রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন

বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক, ইউরোপেও ঢুকে পড়েছে ওমিক্রন

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২১
  • ২৫৬ বার

সৌদি আরব থেকে নেদারল্যান্ডস, ব্রিটেন, সিঙ্গাপুর… তড়িঘড়ি দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে বহু দেশ। এমনকি, আফ্রিকার দক্ষিণাংশের সব দেশের জন্যই দরজা বন্ধ করেছে অনেকে। তাদের বক্তব্য, যত দিন এ ভাবে ঠেকানো যায়! যদিও শেষরক্ষা হলো না। ইউরোপে ঢুকে পড়েছে করোনার নতুন স্ট্রেন ওমিক্রন। কাল বেলজিয়ামে ধরা পড়েছে। আজ ব্রিটেনে দু’জনের শরীরে মিলল এই স্ট্রেন। জার্মানিতেও স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, ওমিক্রন ঢুকে পড়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ফেরত এক পর্যটকের শরীরে স্ট্রেনটি পাওয়া গেছে।

প্রায় সব দেশেই আফ্রিকা ফেরতদের কড়া স্ক্রিনিং শুরু হয়েছে। সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়লেই কোয়রান্টিনে পাঠানো হচ্ছে। অন্য দিকে, বিজ্ঞানীরা দ্রুত স্ট্রেনটিকে ‘ডিকোড’ করার চেষ্টায় রয়েছেন। আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা, বিশ্বের সব প্রান্তের বিজ্ঞানীরা জোরকদমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করে দিয়েছেন। সর্বপ্রথম খতিয়ে দেখা হচ্ছে, যারা টিকা নিয়েছেন, তাদের শরীরে কেমন আচরণ করছে ওমিক্রন। কিংবা যারা আগে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রেই বা এর আক্রমণাত্মক রূপ কতটা। বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও বিষয়টিতে নজর রাখছে। নতুন স্ট্রেনটি কতটা সংক্রামক, কতটা মারণ ক্ষমতা তার, এ সব জানা জরুরি। সকলেরই চিন্তা, ফের যদি মৃত্যু-স্রোত বয়ে যায় বিশ্বে। ইতিমধ্যেই ৫২ লাখের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন করোনায়। তবে সমাধান মিলতে অন্তত কয়েক সপ্তাহ লাগবেই। এ কথা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-ও।

এ পর্যন্ত যা জানা গেছে, কোনো এক এইচআইভি/এড্‌স আক্রান্তের করোনা-সংক্রমণে তার শরীরে সার্স-কোভ-২-এর এই নতুন স্ট্রেনটি তৈরি হয়েছে। স্ট্রেনটির বিশেষত্ব হলো, এটির মধ্যে কমপক্ষে ৫০টি মিউটেশন ঘটেছে। যার মধ্যে ৩০টির বেশি মিউটেশন ঘটেছে ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনে। এই স্পাইক প্রোটিনের সাহায্যেই ভাইরাস মানবকোষে প্রবেশ করে। টিকার কাজ মূলত স্পাইক প্রোটিনটির সংক্রমণ ক্ষমতা ধ্বংস করা। ফলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, স্পাইক প্রোটিনের ভোলবদলে ওমিক্রন বা বি.১.১.৫২৯ আরো বেশি সংক্রামক হয়ে ওঠেছে! এবং টিকার কার্যকারিতাকেও রুখে দিতে পারে স্ট্রেনটি। সেই জন্যই তড়িঘড়ি স্ট্রেনটিকে সব চেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ, অর্থাৎ ‘ভেরিয়েন্ট অব কনসার্ন’ তালিকায় জুড়েছে হু।

প্রাথমিকভাবে গবেষক মহলে কিছুটা মতানৈক্য আছে। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ওয়েন্ডি বার্কলে বলেছেন, ‘যে ভাবে একগুচ্ছ মিউটেশন ঘটেছে এই স্ট্রেনে, তাতে এটুকু স্পষ্ট, এটি খুব সহজে ছড়াতে পারে। গত দেড়-দু’বছরে আমরা যা শিখেছি, জেনেছি, তা একসাথে করে এর থেকে উদ্ধার পাওয়ার পথ খুঁজতে হবে।’ দক্ষিণ আফ্রিকার পরিস্থিতি বিচার করলেও স্ট্রেনটির মারাত্মক সংক্রমণ ক্ষমতা রয়েছে বলেই ধরা যায়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজিস্ট শ্যারন পিকক বলেন, ‘দিনে দিনে দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছিল সংক্রমণ। কারণ খুঁজতে গিয়েই বিষয়টি সামনে এসেছে।’ উল্লেখ্য, গত বুধবার, দক্ষিণ আফ্রিকায় যত সংক্রমণ ঘটেছে, তার ৯০ শতাংশের জন্য দায়ী ওমিক্রন।

করোনা এই স্ট্রেনটিকে গ্রিক বর্ণমালার ৭০তম অক্ষর ওমিক্রনের নামানুসারে চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। নামকরণের সময়ে সচেতন ভাবে এনইউ (Nu) এবং এক্সআই (Xi) অক্ষর দু’টিকে এড়িয়ে গেছে তারা। হু-এর একটি সূত্রের দাবি, ইংরেজি শব্দ ‘নিউ’-এর সাথে মিল থাকায় বিভ্রাট এড়াতে ‘এনইউ’ বাদ রাখা হয়েছে। চীনা প্রেসিডেন্টের মতো অনেক চীনার নামে ‘এক্সআই’ থাকে। ফলে এই অক্ষরটি একটি বিশেষ দেশকে চিহ্নিত করতে পারে। সে জন্য এটিও বাদ রাখা হয়েছে।

সূত্র : আনন্দবাজার

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com