৯০-এর মতো আরো একটি গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে হবে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। লাখো মানুষের জীবনের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। পরে ১৯৯০ সালে একটি গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থায় পরিবর্তন এনে দিয়েছিল। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। সেদিন বেগম খালেদা জিয়া নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। আজকে আবার সেই সময় এসেছে। আরো দৃঢ়তার সাথে আরেকটি গণঅভ্যুত্থান ঘটাতে হবে।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে শহীদ জেহাদ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন প্রায় প্রতিটি আন্দোলনে আমাদের ছাত্ররাই সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে যেমন আমান উল্লাহ আমানরা তাদের দায়িত্ব পালন করে সফল হয়েছেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে ছাত্ররাই সফল হয়েছিল। এমনকি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ছাত্র-যুবকরাই জয়ী হয়েছিল।
তিনি বলেন, আজকে একটা ভয়াবহ পরিস্থিতি। জেহাদ যে কারণে রক্ত দিয়েছিল, সেই গণতন্ত্রকে আজকে আমাদের কাছ থেকে হরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমাদের অর্জনগুলোকে কেড়ে নেয়া হয়েছে। ১৯৭১ সালে আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছিলাম, সেই স্বাধীনতা এখন আমরা ভোগ করছি না। দেশের স্বাধীনতা সার্বোভৌমত্ব আজকে বিপন্ন হয়েছে। আমরা একটি নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা মানুষের জন্য যে ভালো জিনিসগুলো লাভ করেছিলাম, তা এই সরকার কেড়ে নিয়েছে। এই সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে। আদালতকে ব্যবহার করে ২০১২ সালে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করেছে। তারপর বেআইনিভাবে প্রায় ১৪ বছর ধরে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে।
তিনি বলেন, আজ আমাদের কোনো কিছু অবশিষ্ট নেই। এই সরকার বিচার বিভাগ, পার্লামেন্ট, প্রাশাসন, শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য খাত ও অর্থ ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। তাই এই সরকারকে কোনোভাবেই আর সময় দেয়া যাবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, মানুষ আজ লিখতে পারে না, কথা বলতে পারে না। বিদেশ থেকে সাংবাদিক কনক সরোয়ার কিছু সত্য কথা বলেন- আপনারা সবাই তার নাম জানেন। তার বোনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার (সাংবাদিক কনক সারোয়ারের বোন) তিন সন্তান রয়েছে। তাকে রিমান্ডে নিয়ে অত্যাচার ও নির্যাতন করা হয়েছে। এ কোন দেশে আমরা বসবাস করি? কোনো সভ্যতা নেই এখানে। এই অবস্থা তৈরি করেছে বর্তমান সরকার। সুতরাং আপনাকে, আমাকে, দেশকে, স্বাধীনতা যুদ্ধের অর্জন ও নব্বইয়ের অর্জনকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে অবিলম্বে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। তাদের পরিষ্কারভাবে বলতে হবে সরে দাঁড়াও, সরে যাও।