কেউ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। কেউ বা নিউমোনিয়ায়। কিন্তু ‘জলবায়ু পরিবর্তন’ বা ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ’ রোগে কেউ ভুগছেন, এমনটা বিশ্বে এই প্রথম ঘটল। সম্প্রতি কানাডার বাসিন্দা বছর ৭০-এর এক বৃদ্ধাকে চিকিৎসকরা এই রোগে আক্রান্ত বলে চিহ্নিত করেছেন।
চলতি বছরের গোড়ার দিকে কানাডা ও আমেরিকার বিস্তীর্ণ অংশে তাপপ্রবাহ চলছিল। ওই কারণে ওই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ওই নারী। এই অপর্যাপ্ত ও অস্বাভাবিক তাপপ্রবাহের জন্য নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার শিকার হচ্ছেন বহু মানুষ। হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগে প্রতিদিন তাপপ্রবাহের কারণে দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা নিয়ে আসা রোগীদের ভিড় বেড়েই চলেছে। পরিস্থিতি এমনই যে অশনিসঙ্কেত দেখছেন চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ মহল। মানুষের অপরিণামদর্শিতার কারণে বিশ্ব উষ্ণায়ণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনে উল্লেখযোগ্যভাবে রাশ টানা যায়নি। তাপপ্রবাহে অসুস্থ হয়ে দলে দলে রোগীদের ভিড়ে সেটাই প্রমাণিত হচ্ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। সমুদ্রতল ও ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ভয়ানক প্রভাব এখন থেকে সরাসরি মানুষের জীবনে পড়তে চলেছে বলেও মনে করছেন তারা। তাই ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ’-কে একটি রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা সূত্রে জানা গেছে, কানাডার কুটনে লেক হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ কাইল মেরিট ওই বৃদ্ধার শরীরে এই বিশেষ রোগ চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেন, আমরা যতটা ভাবতে পারছি, পরিস্থিতি তার চেয়েও খারাপের দিকে যাচ্ছে। তাপপ্রবাহ নয়, এসব অঞ্চলে দাবানল বেড়ে যাওয়ায় বায়ুমণ্ডলের উপাদানে উল্লেখযোগ্য হেরফের ঘটে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে ক্লাইমেট চেঞ্জই এই ধরনের অসুস্থতার অন্যতম কারণ।
ডাঃ মেরিট আরো জানান, এই পরিস্থিতিতে ৪০ জন চিকিৎসক ও নার্স যৌথভাবে গঠন করেছেন ‘ডক্টর অ্যান্ড নার্সেস ফর প্ল্যানেটরি হেলথ’ নামে একটি সংগঠন। শরীর ও স্বাস্থ্যের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনর প্রভাব সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তোলাই এই সংগঠনের কাজ।
উল্লেখ্য, শুধু ব্রিটিশ কলম্বিয়াতে চলতি বছর তাপপ্রবাহের কারণে ২৩৩ জন মারা গেছে।
সূত্র : বর্তমান