বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৫ অপরাহ্ন

কেন বার বার স্কুপে আত্মহুতি মুশফিকের!

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২১
  • ১৩০ বার

শ্রীলংকার সাবেক ওপেনার তিলকরত্নে দিলশান স্কুপে গুরু ছিলেন। উনি এতটাই উপভোগ করতেন ও সফল হতেন যে শটটির নাম হয়ে গিয়েছিল ‘দিলস্কুপ’। আপনি এটাকে ‘চিকি শট’ কিংবা স্কুপ যেটাই বলেন না এটা একদিনে আসেনি। দীর্ঘ অনুশীলন ও আত্মবিশ্বাসে দাঁড় হওয়ার পর এমন ঝুঁকিপূর্ণ শট একটি বিশ্বকাপ ও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেলা যায়। আর এখানে তো মুশফিকুর রহিমদের শারজার ম্যাচটি ছিল একেবারে টিকে থাকার। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে পারলে বাংলাদেশের সেমিফাইনাল আশা বেঁচে থাকত। সেটাও হলো না। মুশফিক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। ১৬ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছেন। অমন সময়ে রবি রামপলের বল স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হন। আর বাংলাদেশ আত্মবিশ্বাস হারিয়ে হারের দিকে ধাবিত হয়!

একেবারে মুশফিক নতুন খেলছেন এই শট তাও নয়। এর আগেও তিনি এই শট খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন। সফলতার চেয়ে ঝুঁকির আশঙ্কা ৮৫ শতাংশ। সাধারণ কোনো সিরিজ বা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হলে একটা কথা ছিল। ভক্ত সমর্থক ও ক্রিকেট বোদ্ধারা বেশ বিরক্ত হয়েছেন এমন শট খেলতে গিয়ে তার আউট হওয়ায়। তবে মুশফিকের কাছে এর ব্যাখ্যা চাওয়া বেশ মুশকিল। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সবাই মানসিকভাবে ভালো অবস্থানে নেই। ৩ রানে ক্যারিবীয়দের কাছে হেরে আরও একটি বিশ্বকাপে বিদায়। এবারও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মূল পর্বের কোনো ম্যাচে জয় আসবে কিনা সেটা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের সামনে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া। আবুধাবিতে ২ ও দুবাইয়ে ৪ নভেম্বর ম্যাচ দুটি রয়েছে।

মুশফিক এই শারজাতে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৫৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। ২৪ অক্টোবর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। যে ম্যাচটিতে বাংলাদেশ হেরে যায়। সিনিয়র ব্যাটসম্যান হিসেবে তার প্রতি মানুষের চাওয়া-পাওয়া বেশি থাকে। মাহমুদউল্লাহ স্কুপ করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চার পেয়েছেন। কিন্তু সব সময় সফল হওয়ার গ্যারান্টি নেই। শারজার উইকেট বা পিচ বেশ সেøা। বল অনেকটা নেমে আসে। দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড বা নিউজিল্যান্ডের পিচে স্কুপ খেলার ঝুঁকি অনেকটা কম। মুশফিক এখন পাল্টা যুক্তি দিতে পারেন। পরিস্থিতি তাকে এ ধরনের শট খেলতে বাধ্য করেছে। কারণ বলের চেয়ে রান বেশি দরকার ছিল। আর আস্কিং রান রেট বেড়ে যাওয়ায় তিনি এই স্কুপ শট খেলে আত্মাহুতি দিয়েছেন। এই শটে তিনি শ্রীলংকার বিপক্ষেও চার পেয়েছেন। সে ক্ষেত্রে ডিফেন্ড দিতে পারেন অবশ্য। কিন্তু শটটিতে আপনার সফল হওয়ার চান্স যখন ১৫ শতাংশ তখন তো ব্যর্থ হলে আঙুল উঠবেই। শারজার মাঠ ছোট ছিল। এই মাঠে মুশফিক সামনে খেলে বাউন্ডারি আদায় করতে পারতেন বৈকি! অনেক দর্শক বলেছেন, ‘মুশফিক গ্রামার মেনে খেললেই হয়। পেছনে খেলার দরকার কী! চমৎকার স্কয়ার কাট করে বাউন্ডারিও মেরেছেন। কেন তবে এই শটটি খেলতে গেলেন। রামপল একজন অভিজ্ঞ পেস বোলার। তার বলকে সমীহ করা দরকার ছিল হয়তো। এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসর বসেছিল ২০০৭ সালে। ফাইনাল হয়েছিল ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে। পাকিস্তানের মিসবাহ-উল হক এই স্কুপ করতে গিয়ে ক্যাচ দেন। আর মিসবাহর আউটের মাধ্যমে ভারত বিশ্বকাপ জিতে যায়। ২০০৯ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছিল পাকিস্তান। কিন্তু সেই আফসোস এখনো হয়। মিসবাহ সোজা দাঁড়িয়ে শট খেললেই হয়তো ম্যাচটি পাকিস্তান জিততে পারত, সেই সঙ্গে আরও একটি বিশ্বকাপ। এমন অনেক কিন্তু কেন ও হয়তোর মাঝে আমাদের সম্ভাবনার মৃত্যু ঘটে!

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com