বৈশ্বিক মহামারী করোনার দুই বছরে দেশের অর্থনীতির গতি প্রথম দিকে বাধাগ্রস্ত হলেও ধীরে ধীরে তা সামলে ওঠার অন্তহীন চেষ্টা চলে। সেই চেষ্টার ধারাবাহিকতায় দেশ এখন অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই সব খাতে আতঙ্ক ও চাপ বাড়তে থাকে। করোনা নিয়ন্ত্রণে দফায় দফায় লকডাউন ও বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। এতে স্থবির হয়ে পড়ে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকা- ও জনজীবন।
প্রথম, দ্বিতীয় এবং সর্বশেষ তৃতীয় ঢেউ সামলে করোনা এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। জীবন ও জীবিকার তাগিদে আবার কাজে ফিরেছেন সবাই। চালু হয়েছে শিল্পকারখানা ও ব্যবসাবাণিজ্য এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কলকারখানাসহ সব ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকা-স্থল খুলে দেওয়ায় বেড়েছে রপ্তানি আয় ও রপ্তানি আদেশ, প্রাণ ফিরে পেয়েছে পর্যটনকেন্দ্রগুলো। খরা কাটতে শুরু করেছে বিনিয়োগেও। স্থবিরতা কাটিয়ে পণ্য ও সেবা খাতে ব্যবসা বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, অর্থনীতি গতিশীল রাখতে সরকারের প্রণোদনা ঘোষণা ছিল সময়োপযোগী পদক্ষেপ। যদিও ছোটদের কাছে এ সুবিধা সেভাবে পৌঁছায়নি বলে বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে। সরকারের প্রণোদনার অর্থ ও নীতিসহায়তা এবং লকডাউন উঠে যাওয়ায় দেশের সার্বিক অর্থনীতি আবার ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় অর্থনীতিকে আরও চাঙ্গা করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী বোর্ড সম্প্রতি বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের আর্টিকেল ফোর কনসালটিং পর্যবেক্ষণ শেষে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে। মূলত রপ্তানি পুনরুদ্ধার, কোভিড মোকাবিলায় প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন ও সময়োপযোগী মুদ্রানীতি নেওয়ার কারণে এমন প্রবৃদ্ধি হবে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি।
করোনাকালে দেশের অর্থনীতি খাদে পড়লেও সেখান থেকে বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে। সরকারি তথ্যে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ‘ভি-শেপ’ অগ্রগতি হলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিভিন্ন সূচকে পুনরুদ্ধারের ধারাবাহিক অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। তবে সরকারের তথ্যে অগ্রগতি অনেকখানি বলা হলেও সামষ্টিকভাবে এ অগ্রগতি ততটা নয়।
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলার পর দেশের আনুষ্ঠানিক খাত উৎপাদনে ফিরতে পারলেও অনানুষ্ঠানিক খাতগুলো পুরোদমে তা পারেনি। গবেষণায় দেখা গেছে, করোনায় যারা কর্মহীন হয়েছিলেন, তারা আবার কাজে ফিরছে। কিন্তু তাদের আয় আগের মতো নেই; কমে গেছে। অনেক নারী তাদের কর্মে ফিরতে পারেনি। মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী গতি পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তুলেছে। যদিও সরকারি হিসাব বলছে মাথাপিছু আয় বেড়েছে। কিন্তু আয়ে বৈষম্য অনেক। এ বৈষম্য দূর করতে হবে। মূল্যস্ফীতিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
সরকারের প্রণোদনা ও আর্থিক সহায়তাও একটা বড় ভূমিকা রেখেছে, তবে সেখানেও সবাই সমানভাবে সুবিধা পায়নি। সেখানেও বৈষম্য দেখা গেছে উল্লেখ করে জাহিদ হোসেন বলেন, ছোটদের কাছে সহায়তা সেভাবে পৌঁছাতে পারলে পুনরুদ্ধার আরও জোরদার হতো। করোনাকালে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় অন্যতম বড় ভূমিকা রেখেছে। এদিকেও নজর দিতে হবে।
করোনার মধ্যেই সদ্যসমাপ্ত ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে বড় রেকর্ড হয়। গেল অর্থবছরে প্রবাসীরা প্রায় ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রা দেশে পাঠিয়েছেন, যা এক অর্থবছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে এযাবৎকালের সর্বোচ্চ। এটি ২০১৯-২০ অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ শতাংশ বেশি। যদিও চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রেমিট্যান্স কমার পেছনে করোনা পরিস্থিতির উন্নতিও অন্যতম কারণ। পাশাপাশি হুন্ডির পরিমাণও বাড়ছে।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ৩ হাজার ৩৮৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছেন দেশের উদ্যোক্তারা। এই আয় ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩০ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেশি। শুধু ফেব্রুয়ারিতে ৪২৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এই আয় গত বছরের ফেব্রুয়ারির চেয়ে ৩৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেশি। করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনে পণ্য রপ্তানি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। গত জানুয়ারিতে রপ্তানি হয়েছে ৪৮৫ কোটি ডলারের বা ৪১ হাজার ৭১০ কোটি টাকার পণ্য, যা গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে ৪১ দশমিক ১৩ শতাংশ বেশি। এক মাসে এটি ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রপ্তানি। তার আগের মাসে অর্থাৎ ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪৯০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। চলতি অর্থবছরের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৪ হাজার ৩৫০ কোটি ডলার। গত অর্থবছর আয় হয়েছিল ৩ হাজার ৮৭৫ কোটি ডলার।
পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা জানান, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো এখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। তাই সেসব দেশের ক্রেতা প্রতিষ্ঠান আগামী গ্রীষ্ম ও বসন্ত মৌসুমের জন্য করোনার আগের মতো ক্রয় আদেশ দিচ্ছে। তা ছাড়া মিয়ানমারে সেনাশাসন ও ভারতে করোনার ভয়াবহতার কারণেও কিছু ক্রয়াদেশ বাংলাদেশে স্থানান্তর করা হচ্ছে। বড়দিনকে কেন্দ্র করেও প্রচুর ক্রয়াদেশ আসছে। তার আগেই চীন থেকে কিছু ক্রয়াদেশ বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে স্থানান্তর করেন ইউরোপ-আমেরিকার ক্রেতারা। তবে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী আমাদের সময়কে বলেন, করোনা মোকাবিলায় সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়ায় আমাদের অর্থনীতি গতিশীল রয়েছে। আমাদের রপ্তানি বেড়েছে। রপ্তানি খাতে সরকারকে আরও নজর দিতে হবে। অর্থনীতির এ গতিধারা অব্যাহত থাকলে আমরা কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে পারব বলে আশা করছি।
বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীরা জানান, সরকারের দেওয়া প্রণোদনা ঋণ বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করছে। তবে প্রণোদনার ঋণে বিভিন্ন খাতের বড় শিল্প গ্রুপের অনেকে ছন্দে ফিরলেও কারও কারও বিরুদ্ধে স্বল্প সুদের এ অর্থ ভিন্ন কাজে ব্যয়ের অভিযোগও রয়েছে।
প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের পাশাপাশি সরকারের সময়োপযোগী নানা পদক্ষেপে দেশের অর্থনীতি কোভিড ১৯-এর অভিঘাত কাটিয়ে পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় ফিরেছে। সরকারের নীতিসহায়তায় এবং বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় অর্থনৈতিক অবস্থা ধীরে ধীরে উন্নত হচ্ছে। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) পর্যালোচনায় এসব কথা বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক অক্টোবর-ডিসেম্বরে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলো সন্তোষজনক অবস্থায় ছিল। করোনার মধ্যেও আমদানি ও রপ্তানি দুই খাতই অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। শক্তিশালী রপ্তানি আয় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে সহজতর করেছে। রপ্তানিমুখী পোশাক, চামড়া এবং দেশি শিল্প ইস্পাত, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও পরিবহন খাতে পুরোদমে কার্যক্রম চলছে।
করোনা মহামারীর ক্ষতি মোকাবিলায় সরকার ২৮টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। সব মিলিয়ে এসব প্যাকেজে অর্থের পরিমাণ ১ লাখ ৩১ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ লাখ ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকার ৯টি প্যাকেজের বাস্তবায়ন হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোই কেবল এ ঋণ পাচ্ছে। প্রণোদনার ঋণ নিয়ে বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো অনেকটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর আমাদের সময়কে বলেন, ‘লজিস্টিক সাপোর্ট ভালো থাকায় বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলো করোনার মধ্যেও তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তারা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে টাকা দিয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান ছোট হওয়ার কারণে রাজস্ব কম দেয়, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেশি। ফলে রাজস্ব আহরণ তথ্য হেলদি দেখাচ্ছে।’
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, কোডিভ-১৯ মহামারীর মধ্যেও ভালো করেছে দেশের পণ্য ও সেবা খাতের প্রায় সব বৃহৎ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) রাজস্ব আদায়ে প্রায় সাড়ে ১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে এনবিআর। অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ১ লাখ ৪৩ হাজার ২৯০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৬ হাজার ২০৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৮৮ শতাংশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে এনবিআর। ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে লক্ষ্যমাত্রার ৮৩ দশমিক ২৮ শতাংশ অর্জন করেছিল প্রতিষ্ঠানটি।
এনবিআরের পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ছয় মাসে রাজস্ব আহরণের প্রধান তিন খাত আয়কর, ভ্যাট ও আমদানি-রপ্তানি শুল্ক কোনো খাতেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়নি, বরং রাজস্ব আদায়ের সবচেয়ে বড় খাত ভ্যাট বা মূসকে সাড়ে ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও রাজস্ব আহরণে পিছিয়ে আছে ৫ হাজার ৮৯৪ কোটি টাকার বেশি। তবে বেশি পিছিয়ে আছে আমদানি ও রপ্তানি শুল্কে। এ খাতে সাড়ে ১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ঘাটতি ৭ হাজার ৯৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। সবচেয়ে কম ঘাটতি হয়েছে আয়কর খাতে। এ খাতে ঘাটতি প্রায় ৪ হাজার ৯১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলালউদ্দিন আমাদের সময়কে বলেন, ‘অর্থনৈতিক কর্মকা- শুরু হয়েছে। ব্যবসাবাণিজ্যের স্থানগুলো আবার ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। মানুষ কাজ করছে। তবে মানুষের মনে অজানা একটা আতঙ্ক তো রয়েছেই। যদিও সেটা আগের তুলনায় অনেকটা কম। শিল্প খাতের উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক রয়ে গেছে। বিক্রি তেমনভাবে শুরু না হলেও সবকিছু খুলে গেছে। এটি ইতিবাচক। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। বিক্রি না থাকলেও মানুষ আসতে শুরু করেছে। সুযোগ পেলে ঘুরে দাঁড়াবে অর্থনীতি।’
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি হলেও, সামনে তিনটি ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ)। এগুলো হলো- করোনার অনিশ্চিত গতিপথ, টিকাদানের নিম্নহার ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁঁকি। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ এবং উচ্চমধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য শক্তিশালী সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি, আধুনিক নীতিকাঠামো ও বাস্তবায়নের ওপর জোর দিতে বলেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। আইএমএফ বলেছে, চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৬ দশমিক ১ শতাংশ পর্যন্ত উঠতে পারে।
অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জগুলোর কথা জানিয়ে অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, সামষ্টিক মূল্যস্ফীতি আমাদের দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে, আর্থিক খাতের চ্যালেঞ্জও আরও গভীর হয়েছে, খেলাপি ঋণের অঙ্কও বড় হচ্ছে, মুদ্রা বিনিময় হারে চাপ রয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা রয়েছে- এগুলোই এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সের দিকেও আমাদের নজর রাখতে হবে।
আইএমএফ বলছে, করোনার সংক্রমণের গতি বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংক খাতের ঝুঁকি আরও বেড়ে গেছে। তাই ব্যাংক খাতের তদারকি শক্তিশালী করার পাশাপাশি করপোরেট সুশাসন উন্নত করার তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি। ব্যাংক খাতে বিশেষ করে সরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের লাগাম টেনে ধরতে আইনি সংস্কারের পরামর্শও দিয়েছে আইএমএফ। এ ছাড়া শেয়ারবাজারের উন্নয়নের সুপারিশও করা হয়েছে। অন্যদিকে বেসরকারি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সুশাসন ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করার তাগিদও দেওয়া হয়েছে।