সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:০১ অপরাহ্ন

লবণাক্ততা ও জলমগ্নতা সহিষ্ণু ধানের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ১০১ বার

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো লবণাক্ততা ও জলমগ্নতা সহিষ্ণু ধানের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন করেছে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বিজ্ঞানীরা। আজ বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে এই জিনোম উন্মোচন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

এর ফলে আলোক শক্তি (রেডিয়েশন) ব্যবহার করে লবণাক্ত সহিষ্ণু ও বন্যা সহিষ্ণু ধানের আবহাওয়া উপযোগী জাত উন্নয়ন, চালের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ পরিবর্তন, পোকামাকড় প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। এতে দেশে লবণাক্ততার কারণে পতিত জমি আবাদের আওতায় আসবে।

কৃষিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এই আবিষ্কারের ফলে কৃষকের উৎপাদন ও আয় বাড়বে। আমাদের ধানের ঘাটতি পূরণ হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আকষ্মিক বন্যা ও লবণাক্ততা প্রতিনিয়ত বেড়ে যাওয়ায় ধান চাষ ব্যাহত হচ্ছে। এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কার্যকরী উপায় হচ্ছে লবণাক্ততা ও জলমগ্নতা সহিষ্ণু ধানের উন্নত জাত উদ্ভাবন।

এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলামের নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী প্রায় এক দশক ধরে কাজ করে চলেছেন। এরই ধারাবাহিকতায়, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) থেকে সংগৃহীত ধানের বিভিন্ন অ্যাডভান্স লাইন থেকে নানাবিধ গবেষণার মাধ্যমে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট লবণাক্ততা ও জলমগ্নতা সহিষ্ণু ব্রিডিং লাইন আরসি-২৫১ শনাক্ত করে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিনা এ ধানকে একদিকে বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলাসমূহের আকষ্মিক বন্যাপ্রবণ এলাকার জন্য জাত হিসেবে (বিনাধান-২৩) ছাড়করণের লক্ষ্যে নানামুখী গবেষণা পরিচালনা করেছে, অন্যদিকে পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার করে আরোপিত মিউটেশনের মাধ্যমে এ ধানের কৌলিতাত্ত্বিক উন্নয়নের চেষ্টা করছে। এ গবেষণায় বিভিন্ন মাত্রার গামা রেডিয়েশন প্রয়োগ করে অর্ধলক্ষাধিক মিউট্যান্ট সৃষ্টি করে তা থেকে নানামুখী পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে M6 জেনারেশনে তিনটি উন্নত মিউট্যান্ট শনাক্ত করা হয়েছে। প্রাপ্ত মিউট্যান্টগুলো প্যারেন্ট অপেক্ষা উন্নত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন, লবণাক্ততা এবং ১৫ দিন জলমগ্নতা সহিষ্ণু। বিনা তার প্রতিষ্ঠার সূচনালগ্ন থেকেই আরোপিত মিউটেশনের মাধ্যমে ফসলের নানা জাত উদ্ভাবন করেছে। এ সমস্ত গবেষণায় আরোপিত মিউটেশনের প্রভাবে ফসলের ফেনোটাইপের কাঙ্খিত পরিবর্তন দেখে উন্নত জাত শনাক্ত করা হতো। কিন্তু জিনোমের কোথায় ডিএনএ বিন্যাসের পরিবর্তনের জন্য এমন কাঙ্খিত বৈশিষ্ট্য সৃষ্টি হলো তার ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব হতো না। এ লক্ষ্যে ২০১৯ সালে এই গবেষণায় প্যারেন্ট ও নির্বাচিত তিনটি মিউট্যান্ট ধানের জিনোম সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন হয়, যা বাংলাদেশে প্রথম।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (বাকৃবি) অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান, বিনার ডিজি ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো. বখতিয়ার, ব্রির ডিজি শাহজাহান কবীর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com