বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা কাজী আরেফ আহমেদ হত্যাকাণ্ডে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও একাধিক হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছেন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
গ্রেপ্তারকৃত দুজন হলেন- রওশন আলী ও উদয় মণ্ডল। এক সংক্ষিপ্ত বার্তায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব। সেখানে বলা হয়, র্যাবের অভিযানে বহুল আলোচিত কাজী আরেফ হত্যাকাণ্ডসহ একাধিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রওশন আলী ও উদয় মণ্ডল গ্রেপ্তার।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বলে বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে।
কাজী আরেফ ১৯৯৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার কালিদাসপুরে একটি জনসভায় বক্তব্যরত অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় আরও নিহত হন তৎকালীন জেলা জাসদের সভাপতি লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী, স্থানীয় জাসদ নেতা ইসরায়েল হোসেন ও শমসের মণ্ডল।
তার হত্যাকাণ্ডের পাঁচ বছর পর ২০০৪ সালের ৩০ আগস্ট ১০ জনের ফাঁসি এবং ১২ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন কুষ্টিয়া জেলা জজ। তবে ওই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হলে ২০০৮ সালের ৫ আগস্ট হাইকোর্ট নয়জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন, একজনকে খালাস দেন ও ১২ জনের সাজা মওকুফ করেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুজন এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলে, ২০১১ সালের ৭ আগস্ট হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেই আদেশ দেওয়া হয়। ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তদের রিভিউ আবেদনও খারিজ করে দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনের রায় কার্যকর হয় ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে। ওই সময় পাঁচজন পলাতক ছিলেন, কারাবন্দী অবস্থায় এর আগেই একজন আসামির মৃত্যু হয়।
আজী আরেফ ১৯৬২ সালে ছাত্রলীগের গোপন সংগঠন স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের কেন্দ্রীয় নিউক্লিয়াসের সদস্য ছিলেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (বিএলএফ) বা মুজিব বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে গঠিত জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ও প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি।