আফগানিস্তানে তালেবানরা যে নতুন সরকার গঠন করতে যাচ্ছে, তার প্রধান হতে যাচ্ছেন মোল্লা আবদুল গনি বারাদার। তালেবানের এই শীর্ষ নেতাকে নিয়ে রয়েছে নানা রহস্য। সময়ের দীর্ঘ পরিক্রমায় তাকে নানা ভূমিকায় দেখা গেছে। তালেবানবিরোধী যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে একসময় বারাদারকে পাকিস্তানের পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিন্তু পরে এই যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজনেই তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
বলা হয়ে থাকে তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ছিলেন এই বারাদার। দোহায় তালেবানের রাজনীতিক কার্যালয়ের তিনি প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া দেশ-বিদেশে বৈঠকগুলোতেও তাকেই নেতৃত্ব দিতে দেখা যায়। তালেবানের মধ্যে এই বারাদারই একমাত্র নেতা, যিনি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন।
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে অভিযানের পর দ্রুতই তালেবান সরকারের পতন হয়েছিল। এর পর ২০১০ সালে পাকিস্তানের করাচিতে তাকে আটক করা হয়। সেই আটকের অভিযানে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মার্কিন বাহিনীও যুক্ত ছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর তালেবানের সঙ্গে আলোচনার পরিবেশ তৈরি করলেন। আলোচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রই ২০১৮ সালে বারাদারকে মুক্তি দিতে বলে। এর পর বারাদার দোহা কার্যালয়ের নেতৃত্ব দেন। দুই বছরের আলোচনা শেষে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিতে তালেবানের পক্ষে সই করেন মোল্লা বারাদার। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, পাকিস্তান, চীনসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনায় বারাদারই তালেবানের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
তালেবানের মধ্যে মোল্লা ওমরের ‘ব্রাদার’ হিসেবেই সবাই মনে করতেন। সেই ব্রাদার থেকেই ‘বারাদার’ অপভ্রংশটি যোগ হয়েছে। তালেবানের অন্য নেতার মতোই বারাদারের ব্যক্তিগত জীবনও অল্পই জানা গেছে।