করোনা ভাইরাস নিয়ে প্রতিবেদন প্রস্তুত ও প্রচারের দায়ে কারাগারে থাকা চীনা নাগরিক সাংবাদিক ঝ্যাং ঝ্যানকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি, তার বর্তমান স্বাস্থ্যগত অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগও জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস এক সংবাদ সম্মেলনে এ সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা আগেও একাধিকবার বলেছি, আবারও বলছি, তাকে গ্রেপ্তার ও বন্দি করার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের নিয়ম-নীতি মানা হয়নি এবং তার সঙ্গে গুরুতর দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে। তাকে যেন দ্রুত ও নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হয়।’
৩৮ বছর বয়সী নাগরিক সাংবাদিক ঝ্যাং ঝ্যান পেশায় আইনজীবী ছিলেন। ২০২০ সালের প্রথম দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে যখন করোনা সংক্রমণের বিস্তার শুরু হলো, সে সময়, ফেব্রুয়ারি মাসে উহানের করোনা পরিস্থিতি বিষয়ে সরেজমিন প্রতিবেদন প্রস্তুত ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তা প্রচার করেন তিনি। উহানের করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরতে শহরটির বিভিন্ন এলাকা ও হাসপাতালের একাধিক ভিডিওচিত্র প্রতিবেদনে সংযুক্ত করে দিয়েছিলেন ঝ্যাং।
সামাজিক মাধ্যমে ঝ্যাং ঝ্যানের প্রতিবেদন ভাইরাল হয় ও ব্যাপক মাত্রায় গ্রহণযোগ্যতা পায়; কিন্তু সেটিই কাল হয়ে দাঁড়ায় তার জন্য। ঝ্যাংয়ের বিরুদ্ধে ‘বিবাদ সৃষ্টি ও সংঘাতে উসকানি’র অভিযোগ আনে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার এবং ২০২০ সালের মে মাসে তাকে কারাগারে পাঠান চীনের একটি আদালত।
এদিকে আদালতের রায়ের প্রতিবাদে কারাগারে পাঠানোর পর থেকে টানা অনশন শুরু করেন ঝ্যাং। সম্প্রতি জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে অনশনের ফলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি।
কারাগারের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, ঝ্যাং আমরণ অনশন শুরু করেছেন। বর্তমানে তাকে জোর করে টিউবের মাধ্যমে তরল খাবার খাওয়ানো হচ্ছে, কিন্তু তার শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ।
ঝ্যাংয়ের ভাই সম্প্রতি হংকংভিত্তিক একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তারা ঝ্যাংয়ের জন্য মেডিক্যাল প্যারোলের আবেদন করেছেন, কিন্তু আদালত তাতে সম্মত হবেন এমন আশা খুবই ক্ষীণ।