সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন

শেষ গোসল ছাড়াই জানাজা দিয়ে ২৭ লাশ দাফন

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২১
  • ১৩৩ বার

রাজধানী ঢাকা থেকে বরগুনাগামী প্রায় পাঁচ শতাধিক যাত্রী নিয়ে ছেড়ে আসা লঞ্চ এমভি অভিযান-১০-এ ইঞ্জিনরুম থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় গণকবর তৈরি করে শনাক্তহীন ২৭ লাশের শেষ গোসল ছাড়াই দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

মারা যাওয়াদের মধ্যে ৩৩টি লাশ ঝালকাঠি থেকে বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান গ্রহণ করেন। ওই ৩৩টি লাশের মধ্যে ইতোমধ্যে ৬টি লাশ শনাক্ত করে আত্মীয়ের কাছে হস্তান্তর করে জেলা প্রশাসন। গতকাল শুক্রবার রাত সোয়া ১১টায় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছায় এই ৩৩ লাশ। প্রতিটি লাশের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে বরগুনা সদর থানায়।

এর মধ্যে সদরের ৯ নং এম বালিয়াতলীর বশির আহমেদ স্বপনের স্ত্রী জাহানারা (৪৫), ২নং গৌরিচন্না ইউনিয়নের খাজুরতলা গ্রামের রফিকুল ইসলামের দুই মেয়ে লামিয়া আক্তার (৪) ও সামিয়া আক্তার (৪)। তবে রফিকুলের স্ত্রী শিমু আক্তার নিখোঁজ রয়েছেন। পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী গ্রামের মোস্তফার মেয়ে সাহিদা (১৫), একই উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের ঘুটাবাছা গ্রামের নাসরুল্লাহর মেয়ে তাবাসসুম (৩) ও ৮ নং বরগুনা সদর ইউনিয়নের ঢালুয়া গ্রামের বেল্লালের স্ত্রী মনোরা (৫০)।

বাকি ২৫টি কফিনে ২৭টি লাশের দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয়। যার মধ্যে ২টি কফিনে মায়ের সাথে সন্তানকে কবরস্থ করা হয়।

তবে ৩৩টি লাশ ছাড়াও ঝালকাঠি থেকে স্বজনরা চারটি ও বরগুনা থেকে রাতে তিনটি লাশ শনাক্ত করে ইতোমধ্যে নিয়ে এসেছেন। এরা বামনা, বেতাগী ও পাথরঘাটার বাসিন্দা। অগ্নিদগ্ধে মৃত্যুবরণকারী প্রত্যেককে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা ও আহতদের সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।

শনিবার সকালে ৩০টি লাশের বেলা ১১টায় সার্কিট হাউজ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে নামাজে জানাজা শেষে ১টি ও আগে ২টি লাশ নিয়েছেন স্বজনরা। পরে জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় পোটকাখালী গণকবর তৈরি করে শনাক্তহীন ২৭ লাশের শেষ গোসল ছাড়াই দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।

জানাজা শেষে পোটকাখালী জাতীয় কবরস্থানে তিন সারিতে বিশেষ মর্যাদায় এদের দাফন করা হয়। সার্কিট হাউজ থেকে পোটকাখালী কবরস্থানে নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার দুই প্রান্তে দাঁড়িয়ে শেষবারের মতো বরগুনার মানুষ সমবেদনা জানান।

এই প্রথমবারের মতো গণ জানাজার ইমামতি করেন বরগুনা কালেক্টর (ডিসি কোর্ট) জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মুফতি জাহিদুল ইসলাম।

ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। যার মোবাইল ফোন নম্বর (০১৭১৬৭০০১৭০)। শনাক্ত ব্যতীত যে লাশগুলো দাফন করা হয়েছে, প্রতিটি লাশের ডিএনএ রাখা হয়। পরবর্তীতে যোগাযোগকৃত আত্মীয়-স্বজনের ডিএনএ’র সাথে মৃত ব্যক্তির ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে লাশের কবর চিহ্নিত করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে বরগুনাগামী ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের গাবখান চ্যানেলের কাছে সুগন্ধা নদীর মাঝখানে এ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে লঞ্চটি।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com