ভ্যাপসা গরম কমে গেছে, থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। লঘুচাপের প্রভাবে আগামী দুই-তিন দিন এমন আবহাওয়া থাকতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে সমুদ্র ও নদীতীরবর্তী এলাকায়। এ জন্য দেশের চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর এবং নদীবন্দরগুলোতে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সমুদ্রবন্দরগুলোর সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে- ‘বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি ভারতের তেলেঙ্গনা ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। এদিকে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের আধিক্যের পার্থক্য থাকায়
সাগর উত্তাল এবং ঝড়ো হাওয়াসহ অনেক এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছে। এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- ‘খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায়; ঢাকা, রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ময়মনসিংহ ও সিলেটের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বৃষ্টি হতে পারে।’
নদীবন্দরগুলোর সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে- রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলগুলোর ওপর দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ জন্য এ এলাকার বন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগামী দুই থেকে তিন দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে থেমে থেকে বৃষ্টি হতে পারে। এতে তাপমাত্রা আরও কমে আসবে।’
বন্দরের কার্যক্রম বিঘিœত
আমাদের মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি জানান, মোংলাবন্দরের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি বয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টিপাতের ফলে মোংলাবন্দরে অবস্থানরত ২১টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহনের কাজ বিঘিœত হচ্ছে। মোংলাবন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখরউদ্দীন জানান, ৯টি সার ও একটি চালের জাহাজের কাজ আপাতত সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। বাকিগুলোতে বৃষ্টি কমলে থেমে থেমে কাজ হচ্ছে।
এদিকে বৃষ্টিপাতের কারণে বন্দর ও পৌর শহরের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে পৌরসভার নিচু এলাকার রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়িতে।
চরফ্যাশন (ভোলা) প্রতিনিধি জানান, চরকুকরি-মুকরি ইউনিয়নের চরপাতিলা এলাকায় মেঘনা নদীতে গত রবিবার একটি ট্রলার ডুবে যায়। ১৮ ঘণ্টা পর বৈরী আবহাওয়ার কারণে গতকাল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স টিমের ডুবুরি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান স্থগিত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় এক মা ও তার ছেলে এখন নিখোঁজ রয়েছেন।