বর্তমান সরকার ভীতু-সন্ত্রস্ত বলে মনে করছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে এখন ভয়ে কেউ কথা বলতে পারছে না। ভয়ে কেউ লিখতে পারে না। এমনকি এই মাজার জিয়ারত একটি অত্যন্ত সাধারণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান, সেটিও তারা করতে দেয় না। আপনারা দেখেছেন গত পরশু দিন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণে নবনির্বাচিত বিএনপির নেতৃত্ব শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন। সেখানে লাঠিচার্জ করে, টিয়ারশেল মেরে এমনকি অত্যন্ত নির্মমভাবে ১৮৭ রাউন্ড গুলি চালিয়ে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীদের আহত করা হয়েছে, গ্রেফতার করা হয়েছে। আমাদের আমানউল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, রফিকুল আলম মজনু ও আমিনুল ইসলামসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। সরকার জনগণকে ভয় পায় বলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে ভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের এভাবে নির্যাতন হয়রানি করছে।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরস্থ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে স্বেচ্ছাসেবক দলের পক্ষ থেকে শহীদ জিয়ার মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও জিয়ারত করা হয়।
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর এই ঘটনা কেন? কারণ এই সরকার এত ভীত সন্ত্রস্ত যে তাদের পায়ের নিচে মাটি নেই। তারা জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ জন্য আজকে যেটাকে ধর্মীয় অনুষ্ঠান বলা চলে, যেখানে কোনো সমস্যা নেই, সেখানেও তারা বাধা দিয়ে একটি দমনমূলক আচরণ করছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা যে আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে যুদ্ধ করেছিলাম গণতন্ত্রের চিন্তাধারায় লালিত একটি দেশ, যেখানে মানুষ তার কথা বলতে পারবেন, সংবাদকর্মীরা তাদের সংবাদ নির্ভয় লিখতে পারবেন। সেই বাংলাদেশ এখন আর নেই।
বাংলাদেশ এখন একটি ফ্যাসিস্ট সরকারের যাঁতাকলে পড়ে সম্পূর্ণভাবে কর্তৃত্ববাদী একটি পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা দেখেছি করোনা করোনাকালে আপনি (সরকার) সমস্ত হাট-বাজার দোকানপাট পরিবহন খুলে দিয়েছেন। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলকে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে দিচ্ছেন না। উদ্দেশ্যে একটি করোনার নাম দিয়ে নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়ে তাদেরকে তারা রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭৫ সালের যেভাবে বাকশাল গঠন করা হয়েছিল, ঠিক একইভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায় বর্তমান সরকার।
একটি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হয়েছিল উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে দুর্ভাগ্যজনকভাবে ৪১ বছর পরে এই সংগঠনটি মুক্তভাবে কাজ করতে পারছে না। এই মহামারীতে পরিস্থিতিতে ত্রাণ সম্পর্কিত যে সকল মানবিক কর্মসূচি আছে সেগুলোতেও সরকার বাধা দিচ্ছে।
এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর করিম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলীসহ স্বেচ্ছাসেবক দলের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।