ঘুম আল্লাহ তায়ালার বড় একটি নিয়ামত। আল্লাহ তায়ালা ঘুম দিয়েছেন দিনের পরিশ্রম শেষে শরীরের ক্লান্তি দূর করার জন্য। ঘুমের মাঝেই মানুষ বিভিন্ন স্বপ্ন দেখে। ভালো-মন্দ দু’রকমই। খারাপ স্বপ্ন দেখলে অনেকে ভয়ে আঁতকে ওঠে। ভয় দূর করার জন্য নানান পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। ভালো বা খারাপ স্বপ্ন দেখলে কী করণীয় তা জানার আগে আমাদের জানতে হবে স্বপ্ন কত প্রকার ও কী কী?
স্বপ্ন মূলত তিন প্রকার-
১. ভালো ও সৎ স্বপ্ন : এ স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদস্বরূপ এবং নবুওয়তের ৪৬ ভাগের এক ভাগ। এ সম্পর্কে সহিহ হাদিস আছে।
২. অপছন্দনীয় খারাপ স্বপ্ন : এ স্বপ্ন শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে দেখানো হয়ে থাকে, যাতে এর দ্বারা আদম সন্তান চিন্তিত হয় এবং শয়তান তাকে নিয়ে ঘুমের মধ্যে খেলা করতে পারে।
৩. জাগ্রত অবস্থায় যে বিষয়ে মানুষ নিজে নিজে কথা বলে অথবা চিন্তা করে সে বিষয়টি ঘুমের মধ্যে দেখা।
তৃতীয় প্রকারের স্বপ্নের মাঝে সাধারণত মানুষ তার জাগ্রত অবস্থার কর্মকাণ্ডগুলোই দেখে থাকে। এই হলো তিন প্রকার স্বপ্ন।
ভালো বা মন্দ স্বপ্ন দেখলে স্বপ্নদ্রষ্টার করণীয় কী এ সম্পর্কে সিহাহ সিত্তাসহ অন্যান্য কিতাবেও সহিহ সনদে বর্ণিত একাধিক হাদিস পাওয়া যায়।
হজরত আবু কাতাদা রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমি রাসূল সা:-কে বলতে শুনেছি, ভালো স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে এবং খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। তোমাদের কেউ খারাপ স্বপ্ন দেখলে তার উচিত তার বাম দিকে তিনবার থুথুু মারা। অতঃপর ওই স্বপ্নের খারাবি থেকে আশ্রয় চাওয়া। তাহলে ওই স্বপ্নে তার কোনো ক্ষতি হবে না (আবু দাউদ-৫০২১)।
অপর এক হাদিসে হজরত জাবির থেকে বর্ণিত আছে- রাসূল সা: বলেছেন, কেউ খারাপ স্বপ্ন দেখলে সে যেন তার বাম দিকে তিনবার থুথু নিক্ষেপ করে, মহান আল্লাহর কাছে শয়তান থেকে তিনবার আশ্রয় প্রার্থনা করে এবং পার্শ্ব পরিবর্তন করে ঘুমায় (সুনানে আবু দাউদ-৫০২২)।
উপরিউক্ত দু’টি হাদিসে সুস্পষ্ট বর্ণনা করা হয়েছে, যদি কেউ খারাপ স্বপ্ন দেখে তাহলে প্রথমে তার বাম দিকে তিনবার থুথু নিক্ষেপ করবে। তারপর সেই খারাপ স্বপ্ন থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইবে এবং যে পার্শ্বে শুয়ে ছিল সেই পার্শ্ব পরিবর্তন করে নেবে। আশা করা যায় এতে করে ওই খারাপ স্বপ্নের কারণে কোনো ক্ষতি হবে না।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের স্বপ্নের খারাবি থেকে হিফাজত করুন, আমীন।
লেখক : শিক্ষার্থী-জামিয়া আরাবিয়া মাখজানুল উলুম, ময়মনসিংহ সদর