সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:১৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

যুদ্ধাপরাধে ফেঁসে যাবেন ট্রাম্প!

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২০
  • ২৭৯ বার

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে ভাষায় ইরানের সাংস্কৃতিক স্থাপনাকেও হামলার টার্গেট করা হতে পারে বলে হুমকি দিয়েছেন, তাকে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে তুলনা করেছেন অনেক মার্কিন রাজনীতিক এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন।

এই হুমকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রথমে দিয়েছিলেন গত শনিবার। তিনি বলেছিলেন, ইরান যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আঘাত হানলে পাল্টা জবাব দেয়ার জন্য ইরানের ৫২টি টার্গেট বাছাই করে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র, যার মধ্যে অনেক সাংস্কৃতিক স্থাপনাও আছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই হুমকি দিয়েছিলেন ইরান তাদের শীর্ষস্থানীয় জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যার কঠোর প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা দেয়ার পর।

রোববার আবারও এই হুমকির পুনরাবৃত্তি করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার পক্ষে যুক্তি দেয়ার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, ‘যদি ওরা মার্কিন নাগরিকদের হত্যা করে, নির্যাতন করে, রাস্তার ধারে বোমা মেরে মার্কিনিদের উড়িয়ে দেয়, তাহলে আমরা কেন ওদের সাংস্কৃতিক স্থাপনায় হামলা চালাতে পারবো না?”

তার এই কথার সমালোচনা শুধু আন্তর্জাতিকভাবেই নয়, স্বদেশেও হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ একে সরাসরি যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে তুলনা করেছে। তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি এই কাজ করেন, সেটা হবে যুদ্ধাপরাধের সামিল।

যুদ্ধ সম্পর্কিত যে জেনেভা কনভেনশন, তার ৫৩ ধারার কথা উল্লেখ করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক স্থাপনায় হামলা, এতে একেবারেই নিষিদ্ধ।

যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্রেট দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা, সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন, যিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মনোনয়নপ্রার্থী, তিনিও মন্তব্য করেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আসলে যুদ্ধাপরাধ করার হুমকি দিচ্ছেন।

আর সবচেয়ে কঠোর জবাব এসেছে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জারিফের কাছ থেকে। তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হুমকিকে ইসলামিক স্টেট যেভাবে মধ্যপ্রাচ্যের সাংস্কৃতিক স্থাপনা ধ্বংসের চেষ্টা করেছিল, তার সঙ্গে তুলনা করেছেন।

তিনি বলেছেন, “হাজার বছর ধরে যে বর্বররা এসে ইরানের নগরীগুলো ধ্বংস করেছে, সভ্যতা ধ্বংস করেছে, পাঠাগার পুড়িয়ে দিয়েছে, তারা এখন কোথায়? ইরানিরা এখনো দাঁড়িয়ে আছে আরো শক্তিশালী হয়ে।”

যুদ্ধ চেষ্টা থামাতে ডেমোক্রেটদের চেষ্টা
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের বিরুদ্ধে যেসব রণহুংকার দিচ্ছেন, তাতে তিনি কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলতে পারেন, এমন আশংকা তৈরি হয়েছে ডেমোক্রেটদের মধ্যে।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রায় সব নেতাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বেপরোয়া ইরান-নীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন।

জো বাইডেন বলেছেন, জেনারেল সোলেইমানি যত খারাপ লোকই হোক, মনে রাখতে হবে তিনি ইরান সরকারের একজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তি, তাকে হত্যার ফলে ইরান এখন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের হুমকি দিচ্ছে।

সেনেটর চাক শুমার বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র একটি দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে, এমন আশু হুমকি তৈরি হয়েছে।

অন্যদিকে ডেমোক্রেটদের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতা, কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, ইরানের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা সীমিত করতে তিনি হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে প্রস্তাব আনবেন। এর লক্ষ্য হবে ইরানের বিরুদ্ধে যে কোন সামরিক ব্যবস্থা যেন ৩০ দিনের বেশি দীর্ঘ না হয়।

অন্যদিকে দুজন ডেমোক্রেট কংগ্রেস সদস্য এমন বিল আনার ঘোষণা দিয়েছেন, যেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একতরফাভাবে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধই ঘোষণা করতে না পারেন।
সূত্র : বিবিসি

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com