আফগানিস্তানে চলমান সংকট নিরসনে ২০ অক্টোবর রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। মূলত চীন, ইরান, পাকিস্তান ও ভারতের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেবে। কিন্তু রাশিয়ার দূত জামির কাবুলফ জানিয়েছেন, ওই আলোচনায় তালেবানকেও আমন্ত্রণ জানানো হবে।
চলতি মাসের অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে মস্কোয় বৈঠকটি ছিল পূর্বনির্ধারিত। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রুশ রাষ্ট্রদূত জামির কাবুলফকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, সেখানে তালেবানকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কিনা, জবাবে দূত বলেন ‘হ্যাঁ, তাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে’। এদিকে ১২ অক্টোবর শুরু হতে যাচ্ছে ধনী দেশগুলোর জোট জি-২০ সম্মেলন। এবারের জি-সম্মেলনে তালেবান ইস্যুটি অনেকটা জায়গা নিয়ে থাকবে বলে ইতোমধ্যে নেতৃবৃন্দ আভাস দিয়েছেন। জি-সম্মেলনের পরই মস্কো বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে তালেবান ইস্যুতে ভারতের অবস্থান কেমন হবে তা নিয়ে দিল্লি কৌশল আঁটছে। রাশিয়া থেকে এস-৪০০ মিসাইল কেনার চুক্তি নিয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের টানাপড়েন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ইরান এবং রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিংবা যুদ্ধাস্ত্র কিনলে যুক্তরাষ্ট্রের নিষিদ্ধ তালিকায় চলে যেতে হবে ভারতকে। অন্যদিকে ভারত বলছে, দেশের স্বার্থে যা সিদ্ধান্ত নিতে হয় তাই নেবে ভারত।
এমন প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী উইন্ডি শেরম্যানের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে দিল্লি ওয়াশিংটনের সামনে তুলে ধরে যে, ভৌগোলিক এবং রাজনৈতিক, দু’দিক থেকেই তালেবান সরকারের সঙ্গে দর কষাকষির ক্ষেত্রে তেহরান এবং মস্কোর ভূমিকা ভবিষ্যতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। সব মিলিয়ে ভারত যুক্তরাষ্ট্রকে বোঝানোর চেষ্টা করেছে, মার্কিন স্বার্থেই তাদের উচিত ভারতের সঙ্গে রাশিয়া এবং ইরানের সম্পর্কে নাক না গলানো।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে রাশিয়ার কাছ থেকে পাঁচটি এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার চুক্তি করে ভারত। ২০২৫ সালের মধ্যে সেগুলো ভারতের হাতে হস্তান্তরের কথা রয়েছে। ৫০০ কোটি ডলার মূল্যের এ চুক্তির মধ্যে নয়াদিল্লি ইতোমধ্যেই মস্কোকে ৮০ কোটি ডলার পরিশোধ করেছে। এর আগে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কেনায় তুরস্কের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ওয়াশিংটন। আর তাই তুরস্কের মতো ভারতের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।