দেশের শেয়ারবাজারে অস্থিরতা কাটেনি। জুন ক্লোজিংয়ের বেশকিছু কোম্পানির রেকর্ড মুনাফা ও লভ্যাংশের পরও শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতন ঘটেছে। এর আগে টানা সাত কার্যদিবস পতনের পর গত বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মেলে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও রবিবার ধস নামায় আবারও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। দিনটিতে শীর্ষের দশটি কোম্পানি মোট লেনদেনের ৫৩ শতাংশ দখল করেছে। বেক্সিমকোসহ আরও নয়টি কোম্পানি মোট ৭৮১ কোটি টাকা লেনদেন করেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সকালে সূচকের ইতিবাচক প্রবণতা দিয়ে শুরু হলেও বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তোলার চাপ বাড়ে। সকালেই বিনিয়োগকারীদের একটি অংশের শেয়ার কেনার চাপে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৬২ পয়েন্ট বেড়ে যায়। ফলে সপ্তাহের শুরুতেই সূচকে বড় উত্থানের স্বপ্ন দেখতে থাকেন বিনিয়োগকারীরা। তবে বিনিয়োগকারীদের বড় উত্থানের আশা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। বেলা সাড়ে ১১টার পর লেনদেনে অংশ নেওয়া একের পর এক প্রতিষ্ঠানের দর পতন হতে থাকে। ফলে বড় উত্থান দেখতে দেখতে শেয়ারবাজার ধসে রূপ নেয়। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসই-এক্স আগের দিনের তুলনায় ৭০ পয়েন্ট কমে ৭ হাজার ৫ পয়েন্টে নেমে গেছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ ৩০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৮৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ১ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৬৯৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া মাত্র ৫৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯২টির। আর ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৬৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৩১০ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১৫৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৪২ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৭৯ কোটি ৩০ লাখ টাকার। ৭৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১২২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৮৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২০৫টির এবং ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
পিপলস লিজিংয়ের বন্ধের মেয়াদ ফের বাড়ল : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের শেয়ার লেনদেন বন্ধের মেয়াদ আরও এক দফা অর্থাৎ ৫০তম দফা বাড়ানো হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালনা পর্ষদ কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন আরও ১৫ দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ হিসেবে আজ থেকে আগামী ৮ নভেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন বন্ধ থাকবে।