কথা ছিল মে মাসের ৬ তারিখে বিয়ে করবেন ইয়ারয়না আরেইভা ও তার প্রেমিক সভিয়াতোস্লাভ ফারসিন। তার পর অনুষ্ঠান হবে নদীর ধারে একটা রেস্তোরাঁয়। ২১ বছর বয়সী আরেইভার স্বপ্ন ছিল, সময়টা হবে অন্যরকম, সে, তার কাছের মানুষগুলো, নদী আর সুন্দর লাইটিং। বিয়ে নিয়ে এভাবেই স্বপ্ন দেখেছিলেন এ তরুণী। কিন্তু রাশিয়া হামলা শুরু করলে হুট করে তাদের এ সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
আরেইভা বলেন, ‘সময়টা তো কঠিন হয়ে গেল। আমাদের দেশের জন্য লড়তে হবে। আমরা হয়তো মারা যাব, কিন্তু মৃত্যুর আগে আমরা একে অপরকে পেতে চেয়েছিলাম।’ ২৪ বছর বয়সী ফারসিন পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তারা এখন স্থানীয় টেরিটোরিয়াল ডিফেন্স সেন্টারে যোগ দেবেন, দেশের সুরক্ষায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।
আরেইভার ভাষায়, ‘দেশটাকে আমাদের বাঁচাতেই হবে। আমরা যে মাটিতে থাকি সেই মাটিকে রক্ষা করতে হবে। যে মানুষদের ভালোবাসি তাদের বাঁচাতে হবে। খারাপ কিছু যেন না হয়, সেটাই চাই। কিন্তু দেশটাতে বাঁচাতে আমাকে যে কোনো কিছু করতে হতে পারে। আরেইভা এখনো জানেন না তাদের কী কাজ করতে দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, হতে পারে আমাদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হবে, আর আমরা লড়ব। হতে পারে আমরা অন্য কোনোভাবে সাহায্য করব। এ সিদ্ধান্ত তারা নেবে।
সদ্য বিয়ে করা স্বামীকে নিজের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে মনে করেন আরেইভা। এখন হয়তো হলো না, কিন্তু একদিন বিয়ের অনুষ্ঠান হবে, আরেইভার চোখে এখনো সেই স্বপ্ন স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘হতে পারে তারা (রাশিয়া) আমাদের দেশ থেকে চলে যাবে, আর তার পর সব কিছু আবার আগের মতো হয়ে যাবে। আমি চাই, সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাক, আমাদের দেশ আমাদেরই থাকুক। রুশরা না থাকলে আমরা ভালো থাকব, সুখে থাকব।’
এ বিয়ে সম্পর্কে কিয়েভের সিটি কাউন্সিলের ডেপুটি আরেইভা বলছেন, ‘খুবই ভয় লাগছিল, অথচ এটা আমার জীবনের সবচেয়ে সুখের মুহূর্ত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু কানে তখন সাইরেনের শব্দ আসছে।’