সরকার ‘ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট’কে সুবিধা দিতেই ভোজ্য তেলসহ দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের কষ্টের কথা তুলে ধরতে গিয়ে আজ বুধবার এক মিলাদ মাহফিলপূর্ব আলোচনা সভায় তিনি এই অভিযোগ করেন। রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় বিএনপির উদ্যোগে কেন্দ্রীয়ভাবে এই মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হয়।
রিজভী বলেন, ‘এই সরকার একটা গভীর নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে। এই দেখুন না গতকালই সোয়াবিন তেলের দাম এক লাফে ৭ টাকা বাড়িয়েছে। ১৫৩ টাকা কেজি ছিল, এখন ১৬০ টাকা কেজি। এই যে সুযোগটা করা হয়েছে সিন্ডিকেটকে সুবিধা দিতে। শুধু তাই নয়, চালের দাম, ডালের দাম, মোটা দানা মশুরের ডালের দাম, চিকন দানা মশুরের ডালের দাম সব হু হু করে বাড়ছে, মানে আকাশ ছুঁই ছুঁই করছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘উদ্দেশ্য একটাই- সরকারের সিন্ডিকেট তারা তাদের পকেট ফুলাবে, পকেট ফুলিয়ে তারা একেবারে মোটাসোটা হতে থাকবে এবং এদের এই মোটাসোটা হওয়ার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার সরকারের ময়ুরের সিংহাসনে টিকে থাকবেন। এটাই হচ্ছে শেখ হাসিনার অভিপ্রায়, এটাই হচ্ছে শেখ হাসিনা ইচ্ছা, এটাই হলো শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অপকৌশল, সরকারের অপকৌশল।’
সারা দেশের পূজামণ্ডপে সংঘটিত হামলার ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে রিজভী বলেন, ‘এই ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য জনগণের দৃষ্টি চৌহমুনীতে, জনগণের দৃষ্টি হাজীগঞ্জে, জনগণের দৃষ্টি হবিগঞ্জে-নবীগঞ্জে, জনগণের দৃষ্টি চট্টগ্রামে, জনগণের দৃষ্টি পীরগঞ্জে উনি (শেখ হাসিনা) নিয়ে গেছেন। আর ওবায়দুল কাদেরের মতো আরও তাদের মন্ত্রী-নেতারা যারা আছেন তাদেরকে তিনি বলেছেন, তোমরা এটার (সাম্প্রদায়িক ঘটনাবলি) ওপর ব্যস্ত রাখো জনগণকে। আর সেই কাজটা তারা অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে করছে।’
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনাদর্শ থেকে শিক্ষা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘আজকের গুম-খুনের এই রাজনীতি, আজকের এই মিথ্যাচারের রাজনীতিতে আমরা প্রত্যেকে যদি প্রশিক্ষিত হই রসুল (সা.) আদর্শ দ্বারা। আমার মনে হয়, এই সরকার বেশিদিন টিকতে পারবে না। তার আর্দশের কাছে, ন্যায়ের কাছে, ইনসাফের কাছে, সুশাসনের নীতির কাছে কখনোই জুলুমকারি টিকে থাকতে পারে না, কখনোই টিকে থাকতে পারবে না।’
জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের আহবায়ক শাহ নেসারুল হকের সভাপতিত্বে ও মাওলানা সেলিম রেজা সঞ্চালনায় মিলাদ মাহফিলপূর্ব আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরফত আলী সপু, ডা. রফিকুল ইসলাম, শামীমুর রহমান শামীম, আবদুল খালেক, ওলামা দলের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার, অ্যাডভোকেট আবুল হোসাইন, মাওলানা আলমগীর হোসেন প্রমূখ ।
পরে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে সকল অনাচার-অত্যাচার, নিমর্মতা দূর হয়ে ন্যায়-সত্য প্রতিষ্ঠা, সুশাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন নেতাকর্মীরা।