আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য মানুষের নাম কেন্দ্রে পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘টাকা খেয়ে খারাপ লোকের নাম পাঠাবেন না।’ তিনি এসব অপকর্ম থেকে বিরত থাকতেও সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
আজ সোমবার সকালে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে প্রয়াত সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপনের স্মরণ সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য রাজনীতি করতে হবে, নিজের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য নয়- এমন মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অনেকেই ক্ষমতা পেয়ে বেপরোয়া হয়ে যায়, যা মোটেই কাম্য নয়।’ তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার না করতেও দলের নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ার করে দেন।
রাজনীতিতে ভালো মানুষদের সাথে রাখার নির্দেশ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খারাপ মানুষ দিয়ে রাজনীতি করলে দল নষ্ট হয়ে যাবে।’ দুঃসময়ে বসন্তের কোকিলরা দলে থাকবে না, ত্যাগীরাই সুখে-দুঃখে দলের পাশে থাকবে- এমনটা উল্লেখ করে সৎ ও ভালো মানুষদের দলে টানারও নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের।
৭৫ এর পর দেশে যে প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু হয়েছিলো তার এখনো রেশ রয়ে গেছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘৭৫’র হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত ছিল? কে নেপথ্যে ছিল? সেই ইতিহাস সবাই জানে- যা কখনো ভুলে যাবার নয়।’
তিনি বলেন, ‘জিয়া যেমন ৭৫’র হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের নায়ক ছিলেন, তেমনি ২১ আগস্টে তারেক রহমান ছিলেন মাস্টার্স মাইন্ড’। সে সময় তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আজো আমরা প্রতিহিংসার বৃত্ত থেকে বের হতে পারি নাই।’
৭৫ ও ২১ আগস্ট ঘটনায় পারস্পরিক সম্পর্কের দেয়াল আরও উঁচুতে নিয়ে গেছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান দেশে প্রতিহিংসার রাজনীতি শুরু করেছিলেন আর বিএনপি এখনো তা অব্যাহত রেখেছে।’
গণতন্ত্রের যে কর্মসম্পর্ক তা নষ্ট করে দিয়েছে বিএনপি, এমনটা মনে করে ওবায়দুল কাদের আবারও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘একাধিকবারের একজন প্রধানমন্ত্রীর কয়টা জন্মদিন থাকতে পারে? এটা কি প্রতিহিংসা নয়?’ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অনুভূতিতে খোঁচা দিতে বেগম জিয়া এই ভূয়া জন্মদিন পালন করেন বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের।
বর্তমানে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে পারস্পরিক কর্ম-সম্পর্কের বিষয়টি কেন অনুপস্থিত, এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘প্রতিহিংসা ও বিদ্বেষের রাজনীতি পরিহার করা আমাদের এখন খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।’
ওবায়দুল কাদের প্রয়াত হাসিবুর রহমান স্বপনকে একজন সফল রাজনীতিবিদ আখ্যায়িত করে বলেন, ‘একজন নির্লোভ নিরহংকার নেতা ও জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি ছিলেন স্বপন।’
সে সময় ওবায়দুল কাদের হাসিবুর রহমান স্বপনের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তার পরিবার পরিজনের প্রতি সমবেদনা জানান।
শাহজাদপুর পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত শোক সভায় সাবেক সংসদ সদস্য চয়ন ইসলামের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মেরিনা জাহান কবিতা, সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট কেএম হোসেন আলী হাসান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম তালুকদার এবং সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়, ডাক্তার হাবিবে মিল্লাত মুন্না, ডাক্তার আবদুল আজিজ, তানভীর ইমাম, আবদুল মমিন মন্ডল ও শাহজাদপুর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।