নবম কাউন্সিলে জাতীয় পার্টিতে একটি নতুন পদ সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। ওই পদের নাম হলো ‘চিফ প্যাট্রন’। আর এই পদ দেয়া হচ্ছে দলটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদকে। শনিবার জাপার নবম কাউন্সিলে রওশন এরশাদকে এই পদ দেয়া হবে।
আজ শুক্রবার দুপুরে জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্যদের বৈঠক শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা এই তথ্য জানান।
জাপা মহাসচিব বলেন, ‘এবারের সম্মেলনে মূল আকর্ষণ- এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদকে ‘চিফ প্যাট্রন’ নির্বাচিত করা হচ্ছে।। দলে তার সম্মান থাকবে সর্বোচ্চ। মিটিং বা সাধারণ সভাসহ সবখানেই তার এই সম্মান থাকবে।’
বর্তমানে রওশন এরশাদ জাপার ‘সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
‘সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান’ ও ‘চিফ প্যাট্রন’ পদের মধ্যে মর্যাদার ভারসাম্য কীভাবে রক্ষা করা হবে- জানতে চাইলে রাঙ্গা বলেন, ‘দলের সব ক্ষেত্রে রওশন এরশাদের অবস্থান দলের চেয়ারম্যানের ওপরে থাকবে। এটি চেয়ারম্যান জি এম কাদেরই বলেছেন।’
চেয়ারম্যানের কাছে দলের সর্বোচ্চ ক্ষমতা থাকবে উল্লেখ করে রাঙ্গা বলেন, ‘যত মিটিং হবে, তিনি তাতে সভাপতিত্ব করবেন। তবে, রওশন এরশাদ যতদিন জীবিত থাকবেন, ততদিন তিনিই ‘চিফ প্যাট্রন’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।’
জাপার গঠনতন্ত্রের ২০/ক উপধারায় দলের চেয়ারম্যানকে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী করা হয়েছে। সেই ধারা সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন জি এম কাদের। তবে আজকের সংবাদ সম্মেলনে রাঙ্গা বলেন, ‘নবম কাউন্সিলে সংশোধন হচ্ছে না। গঠনতন্ত্রের ২০/ক উপধারা প্রয়োগের আগে চেয়ারম্যান দলের কো-চেয়ারম্যান ও প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
জাপা কোনো একক ব্যক্তির সিদ্ধান্তে চলে না বলে মন্তব্য করে রাঙ্গা বলেন, ‘এখন থেকে দলের সিদ্ধান্ত এককভাবে কেউ দেবেন না। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দলের কো-চেয়ারম্যান মিলে সিদ্ধান্ত দেবেন। চেয়ারম্যানও এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে চান না।’
রওশনের নতুন পদ সৃষ্টি হলে দলের চেয়ারম্যানের সাথে দ্বন্দ্ব আরো বাড়বে কিনা- জানতে চাইলে জাপা মহাসচিব বলেন, ‘এটি নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। কোনো বিরোধ তৈরি হবে না। চিফ প্যাট্রন, চেয়ারম্যান ও মহাসচিব মিলে যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
পার্টির গঠনতন্ত্রে আরো অনেক ধারায় পরিবর্তন আসতে পারে জানিয়ে রাঙ্গা বলেন, ‘প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সভায় দলের নেতারা পরিবর্তনের দাবি এনেছেন। পরে পরিবর্তন, সংযোজন, পরিবর্ধনের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে চেয়ারম্যানকে। জাপায় এখন ৪১ জন প্রেসিডিয়াম সদস্য রয়েছেন। বৈঠকে এই সংখ্যা কমিয়ে আনার পক্ষে মত এসেছে।’
প্রেসিডিয়ামে সদস্য সংখ্যা কমবে না বাড়বে সেই সিদ্ধান্ত দলের নবম কাউন্সিলের পর নেয়া হবে উল্লেখ করে রাঙ্গা বলেন, ‘কাউন্সিলে ‘চার-পাঁচজনকে’ দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও কো-চেয়ারম্যান পদে আনা হতে পারে।’
জাপার কাউন্সিলর ও ডেলিগেটদের মৌখিক ভোটে চেয়ারম্যান, কো-চেয়ারম্যান, মহাসচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে নেতা নির্বাচন করা হবে বলেও জানান রাঙ্গা।