অন্তর্দ্বন্দ্ব ও অব্যবস্থাপনায় নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বন্ধ হলো মিশিগানে কনস্যুলেট সেবা কার্যক্রম। মিশিগানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের কনস্যুলেট সেবা কার্যক্রমকে ঘিরে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। সারা বছর বিড়ম্বনা পোহানো প্রবাসীদের ৪ দিনের অস্থায়ী কনস্যুলেট সেবাটা ছিলো সোনার হরিণ। কিন্তু নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে এই বছর অস্থায়ী কনস্যুলেট সেবার বদলে প্রবাসীদের পড়তে হয়েছে চরম ভোগান্তিতে।
ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাস গত ১৯ আগস্ট থেকে শুরু করে ২২ আগস্ট পর্যন্ত চার দিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ কনস্যুলেট সেবার আয়োজন করে। তবে প্রথমদিন দূতাবাসের সাময়িক সেবার শৃঙ্খলা থাকলেও দ্বিতীয় দিনে আয়োজকদের কোন্দলের জেরে উত্তেজনা তৈরি হয়। দেখা দেয় আতঙ্ক। কমিউনিটিজুড়ে বিরাজ করে থমথমে পরিবেশ। পরেরদিন ২০ আগস্ট সেবা কার্যক্রম পরিচালিত হলেও বিকেলে দূতাবাস কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করার অভিযোগে কনস্যুলেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। অপ্রীতিকর এ ঘটনায় বিপুল সংখ্যক প্রবাসী সেবা নেওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ায় মিশিগানের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে সেবা নিতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পরে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকরা কারণ জানতে চাইলে ভ্রাম্যমাণ কনস্যুলেট ক্যাম্পের স্থানীয় আয়োজকরা তুচ্ছ ঘটনা বলে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
দূতাবাসের প্রথম সচিব (পাসপোর্ট ও ভিসা) আবদুল হাই মিল্টন বলেন, ‘চলতি মাসের শুরুর দিকে ভ্রাম্যমাণ কনস্যুলেট সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা থাকলেও দ্বন্দ্বের কারণে আয়োজন করতে আমাদের কিছুটা বেগ পেতে হয়। পরে চার সংগঠনের আটজনকে সমন্বয় করে আমরা অস্থায়ী কনস্যুলেট সেবা কার্যক্রম শুরু করি।’
এ দিকে ঘটনার জেরে দূতাবাস কর্মকর্তাদের নিরাপত্তাজনিত কারণে ঘোষণা ছাড়াই চতুর্থ দিনের কনস্যুলেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কাউকে না জানিয়ে এভাবে সেবা বন্ধ করে চলে যাওয়া ও আয়োজক কমিটির কেউ সার্ভিস বন্ধের ব্যাপারে কোনো ঘোষণা না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রবাসীরা।
এ ব্যাপারে দূতাবাসের প্রথম সচিব (পাসপোর্ট ও ভিসা) মুহাম্মদ আবদুল হাই মিল্টনের সঙ্গে বার বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও উনি ফোন রিসিভ করেননি।
এদিকে গত সোমবার সন্ধ্যায় কনস্যুলেট ক্যাম্পের আয়োজক কমিটির সদস্যরা সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তারা জানান, গত শনিবার বহিরাগত কিছু লোক সার্ভিস বন্ধের জন্য চেষ্টা করে। দেন এ ঘটনার জন্য কারা দায়ী প্রকাশ্য কারো নাম বলেননি।
এছাড়া মিশিগান স্থায়ী কন্স্যুলেট অফিসের উদ্যোগে গত শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলেন আয়োজন করে আয়োজকরা। এ সময় তারা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, আকিকুল হক শামীম, ছয়েফ খান, হেলাল মিয়া, শাকের উদ্দিন সাদেক, মোহাম্মদ মুর্শেদ আহমদ, সৈয়দ রায়হান হোসেন, সিরাজ আহমদসহ অনেকে।
তবে এই সকল বিষয় নিয়ে মিশিগান বাংলাদেশি কমিউনিটিতে সমালোচনার ঝড় বয়ছে এবং সাধারণ নাগরিকদের মতে দুই একজন মানুষের জন্য পুরা মিশিগান বাংলাদেশির কয়েক হাজার মানুষ কনসুলেট সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।