শাহরুখপুত্রের মাদক মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী প্রভাকর সাইল অভিযোগ করেছিলেন, আরিয়ানের খানের বাবা শাহরুখ খানের থেকে ২৫ কোটি টাকা আদায়ের ছক কষেছিল মাদক মামলার অন্যতম সাক্ষী কিরণ গোসাভী। সেই অর্থের একটা অংশ যাওয়ার কথা নার্কোটিক্স কন্ট্রোল বুরোর (এনসিবি) মুম্বাই শাখার জোনাল ডিরেক্টর সমির ওয়াংখেড়ের কাছে। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এনসিবির তরফে ভিজিল্যান্স তদন্ত করা হয়েছিল।
সূত্রের দাবি, সেই রিপোর্টে দেখা গেছে, সাইলের অভিযোগের কোনো সারবত্তা নেই। যদিও পুনর্তদন্তের পরে বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) রিপোর্টে বলা হয়েছে, আরিয়ানকে ফাঁসিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে এর পিছনে কী কারণ, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
ভিজিল্যান্স তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন এনসিবির ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (উত্তরাঞ্চল) জ্ঞানেশ্বর সিংহ। তিনি শিগগিরই এনসিবির ডিরেক্টর জেনারেল এন এস প্রধানের কাছে রিপোর্ট পেশ করবেন। সাইলের অভিযোগের পরেই এস এন প্রধান ভিজিল্যান্স তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ওই তদন্তে দেখা গেছে, গোসাভী ও সমীরের বিরুদ্ধে সাইল যে তোলাবাজির অভিযোগ করেছিলেন, তা ঠিক নয়।
গত এপ্রিলে হৃদরোগে সাইলের মৃত্যু হয়। প্রতারণার একটি মামলায় গোসাভী বর্তমানে পুণেয় জেলবন্দি। সমীরও প্রথম থেকেই তোলাবাজির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
সূত্রের দাবি, ভিজিল্যান্স তদন্তে গোটা বিষয়টিই খতিয়ে দেখা হয়েছে। সেখানে সাইলের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। অন্য দিকে আরিয়ান ঘনিষ্ঠরাও (শাহরুখ, পূজা) তাদের বয়ানে স্পষ্ট জানিয়েছেন, ঘুষ চেয়ে এনসিবির কোনো অফিসার কিংবা অন্য কারো কোনো হুমকি তারা পাননি।
ভিজিল্যান্স তদন্তে সাইল ছাড়াও এনসিবির মুম্বাই শাখার যে অফিসারেরা তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন (সমীর ওয়াংখেড়ে, ভি ভি সিংহ, আশিস রঞ্জন প্রসাদ) তাদের সকলকেই জিজ্ঞাসাবাদ এবং বয়ান রেকর্ড করা হয়।
এদিকে এনসিবি আরিয়ানকে ‘ক্লিনচিট’ দিলেও চার্জশিটে বলা হয়েছে, তিনি মেনে নিয়েছেন অতীতে মাদক সেবন (গাঁজা এবং চরস) করেছেন। তার ফোনের কথোপকথনেও বন্ধুদের সাথে মাদক সেবন করার বিষয়টি উঠে এসেছে।
এনসিবিকে আরিয়ান জানিয়েছেন, আমেরিকায় পড়তে গিয়ে নতুন পরিবেশে একাকীত্বে ভুগছিলেন। আরিয়ানের দাবি, ইন্টারনেটের সূত্রে তিনি জানতে পারেন, ঘুম না এলে গাঁজা খাওয়া যেতে পারে। আরিয়ানের বন্ধু আচিত স্থানীয় এক সরবরাহকারীর থেকে গাঁজা জোগাড় করতেন। অভিনেত্রী অনন্যা পাণ্ডেকেও সেই বিষয়টি জানিয়েছিলেন তিনি। তবে ২ অক্টোবর প্রমোদতরীতে তার সাথে কোনো মাদক ছিল না বলেও জানান আরিয়ান। সেই সংক্রান্ত উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণও পায়নি এনসিবি। তার জেরেই রেহাই পেয়েছেন শাহরুখ তনয় আরিয়ান।
সূত্র : আনন্দবাজার