সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:০০ পূর্বাহ্ন

কক্সবাজারে পর্যটককে ধর্ষণ : পুলিশ বলছে আসামিরা ‘পূর্বপরিচিতি’

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ১১৪ বার

কক্সবাজারে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে পর্যটককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে যে মামলা হয়েছে, তা তদন্ত করতে গিয়ে নানা রকমের তথ্য সামনে আসছে। পুলিশ বলছে, মামলার মূল আসামি আশিক তাদের পূর্বপরিচিত। তা ছাড়া গত বুধবার সকালে নয়, স্বামী-সন্তানসহ ওই নারী কক্সবাজার এসেছেন প্রায় তিন মাস আগে। তারা কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেলে ছিলেন।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, ওই নারী গত বুধবার সকালে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজার বেড়াতে আসেন। তারা ওঠেন শহরের হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে। সেখান থেকে বিকেলে যান সৈকতের লাবণী পয়েন্টে। সেখানে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কাধাক্কি হয়। সন্ধ্যার পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে কয়েক যুবক তার আট মাসের সন্তান ও স্বামীকে তুলে নিয়ে যায়। আর তিন যুবক আরেকটি অটোরিকশায় ওই নারীকে তুলে নিয়ে গলফ মাঠের পেছনের নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর ওই নারীকে নেওয়া হয় হোটেল-মোটেল জোনের ‘জিয়া গেস্ট ইন’ নামের একটি হোটেলে। সেখানে তাকে ঘটনা কাউকে না জানানোর হুমকি দেওয়া হয়। এর পর হোটেলকক্ষের দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে দুর্বৃত্তরা চলে যায়।

মামলায় আশিক, বাবু, ইসরাফিল ইসলাম জয়া ও রিয়াজ উদ্দিন ছোটনসহ সাতজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ যেসব তথ্য পেয়েছে, সেগুলো অনেক ক্ষেত্রেই এজাহারের সঙ্গে মিলছে না। অভিযোগকারী নারী ও তার স্বামীকে পৃথক জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ অনেক ‘গুরুত্বপূর্ণ’ তথ্য পেয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান জানিয়েছেন, দু-একদিনের মধ্যেই বিষয়টি পরিষ্কার করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ‘ধর্ষণের শিকার হওয়া নারী ও তার স্বামীকে পৃথকভাবে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তাদের কাছ থেকে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে, যেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ওই নারী তিন মাস ধরে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। তারা অনেক হোটেলে ছিলেন। কী কারণে এসব হোটেলে ছিলেন, কক্সবাজারে তাদের আগমনের কারণ, ব্যয়বহুল একটি শহরে কীভাবে কাটিয়েছেন, তাদের সঙ্গে কার কার যোগাযোগ ছিল- এসব বিষয় সামনে রেখে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’

জিল্লুর রহমান আরও বলেন, ‘কক্সবাজার সদর আদালতে ওই নারীর জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। যেহেতু ওই নারী ও তার স্বামীর নিরাপত্তার বিষয় রয়েছে, সে কারণে দুজনকে আমাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে। ওই নারী কক্সবাজার সদর মডেল থানায় আরও দুবার অভিযোগ করেছেন গত ৩ মাসে।’

স্থানীয় চায়ের দোকানের মালিক ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘আশিক এক নারীকে নিয়ে ২২ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে আমার এখানে আসেন। এর পর ওই নারীকে দিয়ে তার স্বামীকে ফোন করান। সে সময় ওই নারী তার স্বামীকে মুঠোফোনে বলেন, ‘তুমি নাকি আশিক ভাইয়ের সাথে বেয়াদবি করেছ। তুমি এখানে আসো। আমি আছি, আশিক ভাই তোমাকে কিছু করবে না।’ পরে ওই নারীর স্বামী একটি বাচ্চাকে নিয়ে আমার দোকানে আসে। এর পর আশিক কিছুক্ষণ এখানে অবস্থান করেন। তার পর ওই নারীকে মোটরসাইকেলে নিয়ে চলে যান।’ তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আশিক আমার দোকানের খানিকটা দূরে এক কিশোরকে ছুরির ভয় দেখিয়ে টাকাপয়সা লুট করে নেয়।’

অভিযোগকারী নারী বলেন, ‘আশিক সেখানে আমাকে ধর্ষণ না করলেও তার বন্ধুরা ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে আমাকে ধর্ষণ করে। পরে আমার স্বামী ও সন্তানকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে আমাকে মোটরসাইকেলে করে জিয়া গেস্ট ইনে নিয়ে আসে। মোটরসাইকেল আশিক চালাচ্ছিল; আর কেউ ছিল না।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com