যুক্তরাষ্ট্র গত সোমবার মিয়ানমারের রাজনৈতিক কর্মী ও নির্বাচিত কর্মকর্তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের নিন্দা জানিয়েছে এবং অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধ করতে সামরিক সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বলেন, ‘সব বিকল্পই টেবিলে রয়েছে,’ যার মধ্যে রয়েছে সামরিক জান্তার রাজস্ব বন্ধ করার মতো অর্থনৈতিক পদক্ষেপ। এই রাজস্ব তারা সহিংসতার জন্য ব্যবহার করে চলেছে।
মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি গত বছর এক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখলকারী সরকারের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ চালাতে সহায়তা করার অভিযোগে গণতন্ত্রের পক্ষে সক্রিয়বাদী চারজন কর্মীকে রুদ্ধদ্বার বিচারে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, গণতন্ত্রের ব্যক্তিত্ব কিয়াও মিন ইউ, যিনি কো জিমি নামেই বেশি পরিচিত; সাবেক আইনপ্রণেতা ও হিপ-হপ শিল্পী ফিয়ো জেয়া থাও, যিনি মিয়ানমারের বহিষ্কৃত নেত্রী অং সান সু চির সহযোগী; এবং আরো দুজন, হ্লা মায়ো অং এবং অং থুরা জাউ।
যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের শাসকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, ‘তারা অন্যায়ভাবে যাদের আটক করেছে তাদের মুক্তি দিতে হবে এবং মিয়ানমারের জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র ফেরত আনার ব্যবস্থা করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, সহিংসতার এই নিন্দনীয় কর্মকাণ্ড মানবাধিকার ও আইনের শাসনের প্রতি সরকারের সম্পূর্ণ অবজ্ঞার আরো উদাহরণ।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির বেসামরিক নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করার পর থেকেই মিয়ানমার বেসামরিক অস্থিরতায় জর্জরিত রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, অভ্যুত্থানের পর থেকে জান্তা সরকার ২ হাজার ১০০ জনেরও বেশি লোককে হত্যা করেছে, ৭ লাখেরও বেশি লোককে বাস্তুচ্যুত করেছে। তারা নাগরিক সমাজের সদস্য ও সাংবাদিকদেরও আটক করেছে।
এইরকম শাসনের সাথে স্বাভাবিক কোনো কর্মতত্পরতা চলতে পারে না, পররাষ্ট্র বিভাগের মুখপাত্র নেড প্রাইস সোমবারে এক ব্রিফিং এ বলেন।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান সোমবার এক ব্রিফিংয়ে বলেন, চীন সবসময় অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি মেনে চলে।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের এই ঘটনার অসংখ্য সমালোচকের মধ্যে জাতিসঙ্ঘও রয়েছে।
সূত্র : ভয়েস অফ আমেরিকা