নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ও নাগরিকপঞ্জী বাংলায় কার্যকর হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, এই আইনের প্রতিবাদে পরপর তিন দিন মিছিলে হাঁটবেন বলেও জানান তৃণমূল নেত্রী।
এনডিটিভি, জি নিউজসহ ভারতের শীর্ষস্থানীয় একাধিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার নাগরিকত্ব বিলের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘সংসদে পাস হলেও আমরা নাগরিকত্ব বিল বাংলায় কার্যকর হতে দেব না।’
পাশাপাশি নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে একাধিক সভা করা হবে বলেও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এ সময় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অ-বিজেপি রাজ্যগুলোতে জোর করে ‘অসাংবিধানিক’ আইন চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন তিনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘শুরু থেকেই সিএবি, এনআরসি’র বিরোধিতা করেছেন তৃণমূল সরকার। আজও একই কথা বলব। পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি করতে দেবে না আমাদের সরকার। ভয়ের কারণ নেই, যেমন শান্তিতে আছেন তেমনই থাকবেন। দেশে স্বাধীনতা আন্দোলন করে যে অধিকার পাওয়া গেছে তা বজায় থাকবে। দেশ রক্ষা করতে যদি আরেকটা স্বাধীনতা আন্দোলন করতে হয় আমি তাই করব।’
শুধু বার্তাই দেওয়া নয়, বরং পথে নেমে বিজেপির মোকাবিলা করতে চলেছেন নেত্রী। সামনের সপ্তাহে পরপর তিন দিন সোমবার, মঙ্গলবার ও বুধবার রাস্তায় পদযাত্রা করবেন মমতা। সোমবার আম্বেদকর মূর্তি থেকে গান্ধী মূর্তি হয়ে মিছিল শেষ হবে জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে। মঙ্গলবার ৮বি বাসস্ট্যান্ড থেকে গান্ধী মূর্তি পর্যন্ত হাঁটবেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার হাওড়া ময়দান থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত পদযাত্রা করবেন মমতা।
উল্লেখ্য, শুক্রবার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়েছে রাজ্যের একাধিক জায়গায়। এদিন সকাল থেকে অশান্তি শুরু হয় মুর্শিদাবাদে। জাতীয় সড়ক ও রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ হয় বেলডাঙায়। বিপর্যস্ত হয় শিয়ালদহ-লালগোলা শাখায় ট্রেন পরিষেবা। উলুবেড়িয়াতে আবার করমণ্ডল এক্সপ্রেস লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়ে বিক্ষোভকারীরা। কলকাতার পার্ক সার্কাসে রাস্তা অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে দেখানো হয় বিক্ষোভ। এর জেরে দীর্ঘক্ষণ যানজটের সৃষ্টি হয়। অবশেষে রাজ্যে শান্তি ধরে রাখতে বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে কেরল, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং পাঞ্জাবে এর বিরোধিতা শুরু হয়েছে। তারা জানিয়েছে, রাজ্যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করতে দেবে না তারা। তিন প্রতিবেশী দেশের অমুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়টিকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ এবং ‘অসাংবিধানিক’ বলে মন্তব্য করেছে রাজ্যগুলো।