জালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে আকাশচুম্বি হয়ে ওঠে ডিমের দাম। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে প্রতি ডজন ডিম ১৬০ টাকায় কিনতে হয় ক্রেতাদের। ডিমে সিন্ডিকেটের তৎপরতা বন্ধ করতে আমদানির ঘোষণা ও ভোক্তা অধিদফতরের পদক্ষেপে কমতে শুরু করে ডিমের দাম। গত সপ্তাহে ৩০ টাকা কমে ১৩০ টাকায় প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হতে দেখা যায়। এর এক সপ্তাহ পর গতকাল শুক্রবার আরো ১৫ টাকা কমে ১১৫ টাকায় বিক্রি করছে দোকানিরা। তবে বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে সব ধরনের সবজি। ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজিই মিলছে না। ফলে এখন শাকসবজি খেয়ে দিনপার করছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে লাল ডিমের দাম কমে ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকা। গত সপ্তাহে যে ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকায়। বাজারে হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। দেশী মুরগির ডিমের ডজন ২১০ টাকা। একইভাবে ব্রয়লার মুরগি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার অজুহাতে খামারিরা ও পাইকাররা ডিমের দাম বাড়িয়ে দিয়েছিল। আমরা যে দামে ক্রয় করি তার থেকে ৫-১০ টাকা লাভে বিক্রি করি। পাইকারি বাজারে দাম বাড়লে আমাদের করার কিছুই থাকে না। পাইকারি বাজারে দাম কমায় আমরাও কম দামে দিতে পারছি।
বাজারে বেশির ভাগ সবজি গত সপ্তাহের দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে শিমের কেজি ১৬০ টাকা, শসা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। লম্বা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা। করলা ৮০ টাকা, চাল কুমড়া পিস ৫০ টাকা, প্রতি পিস লাউ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৫০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, পটোল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, কচুরলতি ৭০ টাকা, পেঁপের কেজি ৩০ টাকা, বটবটির কেজি ৮০ টাকা, ধুন্দুলের কেজি ৫০ টাকা। এইসব বাজারে কাঁচামরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়। এ ছাড়া কাঁচা কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। শুকনো মরিচের কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা।
বিক্রেতারা বলছেন, গত সপ্তাহের দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। শুধু শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। গত সপ্তাহে এটি বিক্রি হয় ২৪০ টাকায়। সাপ্লাই বাড়ায় দাম কমেছে। বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজিতে। দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজি। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি। এসব বাজারে রসুনের কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। চায়না রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। আদার কেজি ৯০ থেকে ১১০ টাকা।
বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। এ ছাড়া প্যাকেট চিনি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায়। এ ছাড়াও এসব বাজারে দেশী মসুরের ডালের কেজি ১৩০ টাকা। ভারতীয় মসুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। এ ছাড়া ভোজ্যতেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকায়। তেলাপিয়া, পাঙ্গাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৬০ টাকা। কৈ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। পাবদা মাছের কেজি ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামে পরিবর্তন আসেনি। তবে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে চিংড়ি ও ইলিশ। চিংড়ির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। আর এক কেজি ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা। আর ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা।
বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৬৬০ থেকে ৬৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খাসির গোশতের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়। গত সপ্তাহের মতো বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল। সব ধরনের মোটা ও চিকন চাল আগের দামে বিক্রি হচ্ছে।