ভাষার মাস এই ফেব্রুয়ারীতেই অমর একুশে শহীদ দিবস অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে জ্যামাইকায় উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ‘লিটল বাংলাদেশ এভিনিউ’। নিউইয়র্ক সিটির এই সিদ্ধান্তের মধ্যদিয়ে সিটিতে বাংলা ভাষা, বাংলাদেশ আর প্রবাসী বাংলাদেশীদের মান-মর্যাদা, স্বীকৃতি আরো এক ধাপ এগিয়ে গেলো। স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশীদের দীর্ঘ দিনের দাবীর মুখে অবশেষে সিটি প্রশাসন হিলসাইড এভিনিউ থেকে হোমলন এভিনিউ পর্যন্ত ‘লিটল বাংলাদেশ এভিনিউ’ নামকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিউইয়র্ক সিটির পাচ বরোর মধ্যে কুইন্সের জ্যামাইকা অন্যতম। যদিও অপর দুই বরো ব্রুকলীন ও ব্রঙ্কসেও বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশীর বসবাস। ব্রঙ্কসে ইতিমধ্যেই একটি সড়কের নাম ‘বাংলা বাজার’ নামকরণ করা হয়েছে। অনুরূপ প্রক্রিয়া চলছে ব্রুকলীনেও। তবে কুইন্সের জ্যামাইকার হিলসাইড এভিনিউর সাতফিন থেকে শুরু করে কুইন্স ভিলেজ সহ আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশীর বসবাস চোখে পড়ার মতো। হিলসাইড এভিনিউ তো রীতিমতো বাংলাদেশীদের দখলে।
জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ‘লিটল বাংলাদেশ এভিনিউ’ সংক্রান্ত বিলটি পাস হয়। এই বিল পাশে স্থানীয় কাউন্সিলম্যান জিম এফ জিনারোর উদ্যোগ ও ভূমিকা অনস্বীকার্য। একাধিক কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ ইউএনএ প্রতিনিধিকে জানান, বাংলাদেশ বা দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের নামে জ্যামাইকায় একটি রাস্তার নামকরণ হোক। সেই দাবীর লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় কাউন্সিলম্যান জিম এফ জিনারোর মাধ্যমে কুইন্স বরো হল ও সিটি প্রশাসনের কাছে বিভিন্ন পর্যায়ে লবিং চলছিলো। সূত্র জানায়, এজন্য একটি মহল থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর নামে এবং অপর একটি মহল বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরোত্তম-এর নামে একটি রাস্তার নামকরনের দাবী উঠেছিলো। এই দুই মহলের বাইরে অপর একটি মহল ‘বাংলাদেশ’ নামে রাস্তার নামকরণের দাবী করেন যাতে কোন রাজনৈতিক বিভেদ সৃষ্টি না হয়। পরিশেষে ‘লিটন বাংলদেশ এভিনিউ’ নামকরণ চুড়ান্তকরণ করা হয় সিটি হলে। এজন্য সিটি হলেও পাস হওয়া বিলের নম্বর হচ্ছে- আইএনটি ২৪৭৭-২০২১। সিটি কাউন্সিলে বিলটি উত্থাপন করেন স্থানীয় কাউন্সিল ডিষ্ট্রিক্ট-২৪ এর কাউন্সিলম্যান জিম এফ জিনারো।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে সিটির ১৯৯টি রাস্তার নাম বিশিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও দেশের নামে রি-নেমিং করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের মধ্যে ‘লিটল বাংলাদেশ এভিনিউ’ রয়েছে।
এদিকে ‘লিটল বাংলাদেশ এভিনিউ’ রি-নেমিং অনুষ্ঠান সফল করতে গত ১৪ ফেব্রুয়ারী সোমবার সন্ধ্যায় জ্যামাইকার হিলসাইড এভিনিউস্থ একটি রেষ্টুরেন্টে স্থানীয় কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ এক সভায় মিলিত হন। সভায় ২১ ফেব্রুয়ারী ‘লিটল বাংলাদেশ এভিনিউ’ উদ্বোধন উপলক্ষ্যে বিস্তারিত আলোচনা সহ অনুষ্ঠানটি সফল করতে সকলেই ঐক্যমতে উপনিত হয়ে সকল মহলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন বলে জানা গেছে। সভায় মোহাম্মদ আলী, রেজাউল করিম চৌধুরী, ড. দিলিপ নাথ, সাইফুল ইসলাম, ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, সৈয়দ রাব্বী, মোহাম্মদ তুহিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।