চলতি বছরের প্রাথমিক সমাপনি (পিইসি) ও অষ্টম শ্রেণীর সমাপনী (জেএসসি) পরীক্ষা আয়োজন এখনো অনিশ্চিত। যদিও নবেম্বর ও ডিসেম্বর মাসেই এ দু’টি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা তবে এ বছর একই সময়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সে কারণে গত বছরের মতো এ বছরও এই দুই সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না-ও হতে পারে।
শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, পিইসি পরীক্ষা আয়োজনের দায়িত্বে থাকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। জেএসসি পরীক্ষা আয়োজনের জন্য শিক্ষা বোর্ডগুলো দায়িত্ব পালন করে। কিন্তু চলতি বছরের আগামী নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার আয়োজন করায় বোর্ডগুলো জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা নিতে পারছে না। এ ছাড়া এ বিষয়ে তাদেরকে কোনো প্রস্তুতি নেয়ারও নির্দেশনা দেয়া হয়নি। এ কারণে তারা এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দু’টি আয়োজনের বিষয়েই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, গতবারের মতো এবারও পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেবেন। যে কারণে সংশ্লিষ্ট কেউ এ বিষয়ে মন্তব্য করছেন না। অন্য দিকে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড আগামী ১১ নভেম্বর এসএসসি ও সমমান এবং ২ ডিসেম্বর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা আয়োজনের প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে এবার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে শুধুমাত্র ঐচ্ছিক বিষয়ে পরীক্ষা হবে। এ দিকে গত ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় শিক্ষাক্রমের খসড়া রূপরেখার অনুমোদন দিয়েছেন। ওই রূপরেখা অনুযায়ী নতুন কারিকুলামে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।
চলতি বছরের জেএসসি পরীক্ষার বিষয়ে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড আইন অনুযায়ী আমাদের দু’টি মাত্র পাবলিক (এসএসসি ও এইচএসসি) পরীক্ষা নেয়ার নিয়ম রয়েছে। যে কারণে এটি আমাদের জন্য বাধ্যবাধকতার বিষয়। কিন্তু জেএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠানের বিষয়ে আমাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় আমরা জেএসসি পরীক্ষাটি পরিচালনা করি। অন্যান্য বছরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে সেটি (জেএসসি পরীক্ষা) আমরা আয়োজন করি। আর এই পরীক্ষাটি আয়োজন করতে হলে সাধারণত সেপ্টেম্বরের দিকে আমরা এর প্রস্তুতি নেয়া শুরু করি। তবে চলতি বছরের এই পরীক্ষা নেয়ার জন্য এখন পর্যন্ত মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা আসেনি এবং আমাদের এ সংক্রান্ত কোনো প্রস্তুতিও নেই।
অপর দিকে প্রতি বছর প্রায় ৩০ লাখ শিক্ষার্থী পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয়। নভেম্বর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে এ পরীক্ষার আয়োজন করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। গত বছর প্রাথমিক স্তরের কোনো ধরনের পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থীদের পরের শ্রেণীতে উত্তীর্ণ করা হয়। চলতি বছরের পিইসি (প্রাথমিক সমাপনী) পরীক্ষা আয়োজনের কোনো প্রস্তুতি নেয়া হয়নি। এমনকি ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা আয়োজনের জন্য মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিলেও তারা রাজি হয়নি। তাদের পক্ষে ইবতেদায়ি সমাপনী পরীক্ষা আয়োজন করা সম্ভব নয় বলে লিখিতভাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) রতন চন্দ্র পণ্ডিত বলেন, সমাপনী পরীক্ষার বিষয়ে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।