বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:১৬ পূর্বাহ্ন

ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা : ভিজিএফের চাল পাননি ২৬৮ জেলে

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০২২
  • ১১২ বার

প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ মাছ ধরার নিষিদ্ধ সময়ের তিন মাস পার হয়েছে। কিন্তু ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞাকালীন এই সময়ে জেলেদের মানবিক সহায়তায় ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় বরাদ্দ এক মাসের চাল পাননি দুই শ’ ৬৮ জন জেলে।

পটুয়াখালী মির্জাগঞ্জের কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে।

গত বছর ২০ অক্টোবর জেলেদের মধ্যে চাল বিতরণের কথা থাকলেও বরাদ্দের ওই চাল ইউনিয়ন পরিষদের গুদাম ঘরে পড়ে আছে। চাল বিতরণ নিয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলমের সাথে স্থানীয় জেলেরা একাধিকবার বৈঠক হলেও চাল বিতরণ করা হয়নি।

সরকার ঘোষিত ইলিশ ধরা থেকে বিরত থাকা জেলেদের জন্য বরাদ্ধ এক মাসের ভিজিএফের পাঁচ টন ৩৬০ কেজি চাল এখনও পাননি ওই ইউনিয়নের দুই শ’ ৬৮ জন জেলে। এরইমধ্যে করোনার মহামারী পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

কয়েকজন জেলে জানান, তালিকাভুক্ত জেলেদের ভিজিএফের চাল দেওয়ার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের খামখেয়ালিপনার কারনে তারা এখনও চাল পাননি।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিস সুত্রে জানা যায়, প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ আহরনের নিষিদ্ধ সময়ে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় জেলেদের গত বছর ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিলো। এই সময় ইলিশ ধরা থেকে বিরত থাকা প্রতিটি পরিবারকে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ভিজিএফের মাধ্যমে প্রতি মাসে জেলেদের ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করার কথা।

এই লক্ষ্যে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে এক হাজার ৬২৮ জেলে পরিবারের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। উপজেলার সকল ইউনিয়নের চাল বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়নে এক মাসের চাল বিতরণ না করায় গুদামে পড়ে আছে।

জানা যায়, উপজেলায় মোট জেলের সংখ্যা এক হাজার ৯১৪ জন। ভিজিএফের তালিকাভুক্ত রয়েছে এক হাজার ৬২৮ জন।

মির্জাগঞ্জ উপজেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সাধারন সম্পাদক মো. আলী আকাব্বর মিয়া বলেন, সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে জেলেরা নদীতে ইলিশ প্রজনন মৌসুমে মাছ আহরণ করেনি। অথচ সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলমের সাথে একাধিকবার আলাপ করা সত্ত্বেও তিনি চাল বিতরন করেনি। চাল না পাওয়া তারা পরিবার নিয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের কারনে ঘর থেকে বের হতে পারিনা, এখন ঘরে চাল নেই, অথচ আমাদের বরাদ্ধের এক মাসের চাল গোডাউনে পরে আছে।’

কাকড়াবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞায় মানবিক সহায়তায় ভিজিএফ কর্মসূচির আওতাধীন দুই শ’ ৬৮ জন জেলের চাল ইউনিয়ন পরিষদের গুদামে পড়ে রয়েছে।

কাককড়াবুনিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মাহাবুব আলম স্বপন বলেন, ‘আমি জেলেদের তালিকা এখনও হাতে পাইনি। প্রকৃত জেলেদের নাম বাছাই করে চাল বিতরণ করা হবে।’

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানকে বারবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও তিনি চাল বিতরণ করেননি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. তানিয়া ফেরদৌস বলেন, ‘ইলিশ প্রজনন মৌসুমে জেলেদের চাল এখনও বিতরন করা হয়নি, এটা আসলে দুঃখজনক। বর্তমান চেয়ারম্যান বলেছেন জেলেদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। দুই একদিনের মধ্যে চাল বিতরণ করা হবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com