ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ বঙ্গোপসাগর এবং আন্দামান সাগরের সংযোগস্থলে অবস্থিত। বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে দ্বীপপুঞ্জটি এক হাজার ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। দ্বীপপুঞ্জটি ইন্দোনেশিয়ার আচেহের ১৫০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। আন্দামান সাগর দ্বীপপুঞ্জটিকে থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। আন্দামান সাগর উভয় দ্বীপপুঞ্জেরই পূর্বদিকে ও বঙ্গোপসাগর দ্বীপপুঞ্জদ্বয়ের পশ্চিম দিকে অবস্থিত। মিয়ানমার থেকে দ্বীপপুঞ্জটির সর্বনিম্ন দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার। ভারতের চেন্নাই থেকে দ্বীপপুঞ্জটি এক হাজার ১৯০ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। এ দ্বীপপুঞ্জটি ৫৭২টি দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত এবং এর মধ্যে মাত্র ৩৮টিতে জনবসতি রয়েছে, অপর ৩৮টি দ্বীপে মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ। বর্তমানে এটি ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। এ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ার। এখানে কোনো বিধানসভা নেই। ভারতের লোকসভায় এ দ্বীপপুঞ্জটির একটি আসন রয়েছে। কেন্দ্রশাসিত এ অঞ্চলটি কলকাতা হাইকোর্টের অধিক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত। দ্বীপপুঞ্জটির উত্তরে কোকো দ্বীপপুঞ্জসহ অল্পসংখ্যক দ্বীপ মিয়ানমারের অন্তর্ভুক্ত। ভারতভুক্ত আসামের নাগা ও লুসাই পর্বতমালা এবং মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনের ইয়োমা পর্বতমালার সম্প্রসারিত অংশ থেকে দ্বীপপুঞ্জের উৎপত্তি।
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ১৫০ কিলোমিটার প্রশস্ত তিন ডিগ্রি চ্যানেল দিয়ে একটি অপরটি থেকে পৃথকীকৃত। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের স্থলভাগের আয়তন প্রায় আট হাজার ২৪৯ বর্গকিলোমিটার। এতে তিনটি জেলা রয়েছে যথা- নিকোবর (সদর কার নিকোবর), দক্ষিণ আন্দামান (সদর পোর্ট ব্লেয়ার) এবং উত্তর ও মধ্য আন্দামান জেলা (সদর মায়া বন্দর)। এর জনসংখ্যা প্রায় চার লাখ। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৪৬ জন। পুরুষ অনুপাতে মহিলার সংখ্যা কম। সরকারি ভাষা হিন্দি ও ইংরেজি হলেও স্থানীয়রা বাংলা, তেলেগু, তামিল, নিকোবরী, মালয়ালম, কুরুখ, মুণ্ডা, খারিয়া প্রভৃতি ভাষায় ভাববিনিময় করে। বাংলা ভাষাই হলো অধিবাসীদের সর্বাধিক ব্যবহৃত কথ্যভাষা। এর প্রায় এক-তৃতীয়াংশ (২৮.৪৯ শতাংশ) অধিবাসী বাংলা ভাষায় কথা বলে। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা আন্দোলন চলাকালীন বাংলা থেকে যে বিপুলসংখ্যক বিপ্লবীকে এ দ্বীপে নির্বাসনে পাঠানো হয় তথা সেল্যুলার জেলে কারাবন্দী করা হয় তাদের অনেকেই স্থায়ীভাবে এখানে রয়ে যান। সে কারণেই এ দ্বীপপুঞ্জে বাঙালির সংখ্যা বেশি। তা ছাড়া ১৯৪৭ সালে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই ভিটেমাটি হারিয়ে এ দ্বীপে দেশান্তরী হন। এদের অনেকের আদিনিবাস বাংলাদেশের বৃহত্তর বরিশাল, খুলনা ও যশোর জেলায়। বাংলাদেশের বাঙালি ও ভারতভুক্ত পশ্চিম বাংলার বাঙালিদের কাছে আন্দামান কালাপানি নামে পরিচিত। ব্রিটিশ শাসনামলে সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের এ দ্বীপে পাঠানো হতো। দ্বীপে পাঠানো বন্দীদের সেখানকার দুর্ভেদ্য জেল থেকে পালানো অসম্ভব ছিল। ১৮৭৮ সালে ভারতের বড়লাট লর্ড মেয়ো আন্দামান পরিদর্শনে গেলে শের আলী নামে জনৈক বন্দী অকস্মাৎ তাকে আক্রমণ করে হত্যা করে। পরে শের আলীকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে তার মৃত্যু কার্যকর করা হয়।
এর অন্তর্গত হ্যাভলক দ্বীপ বাঙালি অধ্যুষিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, এ দ্বীপে বসবাসরত বর্তমান দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্ম মা-বাবার মাতৃভ‚মি বাংলাদেশ দেখতে আসতে চায় কিন্তু তাদের আক্ষেপ বাংলাদেশের সাথে আন্দামানের সরাসরি নৌ ও বিমান যোগাযোগ না থাকায় তাদের পক্ষে ভারত বা মিয়ানমার হয়ে বাংলাদেশের ভিসা গ্রহণপূর্বক মা-বাবার জন্মভূমিতে আসা অনেক দুরূহ। দ্বীপটিতে বসবাসরত স্থানীয় বাংলাভাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একদা ব্রিটিশ শাসকরা তাদের ভাষায় দ্বীপপুঞ্জটিতে অপরাধীদের আবাসস্থল গড়ে তুললেও বর্তমানে সেখানে চোর, ডাকাত ও কোনো ধরনের চাঁদাবাজের উপদ্রব নেই। এমনকি ঘরের দরজা খোলা রেখে এদিক-ওদিক গেলেও পরক্ষণে ঘরে এসে সব কিছু ঠিকঠাক পাওয়া যায়।
ভারতের কলকাতার সাথে দ্বীপটির বিমান যোগাযোগ রয়েছে। কলকাতা থেকে দ্বীপপুঞ্জের একমাত্র বিমানবন্দর বীর সাভারকর যেতে দুই ঘণ্টা লাগে। কলকাতা, বিশাখাপত্তম ও চেন্নাই থেকে সমুদ্রগামী জাহাজে সেখানে যেতে তিন-চার দিন লাগে। দ্বীপপুঞ্জটি নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হলেও যাতায়াত ও আবাসস্থলের ব্যয়ভার সাশ্রয়ী না হওয়ায় দেশী ও বিদেশী পর্যটকের সমাগম আশানুরূপ নয়।
আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের প্রধান ফসল ধান। অপর দিকে, নিকোবরে দ্বীপপুঞ্জে প্রচুর নারিকেল, সুপারি ও পামগাছ রয়েছে। কৃষকরা দ্বীপপুঞ্জের কৃষিভূমিতে বিভিন্ন ধরনের ডাল, তেলবীজ, শাকসবজি, মরিচ, লবঙ্গ, জায়ফল, দারুচিনি প্রভৃতি চাষ করে। দ্বীপপুঞ্জে বছরে দু’বার বর্ষাকালের আবির্ভাব ঘটে। আন্দামানের বিলাসবহুল বর্ষাবৃত্ত অরণ্যকে সোনার খনি বলা হয়। এখান থেকে বিভিন্ন ধরনের কাঠ সংগ্রহ করা হয় যা গৃহনির্মাণ ও আসবাবপত্র তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়। দ্বীপপুঞ্জের উপজাতিরা জীবিকা নির্বাহের জন্য মধু সংগ্রহ ও মাছ ধরাকে অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করে।
আন্দামান দ্বীপে যেসব উপজাতির বসবাস এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- জারোয়া, সেন্টিনেলি, ওঙ্গি প্রভৃতি। ওঙ্গিরা আদিম পদ্ধতিতে খাদ্য সংগ্রহ করে। নিকোবরে বসবাসরত শম্পেন উপজাতির বাইরের দুনিয়ার সাথে কোনো যোগাযোগ নেই। নিকোবরের মূল জনগোষ্ঠীর অন্যতম হলো নিকোবারি বর্মি। এরা মালয়, সোম ও সান সম্প্রদায়ের মিশ্রণ। এদের মধ্যে বিনিময় প্রথা বিদ্যমান। দ্বীপপুঞ্জে বসবাসরত কিছু উপজাতি এখনো হিংস্রতা পরিহার করতে পারেনি। এরা এখনো সভ্যতার নাগাল ও ছোঁয়ার বাইরে। বিখ্যাত পর্যটক মার্কোপলো এ কারণেই দ্বীপপুঞ্জটিকে ‘দ্য ল্যান্ড অব হেড হান্টার্স’ নামে অভিহিত করেছিলেন। আন্দামানের প্রধান দ্বীপগুলো হলো ল্যান্ডফল দ্বীপপুঞ্জ, মধ্য আন্দামান, পোর্ট ব্লেয়ার ও দক্ষিণ আন্দামান। অপর দিকে, নিকোবরের প্রধান দ্বীপগুলো হলো বৃহত্তর নিকোবর, চোয়ারে, তোরসা, নানকওরি, কচল ও ক্ষুদ্র নিকোবর। আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে শিক্ষার হার ৭৮ শতাংশ। স্কুল-কলেজ অবধি পড়ালেখার সুযোগ থাকলেও উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ বা চিকিৎসা ও প্রকৌশল বিষয়ে অধ্যয়নের ক্ষেত্রে কোনো সুযোগ গড়ে উঠেনি।
দ্বীপপুঞ্জটিতে প্রথম দিকে আদিবাসী ধর্মের প্রাধান্য থাকলেও পরবর্তীতে হিন্দু, মুসলিম ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। বর্তমানে ধর্মীয় গোষ্ঠী হিসেবে হিন্দুদের অবস্থান শীর্ষে। এরপর রয়েছে যথাক্রমে- খ্রিষ্টান, মুসলিম ও আদিবাসী ধর্ম। ভারতের মূল ভূখণ্ডের কেন্দ্রে উগ্র হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির ক্ষমতা লাভের পর থেকে মূল ভূখণ্ডের বিভিন্ন রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে উগ্র হিন্দুত্ববাদের বিষবাষ্প ছড়ানোর যে প্রয়াস চলতে থাকে তার অভিঘাত থেকে অনাবিল শান্তি ও সম্প্রীতির আবাসস্থল দ্বীপপুঞ্জটিও শঙ্কামুক্ত নয়।
আন্দামানের ব্যারেন দ্বীপে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে। ভারতের একমাত্র কাদার আগ্নেয়গিরি আন্দামানের বারাতাং দ্বীপে অবস্থিত। প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর আবাসভূমি ছিল। আন্দামান ও নিকোবর দু’টি নামই আসে মালয়ালম ভাষা থেকে। ১৭৭৭ সালে এ অঞ্চলে ব্রিটিশদের পরিচালিত নৃতাত্ত্বিক সমীক্ষা থেকে জানা যায়, বহিরাগতদের আগমনের আগে কয়েক শতাব্দী কাল এ দু’টি দ্বীপপুঞ্জ নেগ্রিটো ও মঙ্গলয়েড জাতিগোষ্ঠীর অধিকারে ছিল। এখানে প্রথমে মানুষ আসে আফ্রিকা থেকে। এশীয় উপকূল থেকে অস্ট্রেলিয়ার দিকে পাড়ি দেয়ার সময় অনেকে এখানে থেকে গিয়েছিল। নবম শতাব্দীর আরব অভিযাত্রীদের কাছে আন্দামান সম্বন্ধে জানা যায়, তারা সুমাত্রা যাওয়ার সময় এ দ্বীপ হয়ে পাড়ি দিয়েছিল।
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ইতিহাসকে চারটি পর্যায়ে ভাগ করা হয় যথা- ব্রিটিশ অধিকার প্রতিষ্ঠা, ব্রিটিশ রাজত্ব, জাপানি রাজত্ব ও স্বাধীনতা-উত্তর যুগের ইতিহাস। ১৭৮৮ সালে দুই নৌ-আধিকারিকের সুপারিশক্রমে ১৭৮৯ সালে তদানীন্তন গভর্নর জেনারেল লর্ড কর্নওয়ালিশ পোর্ট কর্নওয়ালিশের কাছে চাটহাম দ্বীপে একটি ব্রিটিশ উপনিবেশ স্থাপন করেন। ওই বছরই নৌ- ল্যাফটেন্যান্ট রেজিনল্ড ব্লেয়ার এ অঞ্চলটিতে একটি সমীক্ষার কাজ চালান এবং তার নামানুসারে পোর্ট কর্নওয়ালিশের নাম করা হয় পোর্ট ব্লেয়ার। সপ্তদশ শতাব্দীর শেষের দিকে এটি মারাঠিদের দখলে ছিল।
ভারত উপমহাদেশে ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের পর ব্রিটিশ সরকার আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে একটি বন্দিনিবাস স্থাপনের পরিকল্পনা করে। ১৮৫৮ সালে ভাইপার দ্বীপে জনবসতি গড়ে তোলাসহ কারাগার ও ফাঁসিকাষ্ঠ স্থাপন করা হয়। কারাগারটিতে ভারতের মূল ভ‚খণ্ড থেকে ২০০ জন বন্দীকে এনে রাখা হয়। বন্দীদের বেশির ভাগই ছিল ব্রিটিশ ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিদ্রোহী সৈনিক। বার্মা থেকে লাল রঙের ইট এনে ১৮৯৬ সালে পোর্ট বেøয়ারে সেল্যুলার জেলের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ১৯০৬ সালে জেলটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে ভাইপার দ্বীপের কারগারটি পরিত্যক্ত হয়। সেল্যুলার জেলটিতে সাতটি শাখায় ৬৯৬টি সেল বা প্রকোষ্ঠ ছিল। সেল শব্দ থেকেই সেল্যুলার জেল নামকরণ। একটি সেলে একজন বন্দীকে রাখা হতো এবং একটি সেলের বন্দীর সাথে অপর সেলের বন্দীর দেখা হওয়া বা কথা বলার সুযোগ ছিল না। তিন তলাবিশিষ্ট সেল্যুলার জেলটিকে বর্তমানে জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়েছে।
১৮৭৯ সালে ১৭ মে আন্দামানের উপজাতিদের সাথে ব্রিটিশদের যে যুদ্ধ সংগটিত হয়েছিল সেটি অ্যাভারডিনের যুদ্ধ হিসেবে খ্যাত। সে যুদ্ধে প্রথম দিকে উপজাতিরা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্রিটিশ ও কারাবন্দী কয়েদিকে হত্যা করতে সক্ষম হলেও পরবর্তীতে ব্রিটিশদের উন্নত অস্ত্রের কাছে তাদের দেশীয় তীর-ধনুকের আক্রমণ ও প্রতিরোধ পরাভূত হয়। অ্যাভারডিনের যুদ্ধকালীন উপজাতিরা দ্বীপপুঞ্জটির স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল। সে স্বাধীনতার ব্যাপ্তি সাময়িক হলেও সেটিই ছিল প্রবল পরাক্রমশালী ইংরেজ শাসিত ব্রিটিশ ভারতে স্থানীয়দের প্রথম স্বাধীনতার আস্বাদন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন জাপানিদের পশ্চিম অভিমুখী অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকাকালীন ১৯৪২ সালে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ জাপানিদের দখলে চলে যায়। পরবর্তী বছর জাপানিরা এ দ্বীপপুঞ্জটি নেতাজী সুবাস চন্দ্র বসুর নেতৃত্বাধীন আজাদহিন্দ সরকারের হাতে তুলে দেয়। ১৯৪৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর নেতাজী সুবাস চন্দ্র পোর্ট ব্লেয়ারে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। ১৯৪৫ সালে মিত্র বাহিনীর কাছে জার্মান ও জাপানিদের পরাজয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটলে দ্বীপপুঞ্জটিতে পুনরায় ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্রিটিশ কর্তৃক ১৯৪৭ সালে ১৫ আগস্ট ভারতকে স্বাধীনতা দিলে আন্দামান ও নিকোবর ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়, যদিও দ্বীপপুঞ্জটির নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে এবং অধিবাসীদের একটি বড় অংশ বাংলাদেশের আদি অধিবাসীদের বংশোদ্ভুত হওয়ায় মিয়ানমারের মতো দ্বীপপুঞ্জটির কয়েকটি দ্বীপ বিশেষত যেগুলো বাংলা ভাষাভাষী জনঅধ্যুষিত সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধান বাস্তবতার নিরিখে বাংলাদেশের ওপর ন্যস্ত হলে তথাকার বাংলাভাষীরা তাদের পূর্বপুরুষের মাতৃভ‚মির সাথে নৈকট্যের আস্বাদ লাভে সক্ষম হবেন।
লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষক