গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে বলব, আপনি কথা দিয়েছিলেন নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে অংশ নেওয়া ছাত্রদের নামে কোনো মামলা হবে না। তিন বছর ধরে সে মামলা ঝুলছে। আপনার কথার মূল্য না থাকলে দেশবাসী যাবে কোথায়? একইভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদ করায় ৫৪ জন ছাত্রের এখনও জামিন দেননি। শুধু জামিন না,এ সমস্ত মামলা প্রত্যাহার করা উচিত। তবেই কাবুলের দৃশ্য দেখতে হবে না। নয়ত কাবুলের দৃশ্য পুনরাবৃত্তি হওয়া আশ্চর্য কিছু না।’
আজ শুক্রবার শাহবাগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও বন্দি ছাত্রনেতাদের মুক্তি দাও! সভা-সমাবেশে দমন-পীড়ন এবং অধ্যাপক আসিফ নজরুলকে হুমকি-হয়রানির প্রতিবাদে এ নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এই নাগরিক সামাবেশ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলের ফেসবুক স্ট্যাটাসের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানানো হয়।
সমাবেশে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্টাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘যে জাতি সম্মান দিতে জানে না সেই জাতির কপালে বিপর্যয় আছে। সাহসী শিক্ষকের প্রতি যা হচ্ছে তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর দায় আছে। আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসাবে আপনার একটা নৈতিক দায়িত্ব আছে। যারা আসিফ নজরুলের প্রতি অন্যায় করেছে, অন্যায় বহাল রেখেছে তাদের পক্ষ থেকে পাবলিকলি আসিফ নজরুলের কাছে ক্ষমা চান। আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসাবে একটা উদাহরণ সৃষ্টি হবে। আপনার টেন্টাররা এসব থেকে শিখবে। আদব-কায়দা শিখবে। আদব-কায়দা না শিখলে জাতির উন্নতি হয় না।’
এদিন মাহামুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আসিফ নজরুলেরন স্ট্যাটাসে কারো নাম বলে নাই। চোরের মন পুলিশ পুলিশ। নাম না বললেও ওরা (আওয়ামী লীগ) বুঝেছে যে আসিফ নজরুল ওদের কথা বলেছে। আসিফ নজরুল যা বলেছে তা প্রত্যেক মানুষের মনে ব্যানার হয়ে বুলঝে। বাংলাদেশে যদি ঠিকঠাক মত নির্বাচন হয় তাহলে বাংলাদেশের বিমানবন্দরে অবস্থা কাবুলের থেকে ভয়াবহ হবে।’
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ক্ষমতা থেকে নামলে তাদের (আওয়ামী লীগ) পরিণতি আফগানিস্থানের কাবুল বিমানবন্দরে মত হবে। প্লেনের চাকা ধরে দেশ ছেড়ে পালাতে হবে। এখনো সময় আছে, পদত্যাগ করেন। অন্তবর্তীকালীন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। জনগণ হয়ত আপনাদের ক্ষমা করবে। নয়ত এদেশের মানুষ আপনাদেও ক্ষমতা থেকে নামিয়ে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করবে।’
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হোক নূর বলেন, ‘শিক্ষক সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে এই দুর্বৃত্তয়ানের আমলে অন্যায়, অবিচার দু:শাসন নিয়ে কথা বলছেন তিনি হচ্ছেন আসিফ নজরুল স্যার। তিনি যে স্ট্যাটাস দিয়েছেন তা কি অবাস্তব কথা? সাহস থাকলে নিরেপক্ষ নির্বাচন দিয়ে দেখেন, অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না।’
ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং ভাসানী অনুসারী পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টুর পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন- বিকল্প ধারা বাংলাদেশের (একাংশের) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারী, জেএসডির সা কা ম আনিছুর রহমান খান, বীরমুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, রাষ্ট্র চিন্তার এডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, নাগরিক ঐক্যের শহিদ উল্লাহ কায়সার, ডা. জাহিদ উর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের রাশেদ খান, সাদ্দাম হোসেন, যুব অধিকার পরিষদের মনজুর মোর্শেদ মামুন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের আব্দুর রহমান ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সৈকত আরিফসহ প্রমুখ।