প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় পূরণকল্পে চিহ্নিত অপরাধীদের সরিয়ে সর্বস্তরের প্রবাসীর সমাগম ঘটানো হবে আসন্ন লেবার ডে উইকেন্ডে (২-৪ সেপ্টেম্বর) ৩৬তম ফোবানা সম্মেলনে। আর এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে ক্যালিফোর্নিয়ার লসএঞ্জেলেস সিটির ম্যারিয়ট বারব্যাকং এয়ারপোর্ট হোটেলের বলরুমে। এ উপলক্ষে কানাডা ও আমেরিকার সকল সামাজিক-সাংস্কৃতিক-পেশাজীবী সংগঠনের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।
শনিবার (২ জুলাই) নিউইয়র্কে ফোবানার নির্বাহী কমিটি এবং লসএঞ্জেলেসের হোস্ট কমিটির যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘মীট এ্যান্ড গ্রীট’ অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান বলেন, কম্যুনিটির ইমেজ বহুজাতিক সমাজে প্রশ্নবিদ্ধ হবে যদি নানাবিধ অপরাধে দণ্ড ভোগকারিদের সঙ্গ ত্যাগ করতে না পারি। প্রবাসে বেড়ে উঠা প্রজন্মও লজ্জাবোধ করেন চিহ্নিত অপরাধীরা ফোবানার মঞ্চে আরোহন করলে।
এসময় ফোবানার সদ্যবিদায়ী চেয়ারম্যান ও বর্তমান কমিটির আউটস্ট্যান্ডিং মেম্বার জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, ইমিগ্রেশনের জালিয়াতির জন্যে ওয়াশিংটনের মোহাম্মদ আলমগীর এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাসরত মাসুদ রব চৌধুরী দীর্ঘ মেয়াদে জেল খেঁটেছেন। দীর্ঘদিন থেকেই এদেরকে ফোবানা থেকে বহিষ্কারের চেষ্টা করা হচ্ছিল। কিন্তু নাম সর্বস্ব সংগঠনের মাধ্যমে এরা নিজেদের দাপট অব্যাহত রেখেছিল। অতিসম্প্রতি আমাদের সেই প্রয়াস সফল হয়েছে এবং আতিকুর রহমানকে চেয়ারম্যান ও ড. রফিক খানকে নির্বাহী সচিব করার মধ্যদিয়ে। তিনি আরও জানান, একইসাথে শিকাগোতে ফোবানার যে সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছিল সেটিও বাতিল করা হয়েছে। কারণ মাত্র ৫০০ আসনবিশিষ্ট একটি মিলনায়তন ভাড়া করা হয়েছিল শিকাগোতে।
সংবাদ সম্মেলনে লস এঞ্জেলেস হোস্ট কমিটির প্রেসিডেন্ট জাহিদ হোসেন জানান, আমরা প্রস্তুতির সময় পেয়েছি মাত্র সোয়া দুই মাস। এরইমধ্যে কয়েক হাজার মানুষের আসনবিশিষ্ট অডিটরিয়াম ভাড়া করা হয়েছে। আশা করছি হাজার দশেক প্রবাসীর সমাগম ঘটবে। কারণ করোনায় জবুথবু কমিউনিটি জেগে উঠার প্রত্যয়ে রয়েছে। সপরিবারে সকলে যোগদানের কথা জানিয়েছেন।
‘আমরা করবো জয়’-স্লোগানে লসএঞ্জেলেস সম্মেলনের হোস্ট কমিটির কোষাধ্যক্ষ দেওয়ান জমির বিশেষভাবে উল্লেখ করে বলেন, অতীতের ভুলভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিয়ে ফোবানা প্রতিষ্ঠার সংকল্পের পরিপূরক কর্মসূচি নেয়া হচ্ছে। প্রবাসের শিল্পীদের প্রাধান্য দেয়া হবে। উন্নয়ন-অভিযাত্রার পরিপূরক সেমিনারে দেশ ও প্রবাসের অভিজ্ঞজনেরা অংশ নেবেন। মার্কিন রাজনীতিকদেরকেও আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।
১৯৮৭ সালে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে ফোবানার অভিযাত্রার কথা স্মরণ করে সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমান কমিটির আউটস্ট্যান্ডিং মেম্বার বেদারুল ইসলাম বাবলা বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্মকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। তাদেরকে বাঙালি সংস্কৃতির সাথে জড়িয়ে রাখতে নানা কর্মসূচি রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমের অকুন্ঠ সমর্থনের প্রশংসা করে চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান বলেন, ফোবানাকে আজকের পর্যায়ে আনতে প্রবাসের গণমাধ্যমের অপরিসীম ভূমিকার কথা কখনো ভুলবো না। সামনের সম্মেলনেও তেমন সহযোগিতা চাচ্ছি। কারণ ফোবানার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কার্যক্রমে ব্যস্ত রয়েছে গণমাধ্যমগুলো।
সংবাদ সম্মেলনের মঞ্চে আরও ছিলেন গত বছর ওয়াশিংটন ডিসিতে ৩৫তম ফোবানার হোস্ট কমিটির সদস্য-সচিব শিব্বির আহমেদ এবং ফোবানার নতুন কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম কলিন্স। এর আগে, শুরুতে বিপুল করতালির মধ্যে নতুন চেয়ারম্যান আতিকুর রহমানকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান নিউইয়র্কের কর্মকর্তারা।