মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪৪ অপরাহ্ন

সভাপতি হলেন কোটি টাকা চাঁদার মামলার আসামি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১১ মার্চ, ২০২২
  • ১০৭ বার

দীর্ঘ ২১ বছরের আহ্বায়ক কমিটির পর চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। গত বুধবার মধ্যরাতে ঘোষিত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ দুই পদই পেয়েছেন প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারীরা।

সভাপতি হয়েছেন দেবাশীষ নাথ দেবু। তার বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় কোটি টাকা চাঁদাবাজির একটি মামলা চলছে। ২০১৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি ওই মামলায় গ্রেপ্তারও হন। মামলার বাদী বন্ধন নাথ এজাহারে উল্লেখ করেছিলেন, দাবিকৃত চাঁদার ৭০ লাখ টাকা পরিশোধের পরও ৩০ লাখ টাকা না দেওয়ায় তার ঘাড়ে গুলি করা হয়েছে। দেবাশীষ নাথ আমাদের সময়কে বলেন, ওটা ছিল একটা ভুল-বোঝাবুঝি। তিন মাস আগে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম বিষয়টি মীমাংসা করার দায়িত্ব নিয়েছেন।

১০১ সদস্যের কমিটির মধ্যে বুধবার মধ্যরাতে কেন্দ্র থেকে ২০ সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়। তাতে সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবু আর সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান। এ দুটিসহ ৬টি পদ পেয়েছেন নওফেলের অনুসারীরা। নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারীদের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতিসহ ৮টি পদে রাখা হয়েছে। সাবেক মন্ত্রী ও

সংসদ সদস্য ডা. আফছারুল আমীনের অনুসারী হয়েছেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক। নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের অনুসারী একজন হয়েছেন সাংগঠনিক সম্পাদক।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন, সহসভাপতি আবুল হাসনাত মো. বেলাল, তসলিম উদ্দিন, সুজিত দাস, দেলোয়ার হোসেন ফরহাদ, মনোয়ার জাহান মনি, নাজমুল হুদা শিপন, আজিজ মিছির, আজাদ খান অভি, আবদুর রশিদ লোকমান ও মিনহাজুল আবেদীন চৌধুরী সায়েম। জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক- মো. সাইফুদ্দিন, আবদুল্লাহ আল মামুন ও সরফরাজ নেওয়াজ চৌধুরী রবিন। সাংগঠনিক সম্পাদক- মাসুদ খান, মো. সালাহউদ্দিন ও দেবাশীষ আচার্য্য। প্রচার সম্পাদক হলেন তাসাদ্দেক নুর চৌধুরী তপু।

কমিটিতে স্থান পাওয়া একাধিক নেতার বিরুদ্ধে আগ্রাবাদসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে ফুটপাত দখল করে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধের অভিযোগ আছে। তবে কমিটির একাধিক নেতা বলেছেন, দীর্ঘদিন পর কমিটি হওয়ায় প্রকৃত মূল্যায়ন অনেকের ক্ষেত্রে না-ও হতে পারে। এটি সবাইকে মেনে নিতে হবে। জানা যায়, এর আগে নওফেল গ্রুপ থেকে আবুল হাসনাত মো. বেলাল এবং আ জ ম নাছির গ্রুপ থেকে হেলাল উদ্দিনের নাম আলোচিত হয়েছিল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। হেলাল উদ্দিনের বড় ভাই নগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু। তিনি নওফেলের অনুসারী।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতা আমাদের সময়কে বলেন, এই কমিটি নগর আওয়ামী লীগের জন্যও একটি বার্তা। কেন্দ্র নিজেদের পছন্দ-অপছন্দের একটি ইঙ্গিতও দিয়েছে কমিটির প্রধান দুই পদে নেতা বেছে নেওয়ার মাধ্যমে। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ধরে এবিএম মহিউদ্দিন ও আ জ ম নাছিরের অনুসারীদের মধ্যে বিভক্ত হয়ে আছে। এর বাইরে আফছারুল আমীন ও আবদুচ ছালাম মিলে একটি ধারার নেতৃত্ব দেন। এ নিয়ে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের রাজনীতির জটিল সমীকরণের প্রচ্ছন্ন ছাপ পড়েছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটিতে।

কেবল স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রধান দুই পদেই নয়, নগর যুবলীগ ও ছাত্রলীগের শীর্ষ পদগুলোও নওফেলের অনুসারীদের দখলে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com