যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকধারীর গুলিতে বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনার তিন দিন পরও কোনো ঘাতককে গ্রেফতার করতে পারেনি স্থানীয় পুলিশ। এখনো হত্যার কারণ উদঘাটন করতে পারেনি তারা। এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার জুমার নামাজের পর নিউইয়র্কের ওজোন পার্ক এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
সমাবেশে তারা অবিলম্বে মোদাচ্ছের খন্দকার (৩৬) হত্যার কারণ উদঘাটন করে হত্যাকারীকে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। বাংলাদেশিদের ক্ষোভ ও দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন মূলধারার রাজনীতিকরাও। হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের আশ্বাস দেন তারা।
ওজোন পার্কের গ্লেনমোর এভিনিউয়ের কাছে ফরবেল স্ট্রিটে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে নিজ বাড়ির সামনেই বন্দুকধারীর গুলিতে গুরুতর আহত হন মোদাচ্ছের। পরে জ্যামাইকা হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত মোদাচ্ছের নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি বিমানন্দরে কাজ করতেন। তার বাড়ি বাংলাদেশের মানিকগঞ্জে। তিনি মা, স্ত্রী ও পাঁচ বছরের এক ছেলেসহ নিউইয়র্কের ওজোন পার্ক এলাকায় বাস করতেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার ওজোন পার্কের আল-আমান জামে মসজিদের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রবাসী বাংলাদেশি ছাড়াও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, পুলিশ কর্মকর্তা, সামাজিক সংগঠনের সদস্য, সমাজকর্মী এবং বিভিন্ন ধর্মের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে উপস্থিত হয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, খুনিদের আটকে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, তারা যেন ন্যায়বিচার পান, সেজন্য পুলিশের পক্ষে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। খুনিদের বিষয়ে তথ্য দেওয়ার জন্য সাড়ে তিন হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
খায়রুল ইসলাম খোকনের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে কমিউনিটি নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন বোরহান উদ্দিন কফিল, কবির চৌধুরী, মিসবাহ আবদীন, মোহাম্মদ খান, হেলাল শেখ, ওয়ালিউর রহমান প্রমুখ। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা নিউইয়র্ক স্টেট ডেপুটি প্রেসিডেন্ট ডায়ানা রিচার্ডসন, এসেম্বলি মেম্বার জেনিফার রাজকুমার, ডিস্ট্রিক্ট ৩৭’র কাউন্সিল ওম্যান স্যান্ডি নার্স, ডিস্ট্রিক্ট ৩২’র কাউন্সিল ওম্যান জোয়ান আরিওলা, ডিস্ট্রিক্ট ৩৯’র কাউন্সিল ওম্যান শাহানা হানিফ, এনওয়াইয়পিডি’র ব্রুকলিন নর্থের কমান্ডিং অফিসার জুডিথ হ্যারিসন, ডেপুটি ইন্সপেক্টর রোহান গ্রিফিথ প্রমুখ।
বক্তব্য দেন মুদাচ্ছের খন্দকারের ছোট ভাই অনিক খন্দকার। এ সময় মুদাচ্ছেরের শিশুপুত্র লাবিব খন্দকারও উপস্থিত ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের তিন দিন হলেও পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেফতার করতে না পারায় হতাশা প্রকাশ করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। আল আমান জামে মসজিদের ভাইস প্রেসিডেন্ট কবির চৌধুরী বলেন, খুনিদের ধরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া না গেলে, তারা ভবিষ্যতে আরও দুঃসাহস দেখাবে। তাই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই।