শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৩ পূর্বাহ্ন

দক্ষতা ও মানবিক শিক্ষায় গুরুত্ব

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২০
  • ৩৬১ বার

প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরে অর্থাৎ দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত একযোগে শিক্ষাক্রম পরিমার্জনের যজ্ঞ শুরু হয়েছে। মানবিক ও দক্ষতাকে গুরুত্ব দিয়েই কারিকুলাম প্রণয়ন করছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যক্রমের বই যাবে ২০২১ সালে। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা নেওয়া হবে ২০২৩ সালে আর মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে ২০২৪ সালে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যমান প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাক্রমে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান পাঠ্যপুস্তককেন্দ্রিক এবং মুখস্থনির্ভর। গুরুত্ব অনুসারে বিভিন্ন বিষয়ে সময়ের বণ্টনও যথাযথ নয়। আবার শ্রেণি ও বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতাগুলোতে জ্ঞান, দক্ষতা ও দৃষ্টিভঙ্গির সুষম প্রতিফলন যথাযথ নেই। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যে ধরনের দক্ষতা বা যোগ্যতা শিশুদের অর্জন করা দরকার, তা শিক্ষাক্রমে অপ্রতুল। যেমনÑ তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ধর্মীয় উগ্রবাদ, শিশু নিরাপত্তা ইত্যাদি। শিক্ষাক্রমে উল্লেখ থাকলেও পাঠদান এবং মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় একীভূত শিক্ষার কৌশলের প্রয়োগ দেখতে পাওয়া যায় না। শিক্ষাক্রম প্রণয়ন ও
বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর মাঝে যে আন্তঃপ্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয় থাকা দরকার, তাও যথাযথভাবে নেই।
প্রাথমিক স্তরের নতুন পাঠ্যক্রম নিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, ‘বিদ্যমান কারিকুলামে একটি সমস্য হচ্ছেÑ প্রাথমিকের শিশুরা যখন মাধ্যমিকে যায়, তাদের পাঠ্যক্রম ভিন্ন হয়। এতে লেখাপড়ায় বড় ধাক্কা লাগে। আমরা মূলত প্রাথমিকে পড়াই যোগ্যতাভিত্তিক পাঠ্যক্রম, আর মাধ্যমিকে পড়ানো হয় উদ্দেশ্যভিত্তিক। এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি দুই স্তরের পাঠ্যক্রমে সেতুবন্ধ তৈরির। পাঠ্যক্রম প্রণয়নে এনসিটিবিকে সেভাবেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) প্রফেসর ড. একেএম রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘বিভিন্ন তত্ত্ব, তথ্য, সুপারিশের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা প্রণয়ন করা হচ্ছে। এ জন্য শিক্ষার বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ, চাহিদা নিরূপণ, গবেষণা, পর্যালোচনা, কর্মশালাও হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘নতুন পাঠ্যক্রমে একজন শিক্ষার্থীর মধ্যে যাতে সংহতি, শ্রদ্ধা, শুদ্ধাচার, দেশপ্রেম, সম্প্রীতি, পরমতসহিষ্ণুতা, সামগ্রিকতার মতো মূল্যবোধ তৈরি হয়; সেভাবেই কাজ চলছে। সেই সঙ্গে তার মধ্যে তৈরি হবে পরিশ্রমী, গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, উদ্যোগী, নান্দনিক, দায়িত্বশীল ও মানবিক গুণাবলি। মূল দক্ষতা হবেÑ সূক্ষ্ম চিন্তন, সৃজনশীল চিন্তন, সমস্যার সমাধান, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সহযোগিতা, যোগাযোগ, বিশ্ব নাগরিকত্বে দক্ষতা, জীবিকায়ন, স্বব্যবস্থাপনা ও মৌলিক দক্ষতা।’
শিশুর ‘শিক্ষণ ক্ষেত্র’ তুলে ধরে এ শিক্ষাবিদ বলেন, ‘ভাষা ও যোগাযোগ, গণিত ও যুক্তি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, সমাজ ও বিশ্ব নাগরিকত্ব, জীবন ও জীবিকা, পরিবেশ ও জলবায়ু, মূল্যবোধ ও নৈতিকতা, শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা এবং শিল্প ও সংস্কৃতিতে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এক কথায় নতুন পাঠ্যক্রমের রূপকল্প হচ্ছেÑ এমন একটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তৈরি করা; যারা জাতীয় ইতিহাস ও ঐতিহ্য, মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি ধারণ করে পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিজেকে উৎপাদনমুখী, সুখী ও বৈশ্বিক নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019 bangladeshdailyonline.com
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com