শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:২২ পূর্বাহ্ন

তাইজুলের ঘূর্ণিতে পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে লিড ধরে রাখলো বাংলাদেশ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২১
  • ১২৪ বার

বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ ধসে দিয়েছিলেন পাকিস্তানি পেসার হাসান আলী। আর সফরকারীদের ব্যাটিং লাইনআপ ধসে দিয়েছেন স্বাগতিক স্পিনার তাইজুল ইসলাম। সাগরিকার স্নিগ্ধ সকাল থেকে তপ্ত রোদের দুপুর পর্যন্ত বোলিংয়ে দ্যুতি ছড়িয়েছেন তাইজুল। এই স্পিনারের ঘূর্ণিতে পাকিস্তানকে ২৮৬ রানে আটকে দিয়েছে বাংলাদেশ। আর তাতেই ৪৪ রানের লিড ধরে রাখলো স্বাগতিকরা।

চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে এসে সবকয়টি উইকেট হারিয়ে ৩৩০ রানে থেমেছিল বাংলাদেশ। লিড মোকাবেলায় পাকিস্তানের ওপেনিং জুটিটা দুর্দান্ত হলেও তৃতীয় দিন মাত্র দুই সেশন ব্যাট করতেই দশ উইকেট হারায় সফরকারীরা। পাকিস্তানের সামনে লিড ধরে রেখে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার সুযোগ পাচ্ছে টাইগাররা।

দিনের শুরুতে ব্যাট করতে আসেন আগের দিনের অপরাজিত দুই ওপেনার আবিদ আলী ও আব্দুল্লাহ শফিক। বল হাতে ইনিংসের শুরু করেন তাইজুল ইসলাম। প্রথম বলে এক রান নিয়ে প্রান্ত বদল করেন আবিদ। পরের তিন বল ডট দিয়ে চতুর্থ বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন শফিক। আগের দিনের ফিফটির সঙ্গে কোনো রান যোগ করতে পারেননি তিনি। ১৬৬ বলে দুটি করে চার ও ছয়ে ৫২ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

ক্রিজে আসা নতুন ব্যাটার আজহার আলীকে পরের বলেই ফেরান এই স্পিনার। একই কায়দা আজহারকে গোল্ডেন ডাকে সাজঘরের পথ ধরা তাইজুল। সকালের স্নিগ্ধতায় মুগ্ধতা ছড়িয়ে দেন তাইজুল। চারে ব্যাট করতে আসেন পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম। এই ব্যাটারকে বেশিক্ষণ থিতু হতে দেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। দারুণ এক ডেলিভারিতে অফস্ট্যাম্পের বাইরে থেকে পিচ করে বাবরকে বোল্ড করেন তিনি। ৪৬ বলে ১০ রান করে ফেরেন তিনি।

একপাশে তিন ব্যাটার ফিরলেও কাঙ্খিত সেঞ্চুরির দেখা পান আবিদ। আগের দিন ৯৩ রানে থেকে ইনিংস শেষ করা এই ব্যাটার এইদিন সেঞ্চুরির পাশাপাশি দলকেও টেনে নেন তিনি। ৭৮তম ওভারের তৃতীয় বলে ফাওয়াদ আলমকেও কট বিহাইন্ডে ফেরান তাইজুল। ফাওয়াদের গ্লাভস ছুঁয়ে বল গিয়ে জমা পড়ে লিটনের গ্লাভসে। জোড়ালো আবেদনে সাড়া না মিললে রিভিউ নেয় বাংলাদেশ। তাতেই সফলভাবে এই ব্যাটারকে ফেরায় স্বাগতিকরা। ৩১ বল মোকাবেলা করে ৫ রান করেন তিনি।

ব্যক্তিগত ১১৩ রানের মাথায় আবিদ আলীকে ফেরানোর সুযোগ আসে বাংলাদেশের সামনে। তাইজুলের করা বলটি এই ব্যাটারের ব্যাটের কানায় লেগে লিটন দাসের প্যাড ছুঁয়ে স্লিপে থাকা নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ মিসে বাউন্ডারি হয়ে যায়। অবশ্য লিটনের প্যাডে লাগায় কিছুটা দিক হারিয়ে বলকে ডিফেন্স করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন শান্ত। প্রথম সেশনে আর কোনো উইকেট পায়নি বাংলাদেশ। তবুও ম্যাচের চালকের আসনে ফিরেছে আগেরদিন কোনো উইকেট তুলতে না পারায় তাইজুলরা।

তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে ৩১ ওভার ব্যাট করে চার উইকেট হারিয়ে ৫৮ রান তোলে পাকিস্তান। প্রথম সেশনের শেষ ওভার নতুন বল নেয় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনে এসে নতুন বলে দারুণ শুরু করেন টাইগার পেসাররা। সেশনের শুরুতে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে সাজঘরে ফেরান এবাদত হোসেন। ৯১তম ওভারের প্রথম বলেই লেগ বিফোরে ফেরেন রিজওয়ান। ৩৮ বলে ৫ রান করেন তিনি।

খানিক সময়ের ব্যবধানে ওপেনার আবিদ আলীকে সাজঘরে ফেরান তাইজুল ইসলাম। তিন সেশন একপাশ আগলে রাখা এই ব্যাটারকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন তাইজুল। ২৮২ বলে ১২ বাউন্ডারি ও দুই ছয়ে ১৩৩ রান করেন তিনি। চার উইকেটের সবকয়টিই লেগ বিফোরের সুবাদে পান তাইজুল। নতুন ব্যাটার হাসান আলীকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন এই স্পিনার। ঘূর্ণি বলে হাসানকে জায়গা ছেড়ে বের হতে বাধ্য করে। সুযোগটা কাজে লাগাতে ভোলেননি লিটন।

পাকিস্তান লিড থেকে এখনো ৯০ রান দূরে। এমন মুহূুর্তে ক্রিজে থাকা ব্যাটার ফাহিম আশরাফকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান এবাদত। লেন্থ বল ছিল ব্যাট দিয়ে ডিফেন্স করার চেষ্টা করেন ফাহিম। কিন্তু বল খানিকটা টার্ন করে সরাসরি অফস্টাম্পের মাঝে আঘাতহানে। তাতেই ১৪ রান ঝুলিতে করে ফেরেন এই ব্যাটার।

দলীয় ২৫৭ রানের মাথায় নোমান আলীকে নিজের ষষ্ঠ শিকার বানান তাইজুল। টেস্ট ক্যারিয়ারে এই নিয়ে চারবার প্রতিপক্ষের ছয় উইকেট শিকার করেছেন তিনি। লেগ বিফোরে শিকার হয়ে নোমান ফেরেন ব্যক্তিগত আট রানে। আপিল করলেও আম্পায়ার্স কলে কাটা পড়েন তিনি।

দশম উইকেটের জুটিতে ফাহিমকে দারুণ সঙ্গ দেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। একপাশে রান তোলার চেষ্টা করেন ফাহিম আর অন্যপাশে বাংলাদেশি বোলারদের ডিফেন্স করেন আফ্রিদি। এই যুগলের ২৯ রানের জুটিতে আঘাতহানেন তাইজুল। লিটনের ক্যাচে ফাহিমকে (৩৮ রান) নিজের সপ্তম শিকার বানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com