শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:৫৪ অপরাহ্ন

‘ধর্ম পরিবর্তন’ করে বিয়ে, স্বীকৃতির দাবিতে স্বামীর বাড়িতে স্ত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর, ২০২১
  • ১০৭ বার

নেত্রকোণার মদনে স্ত্রীর স্বীকৃতি পাওয়ার দাবিতে এক নারী গার্মেন্টস কর্মী স্বামীর বাড়িতে অনশন শুরু করেন। সেখানে কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় গতকাল সোমবার সকালে স্বামীর বসতঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছেন তিনি। পরে পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে।

উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের কেশজানী গ্রাম তাপস চন্দ্র বিশ্বাসর বাড়িতে এই ঘটনাটি ঘটে। ধর্ম পরিবর্তন করে মুসলিম মেয়েকে বিয়ে করায় এলাকায় সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, উপজলার কেশজানী গ্রামর সুধাংশু বিশ্বাসের ছেলে তাপস চন্দ্র বিশ্বাস গাজীপুরে কাঁচামালের ব্যবসা করতো। সেই সুবাদে শেরপুর জেলার সদর উপজেলার কামারচর ইউপির ধাবলারচর গ্রামের নূর ইসলামর মেয়ে গার্মেন্টস কর্মী মিনা আক্তার (২০) সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে তাপস চন্দ্র বিশ্বাস নিজের পরিচয় আড়াল করে সুমন ইসলাম পরিচয় দিয়ে ২০১৮ সালের ১৩ ডিসেম্বর ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক মিনাকে বিয়ে করে এবং তার সঙ্গে তিন বছর সংসার করে।

গত ৫ মাস আগে সুমন ওরফে তাপস চন্দ্র বিশ্বাস মেয়েটিকে কিছু না বলেই নিজ বাড়িতে চলে আসে। চলতি বছরের ৭ সেপ্টেম্বর গ্রামের বাড়ি এসে সে দ্বিতীয় বিয়েও করে। দ্বিতীয় বিয়ের খবর পেয়ে প্রথম স্ত্রী মিনা তার স্বামীর বাড়িতে আসলে তাকে মানসিক রোগী আখ্যা দিয়ে পুলিশ হেফাজতে পাঠায় সুমন ওরফে তাপস চন্দ্র বিশ্বাসের বাড়ির লোকজন।

স্ত্রীর অধিকারের দাবিতে গত রোববার আবার মিনা আক্তার কেশজানীতে তার স্বামীর বাড়িতে আসে। স্বামীসহ পরিবারের লোকজন তাকে গ্রহণ না করায় সে অনশনে বসে এবং এক পর্যায়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।

অনশনরত মিনা আক্তার জানান, ‘মুসলিম পরিচয়ে আমার সঙ্গে ইসলামি শরীয়ত মাতাবেক সুমন ওরফে তাপস চন্দ্র বিশ্বাসের বিয়ে হয়। দীর্ঘ ৩ বছর সংসার করার পর আমাকে ছেড়ে বাড়িতে এসে সে দ্বিতীয় বিয়ে করেছে। বিয়ের খবর পেয়ে আমি আসলে আমাকে মানসিক রাগী বানিয়ে বিদায় করে দেয়। আমার মা বাবা এই খবর শুনে আমাকে বাবার সংসার থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আমি নিরুপায় হয়ে স্ত্রী স্বীকৃতির দাবিতে এখানে এসেছি। আমাকে স্ত্রীর স্বীকৃতি না দিলে আমি যাব না, আমার লাশ যাবে। সে আমার গর্ভের ২টি সন্তান নষ্ট করছে।’

এদিকে দ্বিতীয় স্ত্রী সান্তা রানীদাস জানায়, ‘সে মুসলিম কিন্তু আমি হিন্দু, আমাদের একবারই বিয়ে হয়। মিনা দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবে। আমাকে আনুষ্ঠানিকভাব বিয়ে করে এনেছে। আমি এখানেই থাকব।’

অন্যদিকে, অভিযুক্ত তাপস চন্দ্র বিশ্বাস বলেব, ‘মিনা আক্তারের সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে যদি বিয়ের কাগজপত্র দেখাতে পারে তাহলে আমি তাকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করব।’

এদিকে, স্থানীয় থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘সোমবার ছেলে এবং মেয়ে উভয়কেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। মেয়েটি লিখিত অভিযাগ দিয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com