ডুপ্লেক্স স্ট্যাডি হলো রক্তনালির (শিরা বা ধমনি) এমন একটি ব্যথামুক্ত পরীক্ষা পদ্ধতি- যেখানে কম্পিউটারের মাধ্যমে এর বাহ্যিক, প্রাচীরগত ও অভ্যন্তরীণ অবস্থা বা সমস্যা এবং রক্তের প্রবাহ ও গতি নির্ণয় করা হয়। অর্থাৎ রক্তনালিতে কোনো ব্লক, চিকন হয়ে যাওয়া, জমাটবাঁধা রক্ত, চর্বি, গঠনগত ত্রুটি, অনাকাঙ্ক্ষিত সংযোগ, স্ফীতি অবস্থা কিংবা এনুরিজম ইত্যাদি আছে কিনা- তা দেখা হয়। এটি একটি নন-ইনভেসিভ পরীক্ষা পদ্ধতি। এ ক্ষেত্রে রোগীর শরীরে কোনো কাটাছেঁড়া, ব্যথা বা ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় না।
যে মেশিন ব্যবহার করা হয় : এ ক্ষেত্রে একটা ভালোমানের আল্ট্রাসাউন্ড মেশিন ও প্রব বা ট্রান্সডিউসার ব্যবহার করা হয়। মেশিনে ছবির স্ক্রিনে রক্তের কালার বা বর্ণসহ এর চলাচল ও শব্দ দেখা কিংবা শোনা যায়। অর্থাৎ ডপলার সিগন্যাল প্রদর্শিত হয়।
মেশিনের কার্যনীতি : আসলে ডুপ্লেক্স স্টাডিতে দুই ধরনের আল্ট্রাসাউন্ড সমন্বিত করে কাজ করা হয়। দুটি পদ্ধতির মধ্যে একটি হলো বি মোড। এটি দ্বিমাত্রিক চিত্র সরবরাহ করে এর অবস্থান ও গঠনগত ত্রুটি শনাক্ত করে। অন্যটি হলো ডপলার। এটি রক্তপ্রবাহের বেগ ও দিক অর্থাৎ ব্লক বা সংকীর্ণতা মূল্যায়ন করে।
এ পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা : রক্তনালি সংক্রান্ত সমস্যা চিহ্নিতকরণ অর্থাৎ ডায়াগনোসিস ও চিকিৎসা পদ্ধতি ঠিক করার জন্য।
ডুপ্লেক্স পরীক্ষার নানা ধরন : আর্টারিয়াল বা ধমনির ডুপ্লেক্স, ভেনাস বা শিরার ডুপ্লেক্স, কেরোটিড কিংবা ঘাড়ের রক্তনালির ডুপ্লেক্স, এওর্টা অথবা পেটের মহাধমনির ডুপ্লেক্স, শিরা বা রক্তনালির অনাকাক্সিক্ষত সংযোগ স্থানের ডুপ্লেক্স, রেনাল কিংবা কিডনির রক্তনালির ডুপ্লেক্স, হেপাটিক অথবা লিভার অর্থাৎ যকৃতের রক্তনালির ডুপ্লেক্স, টেস্টিকুলার বা অ-কোষের ডুপ্লেক্স, ভেইন ম্যাপিং অর্থাৎ কিডনি নষ্ট হয়ে গেলে ফিস্টুলা তৈরি করার আগে হাতের শিরা ও ধমনির অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য করা হয় ইত্যাদি।
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া : সাধারণত কোনো রিস্ক বা পার্শপ্রতিক্রিয়া নেই। ডুপ্লেক্স স্টাডি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ধমনি বা শিরার অতিগুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষা পদ্ধতি। এই পরীক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে রক্তনালির সমস্যা সঠিকভাবে চিহ্নিতকরণে আপনার ‘ভাসকুলার সার্জন’ যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারে।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক, ভাসকুলার সার্জারি, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেরেবাংলানগর, ঢাকা