বাংলাদেশে নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ে অস্থিরতার ঘটনা বেশ পুরনো। বিশেষ করে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু থেকেই একের পর এক পেঁয়াজ, চাল, তেল, ডিম, সবজি, কাঁচামরিচসহ প্রায় সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামই বেড়েছে। করোনা ভাইরাস প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে এলেও নিত্যপণ্যের দাম কোনোভাবেই যেন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। অথচ বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার প্রতিবছর নানারকম অঙ্গীকার-প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। কিন্তু বরাবরই দেখা গেছে, বাজারের নাটাই থাকে অশুভ চক্রের হাতে। কয়েক সপ্তাহ ধরে ভোজ্যতেলের মূল্যে কোনোভাবেই লাগাম টানা যাচ্ছে না। বিশেষ করে গত সাত দিনে বেড়েছে ১০টি নিত্যপণ্যের দাম। গত বৃহস্পতিবার সরকারের কয়েকটি দপ্তর নড়েচড়ে বসে। সেটা লোক দেখানোই হোক কিংবা জনস্বার্থেই হোক। সরকারের এ সিদ্ধান্ত অবশ্যই ইতিবাচক। কিন্তু এর সুবিধা সাধারণ জনগণ পাব তো? নাকি বরাবরের মতো ব্যবসায়ীরাই সুবিধা ভোগ করবেন। এর আগেও সরকার বিভিন্ন পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছে। কিন্তু আমরা সুবিধা পাইনি। যদিও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। কিছুদিন আগেও আরেক দফায় লিটারপ্রতি ১২ টাকা দাম বাড়ানোর জোর চেষ্টা চালিয়েছেন তারা। কিন্তু সরকার ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব নাকচ করে দিলে বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দেয়। ফলে ভোজ্যতেলের জন্য মানুষের হাহাকার দেখা যায়। এতে ধনী, দরিদ্র নির্বিশেষে এ দেশের সব মানুষই অবশ্য প্রয়োজনীয় এ খাদ্যপণ্যটির অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিতে ক্ষুব্ধ ভোক্তারা। সিন্ডিকেট তথা মুষ্টিমেয় ব্যবসায়ীচক্র বাজার একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। এদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কেন? বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে নিত্যপণ্যের দাম দিন দিন বাড়তেই থাকবে। দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের স্বাভাবিক সরবরাহ, ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে। এবং সরকারের নির্দেশ উপেক্ষা করেই বেশি দামে পণ্য বিক্রি হয়েছে। বিশেষ করে ভোক্তারা যাতে ভ্যাট প্রত্যাহারের সুবিধাটা পান, তা নিশ্চিত করতে হবে। সরকার তথা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এ ক্ষেত্রে কঠোর মনোভাব নিয়ে অগ্রসর হতে হবে বাজার মনিটরিং ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে। প্রয়োজনে টিসিবিকে দিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করে বাজার স্থিতিশীল রাখতে হবে।