করোনাভাইরাসের ‘সুপার ভ্যারিয়েন্ট’ শনাক্তের বিষয়টি নতুন করে বিশ্ববাসীর উদ্বেগ বাড়াবে, এটাই স্বাভাবিক। জানা গেছে, আফ্রিকার মরুপ্রধান দেশ বতসোয়ানায় এটি প্রথম শনাক্ত হয়। পরে দক্ষিণ আফ্রিকা ও হংকংয়েও এ ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। এ নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশে করোনার এ নতুন ধরন নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং নতুন করে লকডাউনের ঘোষণাও দিয়েছে কোনো কোনো দেশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার নতুন এ ধরনটি ডেল্টার চেয়েও ভয়ংকর। এ ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে টিকা কতটা কার্যকর, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে, দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গসহ দেশটির বিভিন্ন এলাকায় এ ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে। জানা গেছে, নতুন এ ভ্যারিয়েন্টের একাধিকবার মিউটেশন হয়েছে, যা খুবই বিপজ্জনক। বস্তুত করোনাভাইরাসের মিউটেশনের বিষয়টি বহুল আলোচিত, যা নিয়ে বিশ্ববাসী বহুদিন ধরেই উদ্বিগ্ন। নতুন যে ভ্যারিয়েন্টই শনাক্ত হচ্ছে, সেটারই সংক্রমণ ক্ষমতা আগের ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে বেশি। মহামারির ইতি টানার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে এসব ভ্যারিয়েন্ট। নতুন এ ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে টিকার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিলে এর সমাধান খুঁজতে হবে জরুরি ভিত্তিতে।
দেশে টিকা কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে টিকা নেওয়ার বিষয়ে মানুষের মধ্যে আগ্রহ লক্ষ করা গেছে। এটি ইতিবাচক। যে টিকাগুলো আবিষ্কৃত হয়েছে, সেগুলো নতুন ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কতটা কার্যকর, এ বিষয়ে গবেষণায় গুরুত্ব আরও বাড়াতে হবে। দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরও পুরোপুরি করোনার শঙ্কামুক্ত হওয়ার বিষয়ে সংশয়ের বিষয়টি আগেও বারবার আলোচনায় এসেছে। করোনার বিরুদ্ধে শতভাগ সুরক্ষা পেতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে গুরুত্ব বাড়াতে হবে। সারা বিশ্বের, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশের স্বল্প আয়ের মানুষ যখন করোনার ক্ষতি কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল, তখন অতিমাত্রায় সংক্রমণশীল নতুন ভ্যারিয়েন্টের আঘাতে তারা আবার দিশেহারা হতে পারে। কাজেই এ ব্যাপারে দেশের সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোয় নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে দ্রুত আমাদের করণীয় নির্ধারণ করতে হবে। পাশাপাশি দেশের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষকেও করোনার টিকার আওতায় আনতে হবে। টিকা তৈরির ক্ষেত্রে আমাদের দেশের গবেষকরা অনেকদূর এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। দেশের আগ্রহী ও সক্ষম প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে সফলভাবে টিকা উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে, সে জন্য সরকারি সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে।