আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ তাশাহহুদে উপনীতে হয়, তখন যেন সে চারটি বিষয় থেকে আল্লাহর আশ্রয় কামনা করে। সে বলবে, হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে আশ্রয় কামনা করছি জাহান্নামের শাস্তি থেকে, কবরের শাস্তি থেকে, জীবন ও মৃত্যুর ফেতনা থেকে এবং দাজ্জালের ফেতনার ভয়াবহতা থেকে। ’ (রিয়াজুস সালেহিন, হাদিস : ১৪২৩)
আল্লাহর রাসুল (সা.) এসব বিষয় থেকে শুধু অন্যকে আশ্রয় কামনা করতে বলেননি; বরং নিজেও আল্লাহর কাছে আশ্রয় কামনা করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) দোয়া করতেন—‘হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে আশ্রয় কামনা করছি কবরের শাস্তি থেকে, জাহান্নামের শাস্তি থেকে, জীবন ও মৃত্যুর ফেতনা থেকে এবং দাজ্জালের ফেতনা থেকে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৩৭৭)
কবরের শাস্তি : হাদিসে সর্বপ্রথম কবরের শাস্তি থেকে আশ্রয় চাওয়া হয়েছে। কেননা কবরই হলো পরকালের প্রথম স্তর। যে ব্যক্তি কবরের শাস্তি থেকে মুক্তি পাবে, পরকালের পরবর্তী স্তরগুলো তার জন্য সহজ হবে। আর কবরে শাস্তি পাওয়ার অর্থ হলো ব্যক্তির জন্য সামনে হয়তো আরো কঠিন সময় আসছে।
জাহান্নামের শাস্তি : রাসুলুল্লাহ (সা.) জাহান্নামের শাস্তি থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় কামনা করেছেন। জাহান্নাম হলো পরকালের যে শাস্তি মহান আল্লাহ তার অবাধ্য ও পাপী বান্দাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন। পরকালের এই শাস্তির ভয়াবহতা মানুষের কল্পনার অতীত। তাই পূর্ববর্তী সব বুজুর্গ, সাহাবায়ে কেরাম (রা.), এমনকি নবী-রাসুলগণ (আ.) পর্যন্ত জাহান্নামের শাস্তি থেকে আল্লাহর কাছে মুক্তি কামনা করেছেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর অনুগ্রহে জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে সে সেই জান্নাতে প্রবেশ করবে। এটাই মানবজীবনের চূড়ান্ত সাফল্য।
জীবন-মৃত্যুর ফেতনা : এর দ্বারা উদ্দেশ্য পার্থিব জীবনের বিপদ-আপদ ও পরীক্ষাগুলো। এমন বিষয় যা মানুষকে ইহকাল ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত করে। যেমন কুফর, শিরক, প্রবৃত্তিপূজা, পাপাচার, অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু ইত্যাদি।
দাজ্জালের ফেতনা : কিয়ামতের পূর্বে দাজ্জাল পৃথিবীতে আত্মপ্রকাশ করবে এবং পৃথিবী এক ভয়াবহ ফেতনায় আক্রান্ত হবে। তার কারণে বিপুলসংখ্যক মানুষ ঈমানহারা হবে। দাজ্জালের ফেতনা কিয়ামতের বড় বড় ফেতনাগুলোর অন্যতম। দাজ্জাল অস্বাভাবিক ক্ষমতার অধিকারী হবে। যেমন মৃতকে জীবিত করা, সবুজ ভূমিকে বিরান ভূমিতে পরিণত করা, পৃথিবীর ধনভাণ্ডার উন্মুক্ত করা ইত্যাদি।