তোমাওে, প্রেম একবার এসেছিল নীরবে,ওগো তুমি যে আমার কানে কানে শুধু একবার বলো,‘মুছে যাওয়া দিনগুলো আমায় যে শুধু ডাকে,এই পথ যদি না শেষ হয়; আমার স্বপ্ন তুমি,পৃথিবী বদলে গেছে.; যদি হই চোরকাঁটা ওই শাড়ির ভাঁজে-এসব বিখ্যাত গানেরও রচয়িতা গৌরী প্রসন্ন মজুমদার।
স্মরণ সভায় বক্তব্য দেন, চারুকলা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক এমদাদুল হক মো. মতলুব আলী, সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ মাহমুদউল্লাহ প্রমুখ।সঙ্গীত পর্বে যোগ দেন শাহ মাহবুব, ৭১ এর কণ্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায় ও শহীদ হাসান এবং শুরু করেন গীতিকার গৌরী প্রসন্ন মজুমদারের ’- গান দিয়ে। আর শেষ করেন তারই ‘কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই’ দিয়ে। মান্না দে’র গাওয়া তার লেখা এই গানটি ২০০৪ সালে বিবিসির জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ২০টি বাংলা গানে ঠাঁই পায়।