আফগানিস্তানে গত ২০ বছরে ২৭০ নারী বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। বিভিন্ন সময়ে তারা অপরাধীদের শাস্তির রায় দিয়েছেন। তালেবানের নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর কারাবন্দি সবাইকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এখন সেই নারী বিচারকদের খুঁজছে অপরাধীরা। বিবিসি বলছে, ভয় আর আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন নারী বিচারকরা।
আত্মগোপনে থাকা সাবেক ছয় আফগান নারী বিচারক বিবিসিকে সাক্ষাৎকারে বলেছেন তাদের আতঙ্কের কথা। নিরাপত্তার জন্য তাদের নামও বদলে ফেলেছেন এসব নারী।
মাসুমা নামে এক নারী বিচারক বলেন, ধর্ষণ, হত্যা ও নির্যাতনের দায়ে তিনি একশর মতো অপরাধীকে সাজা দিয়েছেন; কিন্তু তালেবান কাবুল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার কয়েক দিনের মাথায় জানতে পারেন, সেসব সাজাপ্রাপ্ত কারাবন্দি মুক্তি পেয়েছে। এর পর থেকেই হুমকিতে রয়েছেন তিনি। তার ফোনে বিভিন্ন নম্বর থেকে টেক্সট, ভয়েস কলও পাঠানো হয়। তিনি আরও বলেন, একদিন মধ্যরাতে জানতে পারলাম, তালেবান সব বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা পালিয়ে যাই। বাড়িঘর, সম্পত্তি সব পেছনে ফেলে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।
তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর পরই অপরাধীরা তার বাড়িতে হানা দেয়। পরে এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে জানতে পারেন তিনি।
মাসুমার মতো আফগানিস্তানে গত ২০ বছরে যেসব নারী বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান তারা দেশটির সবার কাছে অনেকটা পরিচিত মুখ। সে কারণে নিজেদের লুকিয়ে চলাফেরা করতে হয় তাদের। বিশেষ করে তালেবানদের চেক পয়েন্ট অতিক্রম করার সময় নিজেকে কৌশলে আড়াল করে চলেন তারা।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে আফগানিস্তানে তালেবানের শাসনকালে নারীদের অধিকারের বিষয়গুলো ক্ষুণœ হওয়ার বিস্তর অভিযোগ আছে আন্তর্জাতিক মহলে। এবারও তালেবানের নতুন সরকারে উচ্চ পর্যায়ে ঠাঁই হয়নি নারীদের। যদিও তালেবান নারী ও শিশুদের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এখনো আন্দোলন করছেন আফগান নারীরা।