দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জিয়াউর রহমানের সমাধি প্রাঙ্গণে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় রাজধানীর শের-ই-বাংলানগর থানায় করা একাধিক মামলায় দুই-তিন হাজার আসামি করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত মহানগর দক্ষিণ শাখার সদস্য ইশরাক হোসেনও এ মামলার আসামি। ঢাকা মহানগর উত্তরের বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও সদস্য সচিব আমিনুল হক এবং দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী উত্তরে তাবিথ আউয়ালসহ ১৫৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি আছেন ২-৩ হাজার।
ইশরাক হোসেনের প্রেস সচিব সুজন মাহমুদ আমাদের সময়কে বলেন, বর্তমানে ইশরাক হোসেন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। আগামী মাসে তার ঢাকায় ফেরার কথা। এদিকে নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বিক্ষোভ করেছে বিএনপি। রাজধানীর মালিবাগে মিছিলের নেতৃত্ব দেন মহানগর দক্ষিণ আহ্বায়ক আবদুস সালাম ও রফিকুল আলম মজনু। মিছিল থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মহানগর উত্তর শাখার উদ্যোগে মিরপুরসহ কয়েকটি স্থানে মিছিল করেছে দলের নেতাকর্মীরা।
এদিকে পুলিশ বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে একটি মামলা করে। গতকাল বুধবার মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ আরও দুটি মামলা করে। পুলিশের করা মামলার পরিকল্পিতভাবে নাশকতার চেষ্টা, পুলিশের ওপর হামলা এবং গাড়ি ভাঙচুর করে জানমালের ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হয়েছে। গ্রেপ্তার ৪৫ নেতাকর্মীকে আদালতে পাঠালে ২৬ জনকে দুদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। ১৯ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়। গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম তোফাজ্জেল হোসেন রিমান্ডের এই আদেশ দেন। মামলার দুই আসামি কিশোর হওয়ায় তাদের কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।
আসামি পক্ষের আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহসহ আরও অনেক আইনজীবী আসামিদের জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরণ জামিনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন।
সংঘর্ষের পর বিএনপির নেতা আমানউল্লাহ আমান, আমিনুল হক, ছাত্রদলের সাইফুল ইসলাম ও কাওসার মল্লিককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তেজগাঁও থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুজ্জামান ও বিএনপির কর্মী আবুল কালাম আজাদ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
এ বিষয়ে বিএনপির দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, মিথ্যা অভিযোগে মামলার পর তাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছেন। তাদের নেতাকর্মীরা বাসায় থাকতে পারছেন না।
গতকাল কেরানীগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, পুলিশ আমাদের নেতাকর্মীদের রক্তাক্ত করল, আবার আমাদের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করল ও মামলা দিল। আমরা এখন কোন দেশে বাস করছি?
দলীয় সূত্র জানায়, সংঘর্ষের পর দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে গ্রেপ্তার এড়িয়ে থাকতে বলা হয়েছে। দলের কাছ থেকে এ নির্দেশনা পাওয়ার পর আহত নেতাকর্মীরা পুলিশ এড়িয়ে চলতে নিরাপদ স্থানে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেক নেতাকর্মী নিজ বাসায় না থেকে রাতে স্থান পরিবর্তন করে থাকছেন।